ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে জমা পড়েছে ৭৩টি অস্ত্র

প্রতিবেদক, মেহেরপুর:
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুর জেলায় লাইসেন্সকৃত ৯৩টি অস্ত্রের মধ্যে গেল গত মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত জমা পড়েছে ৭৩টি। মেহেরপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গেল ৫ আগস্ট পর্যন্ত অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন ৯৩ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা ছাড়াও বিএনপি নেতা, সামরিক বাহিনীর সদস্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংক এবং আমলারা রয়েছেন। সরকারি আদেশে অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দেওয়ার নির্দেশনার আলোকে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে শেষ সময় পর্যন্ত ৭৩টি অস্ত্র তিনটি থানায় জমা পড়েছে। অস্ত্র দাখিলের আওতার বাইরে থাকা বাকি ২০টি অস্ত্র সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অধীনে রয়েছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিদায়ী জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং তার ভগ্নিপতি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীনের ছেলে তানভির আহম্মেদ খান রানা, মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস শুকুর ইমন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউর রহমান মুকুল অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন।
মুজিবনগর থানায় অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দেওয়া হয়েছে ৬টি। এর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু এনপিবি পিস্তল ২৩ রাউন্ড গুলিসহ জমা দিয়েছেন। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকা মিলু অস্ত্র জমা দিয়েছেন তার স্ত্রীর মাধ্যমে। এ থানায় জমা দেওয়া বাকি ৫টি অস্ত্রের মধ্যে সাবেক সেনা সদস্যের একটি শর্টগান এবং ৪টি দোনালা বন্দুক রয়েছে।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত মাসের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গাংনী উপজেলায় অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয় ৩৬টি। যার সবগুলো লাইসেন্স ও অস্ত্র গতরাত পর্যন্ত থানায় জমা পড়েছে। অবশ্য এর মধ্যে দুজন লাইন্সের বিপরীতে অস্ত্র ক্রয় করেননি। সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলামের ভাই আনারুল ইসলামের নামে ইস্যুকৃত শটগান ২০২২ সালে জব্দ করেছিল গাংনী থানা। এছাড়া আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পূর্বালী ব্যাংক গাংনী শাখায় একটি শটগান এবং সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও সার্জেন্টের নামে ইস্যুকৃত অস্ত্র সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক তাদের নিজ নিজ হেফাজতে রয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে অস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সাবেক এমপি ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন, সাবেক মেয়র ও যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার, আওয়ামী লীগ নেতা ও কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন। এছাড়া গাংনী থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ হরেন্দ্র নাথ সরকার এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনের অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন বলে গাংনী থানা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্র, গুলি ও লাইসেন্স যাদের নামে ইস্যু করা ছিল, তাদের স্ব স্ব নামে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মাধ্যমে তা থানার অস্ত্রাগারে জমা রাখা হয়েছে। অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরে জমা পড়েছে ৭৩টি অস্ত্র

আপলোড টাইম : ০৫:৪৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মেহেরপুর জেলায় লাইসেন্সকৃত ৯৩টি অস্ত্রের মধ্যে গেল গত মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত জমা পড়েছে ৭৩টি। মেহেরপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গেল ৫ আগস্ট পর্যন্ত অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন ৯৩ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা ছাড়াও বিএনপি নেতা, সামরিক বাহিনীর সদস্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংক এবং আমলারা রয়েছেন। সরকারি আদেশে অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দেওয়ার নির্দেশনার আলোকে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে শেষ সময় পর্যন্ত ৭৩টি অস্ত্র তিনটি থানায় জমা পড়েছে। অস্ত্র দাখিলের আওতার বাইরে থাকা বাকি ২০টি অস্ত্র সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অধীনে রয়েছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিদায়ী জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং তার ভগ্নিপতি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীনের ছেলে তানভির আহম্মেদ খান রানা, মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস শুকুর ইমন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউর রহমান মুকুল অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন।
মুজিবনগর থানায় অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দেওয়া হয়েছে ৬টি। এর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু এনপিবি পিস্তল ২৩ রাউন্ড গুলিসহ জমা দিয়েছেন। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থাকা মিলু অস্ত্র জমা দিয়েছেন তার স্ত্রীর মাধ্যমে। এ থানায় জমা দেওয়া বাকি ৫টি অস্ত্রের মধ্যে সাবেক সেনা সদস্যের একটি শর্টগান এবং ৪টি দোনালা বন্দুক রয়েছে।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে গত মাসের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গাংনী উপজেলায় অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয় ৩৬টি। যার সবগুলো লাইসেন্স ও অস্ত্র গতরাত পর্যন্ত থানায় জমা পড়েছে। অবশ্য এর মধ্যে দুজন লাইন্সের বিপরীতে অস্ত্র ক্রয় করেননি। সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলামের ভাই আনারুল ইসলামের নামে ইস্যুকৃত শটগান ২০২২ সালে জব্দ করেছিল গাংনী থানা। এছাড়া আর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পূর্বালী ব্যাংক গাংনী শাখায় একটি শটগান এবং সেনাবাহিনীর একজন মেজর ও সার্জেন্টের নামে ইস্যুকৃত অস্ত্র সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক তাদের নিজ নিজ হেফাজতে রয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে অস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণকারী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সাবেক এমপি ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন, সাবেক মেয়র ও যুবলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার, আওয়ামী লীগ নেতা ও কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন। এছাড়া গাংনী থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ হরেন্দ্র নাথ সরকার এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেনের অস্ত্র ও লাইসেন্স জমা দিয়েছেন বলে গাংনী থানা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্র, গুলি ও লাইসেন্স যাদের নামে ইস্যু করা ছিল, তাদের স্ব স্ব নামে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) মাধ্যমে তা থানার অস্ত্রাগারে জমা রাখা হয়েছে। অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।