শোবার ঘরে মিলল ভ্যানচালকের লাশ!
- আপলোড টাইম : ১২:৪৫:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
- / ৬৩ বার পড়া হয়েছে
মেহেরপুর সদর উপজেলার গোপালপুরে আহম্মদ মালিথা (৬০) নামের এক ভ্যানচালকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গোপালপুর গ্রামের রামনগর কলোনিপাড়ার নিজ বাড়ির একটি কক্ষ থেকে গলায় রশি দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। নিহত আহম্মদ মালিথা গোপালপুর গ্রামের মৃত রনজন মালিথার ছেলে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে, এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। আহম্মদ মালিথাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মেয়ে সাগরা খাতুন।
অভিযোগ রয়েছে, একই এলাকার কদভানু খাতুন নামের এক নারীর সাথে সুদের টাকা লেনদেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করে রশি দিয়ে টাঙিয়ে রাখা হতে পারে। আহম্মদের মেয়ে সাগরা খাতুন বলেন, ‘কদভানু একজন সুদ ব্যবসায়ী। আমার আব্বা তার কাছে যে টাকা নিয়েছিল, তা পরিশোধ করে দিয়েছে। তারপরও কদভানু গত পরশুদিন থানায় ৪ লাখ টাকার মামলা দিয়েছে। এ বিষয়ে বাড়িতে পুলিশও এসেছিল। গত বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের থানায় বসার কথা। পুলিশ যাওয়ার পর আমার আব্বা বাড়ির কাজকর্ম ও খাওয়া-দাওয়া করলো। রাতেও আমার ছেলে বিদেশ থেকে ফোন করে আব্বা, মা ও আমাদের সবার সাথে কথাবার্তা বলে আমরা এক ঘরে আর আব্বা একা অন্য ঘরে ঘুমাতে যায়। পরে ভোরের দিকে মা দেখে আব্বা চৌকির ওপর বসে আছে। পরে আব্বার গলায় দড়ি দেখে মা চিৎকার শুরু করলে আমরা উঠে দেখি আব্বার গলায় ফাঁস দেওয়া এবং নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হয়ে জামা ভিজে গেছে।’
হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে কদভানু বলেন, ‘আমি কোনো সুদের ব্যবসা করি না। আমার পরিবারের উপার্জনের কোনো লোক না থাকায় জমির ওপর টাকা দিয়ে সংসার চালাই। প্রায় চার বছর আগে আহম্মদ আমার কাছ থেকে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছে। ২ লাখ টাকা নেওয়ার লিখিত স্ট্যাম্প আমার কাছে আছে। যেখানে আমাকে বছরে দুই বার ধান দেওয়ার কথা। আমাকে ব্যবহার করে সে প্রায় আটটা এনজিওতে লোন করেছে। যে লোনের কারণে আমি গরু, ছাগল এমনকি গলার হারও বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। আমার নগদ টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা তার লোনের কারণে আমি বাড়িতে থাকতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা আদায় করতে আমি চেয়ারম্যান-মেম্বার এমনকি সেনাবাহিনীর কাছেও অভিযোগ নিয়ে গিয়েছি, তারা আমাকে থানায় যেতে পরামর্শ দিয়েছেন। আমি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। বৃহস্পতিবার আমাদের বসার কথা। সে আজকে আত্মহত্যা করেছে। আহম্মদের বিভিন্ন জায়গায় ঋণের কারণে তার পরিবারে অশান্তি চলছিল। তার ছেলে বিদেশ থেকে ছুটিতে এসে প্রায় ১২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। এই টাকার কারণে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি একজন মেয়ে হয়ে কীভাবে অন্য একটি বাড়িতে ঢুকে একটা মানুষকে হত্যা করে টাঙিয়ে রাখতে পারি। আমারও দাবি, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। যদি আমি দোষী হই, আমি নিজেই ফাঁসির দড়ি গলায় পরব।’
এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ কনি মিয়া বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে এটি হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।