ইপেপার । আজ শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

এমপিওভুক্তির নামে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করলেন অধ্যক্ষ

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে ৬ শিক্ষকের অভিযোগ

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১০:০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহীদ নূর আলী কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরুর বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির কথা বলে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। কলেজের ডিগ্রি শাখার ৬ জন শিক্ষক এই বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন, শিক্ষা উপদেষ্টা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, শহীদ নূর আলী কলেজের ডিগ্রি শাখার এমপিওভুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। অথচ ডিগ্রি শাখার এমপিওভুক্তি হয়নি, টাকা ফেরতও দেওয়া হয়নি। শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে বড় অংকের টাকা দান করে কলেজের ডিগ্রি শাখায় নিয়োগ পান তারা। ২০১৯ সালে স্নাতক শাখার এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যক্ষ তাদের ২০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলেন। শিক্ষকেরা অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মধ্যে রবিউল ইসলাম জানান, তারা কেউ জমি বন্ধক রেখে, কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে অধ্যক্ষের নির্দেশে নূর আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ সাজ্জাদ ও প্রভাষক প্রবীর কুমার বিশ্বাসের হাতে ১০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাদের পদ এমপিওভুক্তি হয়নি এবং টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি।
শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের মদদপুষ্ট ও আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে কাজ করেছেন। তারা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু প্রভাবশালী শিক্ষক সুব্রত নন্দী ও কমিটির সদস্য গোলাম রসুলের সঙ্গে মিলিয়ে কলেজে নিয়োগ দিয়ে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন।’
এদিকে, অধ্যক্ষের ভাই তৌহিদ সাত্তার রাজু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক পদে মহিলা কোটায় চাকরি পেয়েছেন। শিক্ষকদের প্রশ্ন, ‘পুরুষ হয়ে তৌহিদ সাত্তার রাজু কীভাবে মহিলা কোটায় চাকরি পেলেন?’ তবে, অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এমপিওভুক্তির জন্য আমি কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। সাবেক এমপির মাধ্যমে অভিযোগকারী রবিউল ইসলাম তার একাউন্ট থেকে কালীগঞ্জ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ওই টাকা জমা করেছেন। ২০১৭ সালে নূর আলী কলেজ ডিগ্রি শাখার অনুমোদন লাভ করেছে এবং এমপিওভুক্তির জন্য কিছু নিয়ম-কানুন আছে। কলেজে একটিমাত্র ব্যাচ বের হওয়ার কারণে এমপিওভুক্তি এখনো হয়নি। তারা যে অভিযোগ করেছে তা সঠিক নয়, আমি তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ করিনি।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিদর্শক কাউসার আহম্মেদ জানান, ‘দুদকের নিয়মিত মিটিংয়ে দাখিলকৃত অভিযোগগুলো ওপেন করা হয়। আগামী মিটিংয়ে অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

এমপিওভুক্তির নামে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করলেন অধ্যক্ষ

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে ৬ শিক্ষকের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১০:০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহীদ নূর আলী কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরুর বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তির কথা বলে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। কলেজের ডিগ্রি শাখার ৬ জন শিক্ষক এই বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন, শিক্ষা উপদেষ্টা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, শহীদ নূর আলী কলেজের ডিগ্রি শাখার এমপিওভুক্তির প্রলোভন দেখিয়ে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। অথচ ডিগ্রি শাখার এমপিওভুক্তি হয়নি, টাকা ফেরতও দেওয়া হয়নি। শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে বড় অংকের টাকা দান করে কলেজের ডিগ্রি শাখায় নিয়োগ পান তারা। ২০১৯ সালে স্নাতক শাখার এমপিওভুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধ্যক্ষ তাদের ২০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বলেন। শিক্ষকেরা অধ্যক্ষের চাহিদা অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মধ্যে রবিউল ইসলাম জানান, তারা কেউ জমি বন্ধক রেখে, কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে অধ্যক্ষের নির্দেশে নূর আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ সাজ্জাদ ও প্রভাষক প্রবীর কুমার বিশ্বাসের হাতে ১০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাদের পদ এমপিওভুক্তি হয়নি এবং টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি।
শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের মদদপুষ্ট ও আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে কাজ করেছেন। তারা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু প্রভাবশালী শিক্ষক সুব্রত নন্দী ও কমিটির সদস্য গোলাম রসুলের সঙ্গে মিলিয়ে কলেজে নিয়োগ দিয়ে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন।’
এদিকে, অধ্যক্ষের ভাই তৌহিদ সাত্তার রাজু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক পদে মহিলা কোটায় চাকরি পেয়েছেন। শিক্ষকদের প্রশ্ন, ‘পুরুষ হয়ে তৌহিদ সাত্তার রাজু কীভাবে মহিলা কোটায় চাকরি পেলেন?’ তবে, অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এমপিওভুক্তির জন্য আমি কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। সাবেক এমপির মাধ্যমে অভিযোগকারী রবিউল ইসলাম তার একাউন্ট থেকে কালীগঞ্জ ইসলামী ব্যাংক শাখায় ওই টাকা জমা করেছেন। ২০১৭ সালে নূর আলী কলেজ ডিগ্রি শাখার অনুমোদন লাভ করেছে এবং এমপিওভুক্তির জন্য কিছু নিয়ম-কানুন আছে। কলেজে একটিমাত্র ব্যাচ বের হওয়ার কারণে এমপিওভুক্তি এখনো হয়নি। তারা যে অভিযোগ করেছে তা সঠিক নয়, আমি তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ করিনি।’
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিদর্শক কাউসার আহম্মেদ জানান, ‘দুদকের নিয়মিত মিটিংয়ে দাখিলকৃত অভিযোগগুলো ওপেন করা হয়। আগামী মিটিংয়ে অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’