ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

জীবননগরে খেজুর রস সংগ্রহে ভাড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

শীত মৌসুম শুরুর আগেই বেড়েছে ভাড়ের চাহিদা

মিঠুন মাহমুদ, জীবননগর:
  • আপলোড টাইম : ১০:১৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ও দেহাটি গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা শীতের শুরুতে খেজুর রস ও গুড় সংগ্রহের ভাড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় সংরক্ষণে ব্যবহৃত এই মাটির ভাড় তৈরিই তাদের প্রধান কাজ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনপ্রিয় খেজুর রসের গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়, এবং এর জন্য মাটির ভাড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

শীতের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই শিল্পীরা তাদের নিজস্ব নকশা ও আকারে ভাড় তৈরি করেন। কেউ এগুলোর নামকরণ করেন ‘গলা লম্বা ভাড়’, আবার কেউ দেন ‘খাটো ভাড়’। এছাড়া, সাইজের দিক থেকে একে কলস ভাড়ও বলা হয়। তবে ‘কলস’ সাধারণত পানি সংরক্ষণ ও বহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ‘ভাড়’ বিশেষত খেজুরের রস ও গুড় সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

উপজেলার গাছিরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় রাখার পাত্র হিসেবে এই মাটির ভাড় ব্যবহার করেন। মনোহরপুর পালপাড়ার মৃৎশিল্পী সিদাম পাল অন্যান্য মাটির পাত্রের পাশাপাশি সরা, মালশা, পাতিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাটির জিনিসপত্রও তৈরি করেন। খেজুর রস সংগ্রহের মৌসুমে তারা ব্যস্ত সময় পার করেন এবং এই সময় তারা বিভিন্ন সাইজের ভাড় তৈরিতে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। এগুলো বাজারে বিক্রি করে তারা ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অপর দিকে দেহাটি গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পী হরিশ পাল জানান, বর্তমানে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মাটির কাজ করে সংসার চালাতে তাদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে বলেন, ‘যদি সরকার আমাদের এই কাজের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে, তবে আমরা আমাদের বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারব।’

তথ্যসূত্রে জানা যায়, একজন মৃৎশিল্পী প্রতিদিন ৬০-৭০টি ভাড় তৈরি করতে সক্ষম। প্রতি ভাড় বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে একটি ভাড় তৈরি করতে এবং পুড়িয়ে প্রস্তুত করতে সব মিলিয়ে সময় লাগে অন্তত ১২-১৫ দিন।
জীবননগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জাকির উদ্দিন মোড়ল বলেন, ‘সকল মৃৎশিল্পীকে বিভিন্ন সময়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হয়ে থাকে। আগামী দিনগুলোতে আমরা তাদের আরো সহযোগিতা প্রদান করতে পারব।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জীবননগরে খেজুর রস সংগ্রহে ভাড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

শীত মৌসুম শুরুর আগেই বেড়েছে ভাড়ের চাহিদা

আপলোড টাইম : ১০:১৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ও দেহাটি গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা শীতের শুরুতে খেজুর রস ও গুড় সংগ্রহের ভাড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় সংরক্ষণে ব্যবহৃত এই মাটির ভাড় তৈরিই তাদের প্রধান কাজ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জনপ্রিয় খেজুর রসের গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়, এবং এর জন্য মাটির ভাড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

শীতের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এই শিল্পীরা তাদের নিজস্ব নকশা ও আকারে ভাড় তৈরি করেন। কেউ এগুলোর নামকরণ করেন ‘গলা লম্বা ভাড়’, আবার কেউ দেন ‘খাটো ভাড়’। এছাড়া, সাইজের দিক থেকে একে কলস ভাড়ও বলা হয়। তবে ‘কলস’ সাধারণত পানি সংরক্ষণ ও বহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। ‘ভাড়’ বিশেষত খেজুরের রস ও গুড় সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

উপজেলার গাছিরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় রাখার পাত্র হিসেবে এই মাটির ভাড় ব্যবহার করেন। মনোহরপুর পালপাড়ার মৃৎশিল্পী সিদাম পাল অন্যান্য মাটির পাত্রের পাশাপাশি সরা, মালশা, পাতিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাটির জিনিসপত্রও তৈরি করেন। খেজুর রস সংগ্রহের মৌসুমে তারা ব্যস্ত সময় পার করেন এবং এই সময় তারা বিভিন্ন সাইজের ভাড় তৈরিতে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। এগুলো বাজারে বিক্রি করে তারা ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অপর দিকে দেহাটি গ্রামের পালপাড়ার মৃৎশিল্পী হরিশ পাল জানান, বর্তমানে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মাটির কাজ করে সংসার চালাতে তাদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়ে বলেন, ‘যদি সরকার আমাদের এই কাজের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে, তবে আমরা আমাদের বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারব।’

তথ্যসূত্রে জানা যায়, একজন মৃৎশিল্পী প্রতিদিন ৬০-৭০টি ভাড় তৈরি করতে সক্ষম। প্রতি ভাড় বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে একটি ভাড় তৈরি করতে এবং পুড়িয়ে প্রস্তুত করতে সব মিলিয়ে সময় লাগে অন্তত ১২-১৫ দিন।
জীবননগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জাকির উদ্দিন মোড়ল বলেন, ‘সকল মৃৎশিল্পীকে বিভিন্ন সময়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকারি সহযোগিতা প্রদান করা হয়ে থাকে। আগামী দিনগুলোতে আমরা তাদের আরো সহযোগিতা প্রদান করতে পারব।’