ইপেপার । আজ শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

৭০ বছরের পুরোনো বাইসাইকেলে চড়ে বেড়াচ্ছেন রফিক

বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে চান আজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:০১:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

সময়ের পরিক্রমায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও চুয়াডাঙ্গার চা-দোকানি আনোয়ার হোসেন রফিকের জীবনে একটি বিশেষ জিনিস রয়ে গেছে অক্ষুণ্ন। প্রায় ৭০ বছর ধরে টিকে থাকা ফিলিপস কোম্পানির মেইড ইন ইংল্যান্ড বাইসাইকেলটি আজও রফিকের চলার সঙ্গী। ১৯৮৩ সাল থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরের পুলিশ পার্ক লেনের চা দোকানে আসা-যাওয়া থেকে শুরু করে বাজার করা, সব কাজেই ব্যবহার করছেন বাইসাইকেলটি। রফিকের বাবা নাসির উদ্দীন মন্ডল পাকিস্তান আমলে মাত্র ১২৫ টাকায় সাইকেলটি কিনেছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর কয়েক বছর সাইকেলটি অযত্নে পড়ে থাকলেও ১৯৮৩ সালে বড় ছেলে রফিক এটি ব্যবহার শুরু করেন।

ফিলিপস ব্র্যান্ডের এই ইংল্যান্ডের তৈরি বাইসাইকেলটির হ্যান্ডেলে খোদায় করা রয়েছে ‘ফিলিপস- মেইড ইন ইংল্যান্ড’। প্রায় ৪১ বছর ধরে বাইসাইকেলটি ব্যবহার করলেও এটি আজও তার রূপ ও কার্যকারিতা বজায় রেখেছে। রফিকের মতোই বাইসাইকেলটিও এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। তার আশেপাশের দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুরোনো বাইসাইকেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বাইসাইকেলটির টিকে থাকা ও এর ঐতিহ্যের প্রতি তাদের সম্মান প্রকাশ পেয়েছে রফিকের প্রতি আন্তরিকতায়।
রফিকের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে। প্রতিদিনের দোকানে যাতায়াত থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সব কাজেই তার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী এই সাইকেল। সময়ের স্রোতে বাইসাইকেলটির বয়স বেড়েছে, কিন্তু রফিক তার প্রতি ভালোবাসা ও যত্নে কোনো কমতি রাখেননি। স্থানীয়রা মনে করেন, এভাবে যত্ন নিলে বাইসাইকেলটি আরও অনেক বছর চলবে।
রফিক বলেন, ‘বাইসাইকেলটি আমার জন্য শুধু একটি যাতায়াতের বাহন নয়, বরং একটি স্মৃতিবিজড়িত সম্পদ। আমার বাবার স্মৃতি জড়ানো এই বাইসাইকেলটির প্রতি আমার গভীর মমতা রয়েছে। এই বাইসাইকেলটি আমার বাবার স্মৃতি। আমি এটিকে ভালোবাসি এবং যত্ন করি। আশা করি, আমার মৃত্যুর পর আমার সন্তানরা এটিকে যত্নে রাখবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় ৭০ বছর আগে ইংল্যান্ডের ফিলিপস কোম্পানির তৈরি এই বাইসাইকেলটি এখন একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। রফিকের বাইসাইকেলটি শুধু তার ব্যক্তিগত সম্পদ নয়, বরং দ্বিচক্র যানের জগতে একটি ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে ধরতেও দ্বিধা নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

error: Content is protected !!

৭০ বছরের পুরোনো বাইসাইকেলে চড়ে বেড়াচ্ছেন রফিক

বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে চান আজীবন

আপলোড টাইম : ০৮:০১:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সময়ের পরিক্রমায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও চুয়াডাঙ্গার চা-দোকানি আনোয়ার হোসেন রফিকের জীবনে একটি বিশেষ জিনিস রয়ে গেছে অক্ষুণ্ন। প্রায় ৭০ বছর ধরে টিকে থাকা ফিলিপস কোম্পানির মেইড ইন ইংল্যান্ড বাইসাইকেলটি আজও রফিকের চলার সঙ্গী। ১৯৮৩ সাল থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরের পুলিশ পার্ক লেনের চা দোকানে আসা-যাওয়া থেকে শুরু করে বাজার করা, সব কাজেই ব্যবহার করছেন বাইসাইকেলটি। রফিকের বাবা নাসির উদ্দীন মন্ডল পাকিস্তান আমলে মাত্র ১২৫ টাকায় সাইকেলটি কিনেছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর কয়েক বছর সাইকেলটি অযত্নে পড়ে থাকলেও ১৯৮৩ সালে বড় ছেলে রফিক এটি ব্যবহার শুরু করেন।

ফিলিপস ব্র্যান্ডের এই ইংল্যান্ডের তৈরি বাইসাইকেলটির হ্যান্ডেলে খোদায় করা রয়েছে ‘ফিলিপস- মেইড ইন ইংল্যান্ড’। প্রায় ৪১ বছর ধরে বাইসাইকেলটি ব্যবহার করলেও এটি আজও তার রূপ ও কার্যকারিতা বজায় রেখেছে। রফিকের মতোই বাইসাইকেলটিও এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। তার আশেপাশের দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুরোনো বাইসাইকেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বাইসাইকেলটির টিকে থাকা ও এর ঐতিহ্যের প্রতি তাদের সম্মান প্রকাশ পেয়েছে রফিকের প্রতি আন্তরিকতায়।
রফিকের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে। প্রতিদিনের দোকানে যাতায়াত থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সব কাজেই তার নির্ভরযোগ্য সঙ্গী এই সাইকেল। সময়ের স্রোতে বাইসাইকেলটির বয়স বেড়েছে, কিন্তু রফিক তার প্রতি ভালোবাসা ও যত্নে কোনো কমতি রাখেননি। স্থানীয়রা মনে করেন, এভাবে যত্ন নিলে বাইসাইকেলটি আরও অনেক বছর চলবে।
রফিক বলেন, ‘বাইসাইকেলটি আমার জন্য শুধু একটি যাতায়াতের বাহন নয়, বরং একটি স্মৃতিবিজড়িত সম্পদ। আমার বাবার স্মৃতি জড়ানো এই বাইসাইকেলটির প্রতি আমার গভীর মমতা রয়েছে। এই বাইসাইকেলটি আমার বাবার স্মৃতি। আমি এটিকে ভালোবাসি এবং যত্ন করি। আশা করি, আমার মৃত্যুর পর আমার সন্তানরা এটিকে যত্নে রাখবে।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় ৭০ বছর আগে ইংল্যান্ডের ফিলিপস কোম্পানির তৈরি এই বাইসাইকেলটি এখন একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। রফিকের বাইসাইকেলটি শুধু তার ব্যক্তিগত সম্পদ নয়, বরং দ্বিচক্র যানের জগতে একটি ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে ধরতেও দ্বিধা নেই।