আলমডাঙ্গায় নেমে গেছে প্লাবিত জমির পানি
শুরু হয়েছে বাঁধ নির্মাণের কাজ
- আপলোড টাইম : ০২:৫৩:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ১৯ বার পড়া হয়েছে
আলমডাঙ্গার জিকে সেচ প্রকল্পের ইরিগেশন খালের পাড় ভেঙ্গে প্লাবিত জমি থেকে নেমে গেছে পানি, ইতোমধ্যে শুরুও হয়েছে নির্মাণ কাজ। গত বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জিকে সেচ প্রকল্পের ইরিগেশন খাল পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে খাল টইটম্বুর হতে থাকে। বিকেলে প্রচণ্ড পানির চাপে উপজেলার কেদারনগর গ্রামের ভেতর খালের প্রায় ১১০ ফিট পাড় ভেঙ্গে চারটি মাঠের বিস্তৃর্ণ ফসলি মাঠ তলিয়ে যায়। পানির চাপে ভেসে যায় দুটি মাছে চাষের পুকুর। এসময় বেলগাছি, পোয়ামারি, খেজুরতলা ও কেদারনগর গ্রামের মাঠের ধান তলিয়ে যায়, কাটার উপযোগী পাটের জমি হয় জলমগ্ন। ভেসে যায় শতশত কৃষকের ফসলি জমি। মাঠে কেটে রাখা কৃষকের পাটসহ চোখের সামনেই ভেসে যায় তাদের স্বপ্ন। ফসল বাঁচানোর চেষ্টাকালে পানির তোড়ে কেদারনগর গ্রামের আরোজ আলী ও তার নাতি জীবন আহতও হন।
এদিকে, গত বুধবার রাতভর জিকে সেচ খালের পানি ভাঙ্গা পাড় থেকে ফসলি মাঠে ঢুকতে থাকে। বৃহস্পতিবার চেংমারী বিল দিয়ে পানি ঘোলদাঁড়ি ভাটিতে প্রবেশ করে এবং কমতে শুরু করে প্লাবিত জমির পানি। বৃহস্পতিবার সকালে কেদারনগর গ্রামে জিকে সেচ প্রকল্পের ইরিগেশন খালের পাড়ের ভাঙ্গা স্থান পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস। পরিদর্শনের সময় তিনি কৃষকদের আশ্বস্ত করেছিলেন ১০ দিনের মধ্যেই বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হবে। কথা অনুযায়ী শুরু হয়েছে বাধ নির্মাণের কাজ।
তবে এলাবাসীর অভিযোগ, বারবার পাড় ভাঙলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় না কোনো টেকসই উদ্যোগ, দায়সারা গোচের কাজ করে থাকে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে, গতকাল সোমবার সকাল থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে জিকে সেচ প্রকল্পের ইরিগেশন খালের ভাঙ্গা পাড় সংস্কার কাজ।
এ বিষয়ে জুলহাস নামের স্থানীয় এক চাষী বলেন, ভাঙা বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, তবে যেভাবে বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে, তাতে কত দিন বাঁধ টিকবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ এর আগেও একইভাবে নির্মাণ করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
বেলগাছি ইউনিয়নের কেদারনগর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার লাল্টু হোসেন বলেন, এ নিয়ে পরপর তিনবার একই স্থানে পাড় ভাঙার ঘটনা ঘটল। এর আগে বালি তুলে পাড় ঠিক করেছিল, বছর না যেতেই এবার আবার ভাঙলো। এবারো বালি দিয়েই বাধ সংস্কার করা হচ্ছে, তবে যদি দুই পাশে গাইড ওয়াল তৈরি করা হতো, তাহলে বাঁধ মজবুদ হতো।
গ্রামবাসী দাবি তুলেছেন, গাইডওয়াল তৈরি করে মাটি দিয়ে বাঁধ মেরামত করা হলেও এই বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে বালি দিয়ে। কিছুদিন পর যদি আবার বাঁধ ভাঙে, তাহলে কৃষকেরা আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্রামবাসী কর্তৃপক্ষের নিকট টেকশই সংস্কারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে কেদারনগর অপর এক কৃষক বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পাড় মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। পাড় নির্মাণের কাজ যত দ্রুত শেষ হবে, ততোই উচু মাঠে চাষ করা কৃষকদের মঙ্গল। দ্রুত সময়ে বাঁধ নির্মাণ শুরু করায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাঈদ আনোয়ার বলেন, ইতিমধ্যেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বাঁধের ভাঙা স্থানের ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি তুলে বাঁধের সংস্কার করা হচ্ছে। প্রথমে কিছুটা বালি দেওয়ার পর, জিও ব্যাগের মধ্যে বালি ভরে ভাঙা স্থানের দিয়ে পরিপূর্ণভাবে মেরামত করা হবে। আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হবে।