ঝিনাইদহে ৬৭টি বিসিআইসি সার ডিলারশিপের ৫০টি আ.লীগের কবজায়
দুর্নীতি, কালোবাজারি ও অপব্যবহারের অভিযোগ
- আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪
- / ৪৬ বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহে বেশিরভাগ বিসিআইসি সারের ডিলারশিপ আওয়ামী লীগ নেতাদের দখলে থাকায় সার নিয়ে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা রয়েছে। এসব ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সার না দেওয়া এবং অতিরিক্ত মূল্যে কালোবাজারে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে অনেক ডিলারের বিরুদ্ধে এক ইউনিয়নের সার অন্য ইউনিয়নে বিক্রি করার গুরুতর অভিযোগও উঠেছে।
তথ্য অনুসারে, ঝিনাইদহে ৬ উপজেলায় মোট ৬৭টি বিসিআইসি সার ডিলার রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি ডিলারশিপ আওয়ামী লীগের সাবেক দুই এমপিসহ দলীয় নেতাদের নামে। এই সংখ্যা থেকে ৮-১০ জন ডিলার মামলার কারণে পলাতক রয়েছেন। কোটচাঁদপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহানের সার গোডাউন লুট হয়ে গেছে, তবে তিনি কীভাবে লুটকৃত সার সমন্বয় করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি এখন পর্যন্ত পলাতক।
সদরের সাধুহাটি ইউনিয়নের সার ডিলার বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। তার পিতা আওয়ামী লীগ নেতা মশিয়ার জোয়ারদার মামলার আসামি হয়ে পলাতক। যুবলীগ নেতা শিমুল শৈলকুপার বগুড়া ইউনিয়নের ডিলারশিপ নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনিও মামলার আসামি হয়ে পলাতক। এছাড়া শৈলকুপার নায়েব আলী জোয়ারদার কারাগারে, সদরের নলডাঙ্গা ইউনিয়নের সার ডিলার মোদাচ্ছের, নলডাঙ্গার কাজী আলম ও তাহেরহুদা ইউনিয়নের ডিলার আফজাল হোসেন দীর্ঘদিন পলাতক রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে সার কেনাবেচা হলেও সার নিয়ে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অনেক ডিলার রাতের আঁধারে জেলার বাইরেও সার বিক্রি করছেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। যদিও নিয়ম রয়েছে, নিজ ইউনিয়ন ব্যতীত কোথাও সার বিক্রি করা যাবে না।
ডিলার সমিতির একটি সূত্র জানায়, ১৯৯১-৯৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ঝিনাইদহে মাত্র ১৩টি বিসিআইসি সার ডিলার ছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০০ সাল পর্যন্ত ৫৪টি ডিলার নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে আবার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগের এমপিরা কালীগঞ্জে ২টি ও শৈলকুপা উপজেলায় ৩টি ডিলার নিয়োগ দেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ১৮ জন ডিলারের মধ্যে ১২টি, কালীগঞ্জে ১৪টি ডিলারের মধ্যে ১৩টি, কোটচাঁদপুরে ৬টির মধ্যে ৪টি, মহেশপুরে ১৩টির মধ্যে ৮টি, শৈলকুপায় ১৫টির মধ্যে ১০টি এবং হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় ১০টির মধ্যে ৬টি আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে বিসিআইসি সার ডিলারশিপ রয়েছে। বিসিআইসি সার ডিলার নিয়োগ নীতিমালা-২০০৯ উপেক্ষা করে এসব নেতাদের নামে ডিলারশিপ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এদিকে, কৃষি অধিদপ্তরের নীতিমালার প্রতি কোনো সাশ্রয়ী মনোভাব না রাখার কারণে, সার বিতরণে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, সার নিয়ে যাতে কেউ ষড়যন্ত্র না করতে পারে, সে জন্য মাঠ পর্যায়ে কঠোর নজরদারি চলছে। সার উত্তোলন, বিতরণ এবং মজুদ স্বাভাবিক রয়েছে।