চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ, ডিসিসহ শীর্ষ তিন কর্মকর্তাকে সংবর্ধনা
নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতার সাথে ন্যায়বিচারে কাজ করার প্রত্যয়
- আপলোড টাইম : ১০:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
- / ৭০ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গায় সদ্য যোগদানকৃত জেলা ও দায়রা জজ মো. আকবর আলী শেখ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা আইনজীবী সমিতি। আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সংবর্ধিত অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১) মোহাম্মদ আল-আমিন মাতুব্বর, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) মোহা. আসাফ-উদ-দৌলা ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফর রহমান শিশির। এসময় জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং চিফ জুডিসিয়ল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধিত সভায় জেলা ও দায়রা জজ মো. আকবর আলী শেখ বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীদের দ্রুত ন্যায় বিচার পাবার আশা আকাক্সক্ষা থাকে। একজন বিচারকের কাজই হলো ন্যায়বিচার প্রদান করা। আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। সুতরাং আমরা সেবা দেব। বিচার বিভাগের কয়েকটি মেশিনারিজ আছে। বিভাগগুলো যখন কাজ করব, তখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতার সাথে ন্যায়বিচারের কাজ করব। বিচার বিভাগের যতগুলো বিভাগ আছে, আমরা কাজ করে যাবো। উন্নয়নের মহাসড়কে চুয়াডাঙ্গাবাসী এগিয়ে যাবে। আমরা এক হয়ে আমাদের মাতৃভূমিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবো। আমরা চেষ্টা করব, বিচারপ্রার্থীদের কথা শুনব। আপনারা সহযোগিতা করবেন, আমরা ন্যায়বিচার দেব। বার ও বেঞ্চ একই সাথে কাজ করতে পারি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে। আমার কাছে যারা আসবে তারা বিচারপ্রার্থী। আমার কাছে নিরপেক্ষতা পাবেন।’
সংবর্ধিত সভায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘শহরে যানজট দূর করতে ইজিবাইক ও বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলব। বাইপাস সড়ক নির্মাণে সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলেছি। ফ্লাইওভার ব্রিজ নির্মাণকাজ বন্ধ আছে। প্রকল্প রিনিউ করে আনতে দেরি হচ্ছে। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন ও বার ভবন নির্মাণের বিষয়ে কথা বলব। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গেলে আইনজীবীদের ভূমিকা অনেক। বিচারকরা একা পারবেন না।’
আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আপনারা প্রতিবাদী হবেন, দেখবেন ঠিক হয়ে যাবে। আমরা এসেছি চুয়াডাঙ্গাবাসীর সেবা করার জন্য। সবাই দোয়া করবেন। আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যেন পালন করে যেতে পারি।’
সভায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘ন্যায়বিচার দেয়ার ক্ষেত্রে একক বিচারক খুব অসহায়। আইনজীবী ও পুলিশ আছে। সকলের সহযোগিতা ছাড়া ন্যায়বিচার সম্ভব নয়। সিভিল ল’ইয়ার যারা আছেন, তারা যদি উদ্দেশ্যে ঠিক করেন, তাহলে সিভিল মামলা শেষ হবে। আমি আপনাদের কাউকে ছোট-বড় হিসেবে দেখতে চাই না। এ মুহুূর্তে আপনাদের কাছে পাওয়া শুভেচ্ছা ও সহযোগিতা কামনা করছি।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালিম হোসেনের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. সেলিম উদ্দিন খান, এম এম শাহজাহান মুকুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম রফিউর রহমান, আবুল বাশার, সাঈদ মাহমুদ শামীম রেজা ডালিম, সৈয়দ হেদায়েত হোসেন আসলাম, আ.স.ম আব্দুর রউফ, ফজলে রাব্বী সাগর, সিনিয়র আইনজীবী বেলাল হোসেন (পিপি), মারুফ সরোয়ার বাবু, বজলুরর হমান ও শফিকুল ইসলাম শফি।
আলোচনা সভায় আইনজীবীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, বার ও বেঞ্চের সাথে সমন্বয় করে বিচারপ্রার্থীরা যাতে ন্যায়বিচার পায়, সেটি আশা করব। বিতর্কমুক্ত বিচার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের কষ্ট দূর করতে নতুন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন ও বার ভবন নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যানজট দূর করতে বাইপাস সড়ক তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়।