ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাপে কামড়ের শিকার মুমূর্ষু সাপুড়ের পাশে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা

আইসিইউ সাপোর্টের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫৮ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় বিষধর সাপ ধরার সময় সাপুড়ে মো. মনির (৩০) কামড়ের শিকার হয়েছেন। আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজনে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। দরিদ্র সাপুড়ে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে এই মানবিক কাজটি করেছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। যখন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনাম স্নেক সরবরাহ না থাকায় পরিবারের অভিভাবককে বাঁচাতে অসহায় হয়ে পড়ে তার স্ত্রী জামেলা বেগম।

তিনি জানান, সাপে কামড়ের সঙ্গে সঙ্গে মনির অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় স্থানীদের সাহায্যে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সময়ের মধ্যে রোগীর শরীরে বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনাম স্নেক দেয়ার প্রয়োজনীয়তা জানান। প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনাম স্নেক ইনজেকশনের মূল্য ১৪ হাজার টাকা না থাকায় তিনি নিরুপায় হয়ে পড়েন।

বিষয়টি জানতে পেরে, চুয়াডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি সাফ্ফাতুল ইসলাম, ফাহিম উদ্দিন মভিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রেজাউল বাশারসহ সাপুড়ে মনিরের পাশে এগিয়ে আসেন।

সাফ্ফাতুল ইসলাম বলেন, মুমূর্ষু সাপুড়ের সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়ে জানতে পেরে আমরা খোঁজ নিতে যায়৷ হাসপাতালে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন না থাকা ও রোগীর পরিবার দরিদ্র হওয়ায় বাইরে থেকে তা কিনতে পারছিলো না। আমরা সাধারণ মানুষের সাহায্যে বিকাশে ও সরাসরি টাকা সংগ্রহ করে ১০টি ইনজেকশনের একটি অ্যান্টিভেনাম ডোজ ব্যাবস্থা করি। তবে বিষধর সাপের কামরের শিকার হওয়ায় তার আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। চিকিৎসক আরোও একটি ডোজের প্রয়োজন হতে পারে জানিয়ে, আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আমরা তখনই কুষ্টিয়া বৈষম্যেবিরোধী শিক্ষার্থী ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা হাসপাতালে খোঁজ নেন এবং সাপুড়ের জন্য আইসিইউ’সহ পরবর্তী চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়।

তিনি আরোও বলেন, আমরা রোগীকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাইরে থেকে কিনে ১০ টি অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেয়ার ব্যাবস্থা করি। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাত ১১টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবরোধী ছাত্র প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ, উচ্ছাস ও তাদের দল সেখানে পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে ।

আব্দুল্লাহ জানান, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তাকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তির পর আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসক তাকে অবজারভেশন করছেন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, সর্বশেষ সরবরাহে থাকা ১৫ টি ইনজেকশন রোগীদের দেয়া হয়ে গেছে। চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। এখন হাসপাতালে কোনো অ্যান্টিভেমান সাপ্লাই নেই। রোগীর আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হওয়ায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা সাভারের আব্দুল বারেকের ছেলে সাপুড়ে মনির স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গত শনিবার আলমডাঙ্গায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন । পেশায় সাপুড়ে হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় সাপ শিকারে বের হয়েছিলেন সাপুড়ে দম্পতি। এসময় একটি বিষধর গোখরো তার বাম হাতে কামড় দেয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সাপে কামড়ের শিকার মুমূর্ষু সাপুড়ের পাশে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা

আইসিইউ সাপোর্টের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর

আপলোড টাইম : ১০:০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় বিষধর সাপ ধরার সময় সাপুড়ে মো. মনির (৩০) কামড়ের শিকার হয়েছেন। আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজনে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। দরিদ্র সাপুড়ে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে এই মানবিক কাজটি করেছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। যখন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনাম স্নেক সরবরাহ না থাকায় পরিবারের অভিভাবককে বাঁচাতে অসহায় হয়ে পড়ে তার স্ত্রী জামেলা বেগম।

তিনি জানান, সাপে কামড়ের সঙ্গে সঙ্গে মনির অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় স্থানীদের সাহায্যে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সময়ের মধ্যে রোগীর শরীরে বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনাম স্নেক দেয়ার প্রয়োজনীয়তা জানান। প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনাম স্নেক ইনজেকশনের মূল্য ১৪ হাজার টাকা না থাকায় তিনি নিরুপায় হয়ে পড়েন।

বিষয়টি জানতে পেরে, চুয়াডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি সাফ্ফাতুল ইসলাম, ফাহিম উদ্দিন মভিন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, রেজাউল বাশারসহ সাপুড়ে মনিরের পাশে এগিয়ে আসেন।

সাফ্ফাতুল ইসলাম বলেন, মুমূর্ষু সাপুড়ের সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার বিষয়ে জানতে পেরে আমরা খোঁজ নিতে যায়৷ হাসপাতালে অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন না থাকা ও রোগীর পরিবার দরিদ্র হওয়ায় বাইরে থেকে তা কিনতে পারছিলো না। আমরা সাধারণ মানুষের সাহায্যে বিকাশে ও সরাসরি টাকা সংগ্রহ করে ১০টি ইনজেকশনের একটি অ্যান্টিভেনাম ডোজ ব্যাবস্থা করি। তবে বিষধর সাপের কামরের শিকার হওয়ায় তার আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। চিকিৎসক আরোও একটি ডোজের প্রয়োজন হতে পারে জানিয়ে, আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আমরা তখনই কুষ্টিয়া বৈষম্যেবিরোধী শিক্ষার্থী ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা হাসপাতালে খোঁজ নেন এবং সাপুড়ের জন্য আইসিইউ’সহ পরবর্তী চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়।

তিনি আরোও বলেন, আমরা রোগীকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাইরে থেকে কিনে ১০ টি অ্যান্টিভেনাম ইনজেকশন দেয়ার ব্যাবস্থা করি। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাত ১১টার দিকে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবরোধী ছাত্র প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ, উচ্ছাস ও তাদের দল সেখানে পরবর্তী চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে ।

আব্দুল্লাহ জানান, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তাকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তির পর আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। চিকিৎসক তাকে অবজারভেশন করছেন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, সর্বশেষ সরবরাহে থাকা ১৫ টি ইনজেকশন রোগীদের দেয়া হয়ে গেছে। চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। এখন হাসপাতালে কোনো অ্যান্টিভেমান সাপ্লাই নেই। রোগীর আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হওয়ায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা সাভারের আব্দুল বারেকের ছেলে সাপুড়ে মনির স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গত শনিবার আলমডাঙ্গায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন । পেশায় সাপুড়ে হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় সাপ শিকারে বের হয়েছিলেন সাপুড়ে দম্পতি। এসময় একটি বিষধর গোখরো তার বাম হাতে কামড় দেয়।