বিশ্ব নদী দিবসে চুয়াডাঙ্গায় পদযাত্রা, আলোচনা সমাবেশ ও গণসংগীত পরিবেশন
মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান- আপলোড টাইম : ০৯:২৪:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ২০ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গায় বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন, আলোচনা সভা ও সামাজিক সচেতনতায় গণসংগীত পরিবেশিত হয়েছে। ‘বিশ্ব নদী দিবস-২০২৪ এর অঙ্গীকার, আন্তঃসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার’ স্লোগানে গতকাল রোববার সকাল ১০টায় শহরের মাথাভাঙ্গা পুরাতন ব্রিজের ওপর এ কর্মসূচি পালন করে মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ওয়েভ ফাউন্ডেশন ও নদী পরিব্রাজক দল।
এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে জমায়েত হয় সংগঠনগুলোর সদস্য ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শিল্পকলা একাডেমি চত্বর থেকে পদযাত্রা সহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে শহরের পুরাতন মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওপর গিয়ে শেষ হয়। সেখানেই আলোচনা সভা, মানববন্ধন ও গণসংগীত পরিবেশিত হয়। আলোচনা সভা ও গণসংগীতের মাধ্যমে ‘মাথাভাঙ্গা নদীর দখল-দূষণ রোধ, সকল বাঁধ অপসারণ এবং অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতকরণের দাবি জানানো হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন’র সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী। আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পরিবেশ আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)-এর খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভাপতি কোরবানি আলী মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক কাজল মাহমুদ, রিসোর নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সমন্বয়কারী আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক ও সাংবাদিক মেহেরাব্বিন সানভী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গার প্রতিনিধি সাফফাতুল ইসলাম, সাহিত্য সংগঠন চর্চায়নের পরিচালক রিগ্যান এসকান্দার প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে জাতীয় সংগীত ও পরে মাথাভাঙ্গা নদীর গান পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পী আদিল হোসেন, শেখ ফরিদ আহমেদ, মিলন অধিকারী ও সাহাবুদ্দিন। বাদ্যযন্ত্রে ছিলেন শ্রীদাম রায় ও তন্ময় বসু। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পাশাপাশি ওয়েভ ফাউন্ডেশন ও রিসোর কর্মীবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সি বলেন, ‘মানুষের অসচেতনতার কারণে মরা পশুপাখি মাথাভাঙ্গা নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে বাড়ছে নদী দূষণ। জেলা শহরের বেশ কয়েকটি ড্রেনের মাধ্যমে নোংরা পানি নদীতে দেদারছে নামছে। এতে নদীর পানি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ছে। নদীর তীরে অবৈধভাবে পানবরজসহ বিভিন্ন প্রকার চাষাবাদ করা হচ্ছে। মাটি খননের কারণে তা ধুয়ে নদীতে নেমে নাব্যতা নষ্ট করছে। অবাক হলেও সত্য যে, নদীর বুক থেকে বালু উত্তোলন করে উপকারের বদলে ক্ষতিই ডেকে আনা হচ্ছে। কিছু স্থানে রয়েছে কোমর। তীরে কারেন্ট জাল দিয়ে নদীর স্বাভাবিক স্রোতের প্রতিবন্ধকতায় শুধু সৃষ্টি করা হচ্ছে না, ক্ষতিকারক ওই জালের কারণে ছোট-বড় মাছের পোনা, রেণুও মারা পড়ছে। এসব থেকে পরিত্রাণে প্রশাসনের যেমন আশু পদক্ষেপ নিতে হবে, তেমন সর্বস্তরের সচেতনতা প্রয়োজন।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচলে এ অঞ্চলের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে। তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রায় ফিরে আসবে। এই নদী বাঁচলে জেলার সকল নদীকে বাঁচানো সম্ভব হবে। তাই, আমাদের মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাতে সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’