ইপেপার । আজ সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের অনিয়ম—দুর্নীতি

১২ দিনেও কোনো ব্যবস্থা নেই, ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০১:৩৭:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনবার্সন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। হাসপাতালের ৮০ জন কর্মকর্তা—কর্মচারী তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ—পরিচালকের বরাবর লিখিতভাবে দিলেও জেলা প্রশাসক না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এতে চরম ক্ষুব্ধ হাসপাতালের কর্মকর্তা—কর্মচারীরা।
অভিযোগে জানা যায়, মিলন হোসেন ১৯৯৯ সালে চক্ষু হাসপাতালে হিসাবরক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। অন্যান্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি না হলেও কতৃর্পক্ষকে ম্যানেজ করে কয়েক দফায় বাগিয়ে নিয়েছেন নিজের পদোন্নতি। সম্প্রতি তিনি সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়ে আখের গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা—কর্মচারীদের অভিযোগ, মিলন হোসেন হাসপাতালের চশমা ক্রয়, সাইনবোর্ড নির্মাণ, মোটরসাইকেলের সেড নির্মাণে ব্যাপক দুনীর্তি করেছেন। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি অফিসে আসেন না। কর্মচারীদের সাথেও দুর্ব্যবহার করেন সবসময়। হাসপাতালে সরবরাহকৃত ওষুধ, উপকরণ, লেন্স ক্রয় থেকে শুরু করে সকল কেনাকাটায় অনিয়ম করেন তিনি। হিসাবরক্ষক থাকাকালে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের নামে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিতেন ২৫০০ টাকা। নিজের আত্মীয় স্বজনদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা করান।
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জন ডা. মো. আব্দুল হালিম বলেন, মিলন হোসেন ঝিনাইদহের সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের সাথে যোগসাজশ করে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই মোটা টাকার বিনিময়ে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। আমাদের কোনো পদোন্নতি না হলেও তিনি পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের কর্মকর্তা—কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে কথা বললে তিনি ছুটির অজুহাতে এখন পর্যন্ত অফিসে আসেন না। আমরা চাই সমাজসেবা কার্যালয়ে যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, তার সুষ্ঠু তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
সিনিয়র ল্যাব সহকারী তরিকুল ইসলাম বলেন, এর আগে মিলনের দুনীর্তির ধরে ফেলায় ২ জন কর্মচারীকে বহিস্কার করা হয়। এতদিন তার বিরুদ্ধে আমরা কথা বলতে পারিনি। আমরা হাসপাতালের ৮০ জন কর্মকর্তা—কর্মচারী অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা যে অভিযোগ দিয়েছি তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক ও সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ—পরিচালক তার বিরুদ্ধে কেন তদন্ত করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা চাই আমাদের দেওয়া অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
অভিযোগের ব্যাপারে মিলন হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ—পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, যেহেতু জেলা প্রশাসক ওই হাসপাতালের সভাপতি। বর্তমানে জেলা প্রশাসক নেই এ জন্য তদন্ত কমিটি বা ব্যবস্থা নিতে পারছি না। নতুন জেলা প্রশাসক এলেই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের অনিয়ম—দুর্নীতি

১২ দিনেও কোনো ব্যবস্থা নেই, ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা

আপলোড টাইম : ০১:৩৭:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনবার্সন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগ উঠলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। হাসপাতালের ৮০ জন কর্মকর্তা—কর্মচারী তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ—পরিচালকের বরাবর লিখিতভাবে দিলেও জেলা প্রশাসক না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এতে চরম ক্ষুব্ধ হাসপাতালের কর্মকর্তা—কর্মচারীরা।
অভিযোগে জানা যায়, মিলন হোসেন ১৯৯৯ সালে চক্ষু হাসপাতালে হিসাবরক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। অন্যান্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি না হলেও কতৃর্পক্ষকে ম্যানেজ করে কয়েক দফায় বাগিয়ে নিয়েছেন নিজের পদোন্নতি। সম্প্রতি তিনি সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়ে আখের গুছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা—কর্মচারীদের অভিযোগ, মিলন হোসেন হাসপাতালের চশমা ক্রয়, সাইনবোর্ড নির্মাণ, মোটরসাইকেলের সেড নির্মাণে ব্যাপক দুনীর্তি করেছেন। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি অফিসে আসেন না। কর্মচারীদের সাথেও দুর্ব্যবহার করেন সবসময়। হাসপাতালে সরবরাহকৃত ওষুধ, উপকরণ, লেন্স ক্রয় থেকে শুরু করে সকল কেনাকাটায় অনিয়ম করেন তিনি। হিসাবরক্ষক থাকাকালে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের নামে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিতেন ২৫০০ টাকা। নিজের আত্মীয় স্বজনদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা করান।
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জন ডা. মো. আব্দুল হালিম বলেন, মিলন হোসেন ঝিনাইদহের সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের সাথে যোগসাজশ করে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই মোটা টাকার বিনিময়ে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। আমাদের কোনো পদোন্নতি না হলেও তিনি পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের কর্মকর্তা—কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে কথা বললে তিনি ছুটির অজুহাতে এখন পর্যন্ত অফিসে আসেন না। আমরা চাই সমাজসেবা কার্যালয়ে যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, তার সুষ্ঠু তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
সিনিয়র ল্যাব সহকারী তরিকুল ইসলাম বলেন, এর আগে মিলনের দুনীর্তির ধরে ফেলায় ২ জন কর্মচারীকে বহিস্কার করা হয়। এতদিন তার বিরুদ্ধে আমরা কথা বলতে পারিনি। আমরা হাসপাতালের ৮০ জন কর্মকর্তা—কর্মচারী অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা যে অভিযোগ দিয়েছি তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক ও সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ—পরিচালক তার বিরুদ্ধে কেন তদন্ত করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা চাই আমাদের দেওয়া অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
অভিযোগের ব্যাপারে মিলন হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ—পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, যেহেতু জেলা প্রশাসক ওই হাসপাতালের সভাপতি। বর্তমানে জেলা প্রশাসক নেই এ জন্য তদন্ত কমিটি বা ব্যবস্থা নিতে পারছি না। নতুন জেলা প্রশাসক এলেই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।