ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ছমির উদ্দিনের ইন্তেকাল

জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল, বিভিন্ন মহলে শোক

প্রতিবেদক, মেহেরপুর সদর:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৪৭ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীন বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তিনি চার ছেলে, চার মেয়ে, স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজন এবং রাজনৈতিক সহকর্মী বন্ধু-বান্ধবসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ছমির উদ্দীনের ছেলে ডাক্তার তারিক মোহাম্মদ তাওয়াবুল ইসলাম জানান, গত ২৫ অক্টোবর তার বাবা আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন। গত ২৮ অক্টোবর দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। আজ (মঙ্গলবার) সকালে তার মায়ের কবর জিয়ারত শেষে বাড়িতে এসে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ছমির উদ্দীন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরি শেষে তিনি দীর্ঘদিন কুয়েত ছিলেন। পরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে মেহেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন। পরে তিনি দীর্ঘদিন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় জামায়াতের শূরা সদস্য ছিলেন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তার বড় ছেলে মেহেরপুর জেলা জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি ও জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় ইসলামি ব্যাংকের কাছ থেকে পুলিশ আটক করে। ওই দিন রাতে বন্দর গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় কথিত ক্রসফায়ারের নামে তাকে হত্যা করে। তারপরই ছমির উদ্দীন আমেরিকা প্রবাসী মেঝো ছেলের কাছে চলে যান। তারপর তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আওয়ামী লীগ সরকার। এছাড়া শহরের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ছমির উদ্দীনের মায়ের মৃত্যুর সময় দেশে এলে মায়ের জানাজা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বেশ কিছুদিন হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও আমেরিকায় চলে যান তিনি।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা শেষে মেহেরপুর পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তারা জানাজায় হাজার হাজার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এর আগে বিকেলে মরহুম ছমির উদ্দীনের নিজ গ্রাম টুঙ্গী গোপালপুরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার পূর্বে বক্তব্য দেন মেহেরপুরে-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন, মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, মেহেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. নজরুল কবির, কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা আজিজুর রহমান, মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা তাজ উদ্দিন খান, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন, মেহেরপুর জেলা হাজী সমিতির সভাপতি আক্কাস আলী, মেহেরপুর জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল কাদের, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেম, ঝিনাইদহ জেলা আমির আলী আজগর মো. বক্কর, মরহুমের পুত্র তৌফিকুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি আলমগীর খান ছাতু, জামায়াত নেতা রুহুল আমিন, মেহেরপুর জেলা সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ছমির উদ্দিনের ইন্তেকাল

জানাজায় হাজারো মানুষের ঢল, বিভিন্ন মহলে শোক

আপলোড টাইম : ০৯:২০:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীন বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তিনি চার ছেলে, চার মেয়ে, স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজন এবং রাজনৈতিক সহকর্মী বন্ধু-বান্ধবসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ছমির উদ্দীনের ছেলে ডাক্তার তারিক মোহাম্মদ তাওয়াবুল ইসলাম জানান, গত ২৫ অক্টোবর তার বাবা আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন। গত ২৮ অক্টোবর দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। আজ (মঙ্গলবার) সকালে তার মায়ের কবর জিয়ারত শেষে বাড়িতে এসে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ছমির উদ্দীন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকরি করতেন। চাকরি শেষে তিনি দীর্ঘদিন কুয়েত ছিলেন। পরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি রাজনৈতিক জীবনে মেহেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমির নির্বাচিত হন। পরে তিনি দীর্ঘদিন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় জামায়াতের শূরা সদস্য ছিলেন। তিনি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

তার বড় ছেলে মেহেরপুর জেলা জামায়াতের তৎকালীন সেক্রেটারি ও জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় ইসলামি ব্যাংকের কাছ থেকে পুলিশ আটক করে। ওই দিন রাতে বন্দর গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় কথিত ক্রসফায়ারের নামে তাকে হত্যা করে। তারপরই ছমির উদ্দীন আমেরিকা প্রবাসী মেঝো ছেলের কাছে চলে যান। তারপর তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আওয়ামী লীগ সরকার। এছাড়া শহরের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ছমির উদ্দীনের মায়ের মৃত্যুর সময় দেশে এলে মায়ের জানাজা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বেশ কিছুদিন হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও আমেরিকায় চলে যান তিনি।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা শেষে মেহেরপুর পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তারা জানাজায় হাজার হাজার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এর আগে বিকেলে মরহুম ছমির উদ্দীনের নিজ গ্রাম টুঙ্গী গোপালপুরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার পূর্বে বক্তব্য দেন মেহেরপুরে-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন, মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, মেহেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. নজরুল কবির, কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা আজিজুর রহমান, মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা তাজ উদ্দিন খান, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন, মেহেরপুর জেলা হাজী সমিতির সভাপতি আক্কাস আলী, মেহেরপুর জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল কাদের, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেম, ঝিনাইদহ জেলা আমির আলী আজগর মো. বক্কর, মরহুমের পুত্র তৌফিকুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহসভাপতি আলমগীর খান ছাতু, জামায়াত নেতা রুহুল আমিন, মেহেরপুর জেলা সেক্রেটারি ইকবাল হোসেন প্রমুখ।