বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক চুয়াডাঙ্গার সন্তান মেহেদী হাসান বাবু
দুর্নীতি নিরসন করে জেলাকে সুন্দর রূপে গঠনে কাজ করতে চান
- আপলোড টাইম : ০৯:৪৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ৩৬ বার পড়া হয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫৮ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা দিয়েছিলেন সমন্বয়করা। গত ৩ আগস্ট সমন্বয়ক রিফাত রশিদ এক ফেসবুক বার্তায় এই কমিটির তালিকা প্রকাশ করেন। কমিটিতে সমন্বয়ক এবং সহসমন্বয়ক মিলিয়ে ১৫৮ জন সদস্য রাখা হয়। এই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের সুজাতপুর গ্রামের মুসা খানের ছেলে মেহেদী হাসান বাবু খান। এছাড়াও তিনি সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্সিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা আসেন। বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করেন।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে মেহেদী হাসান বাবু খান বলেন, ‘আমরা ছাত্রসমাজ বাংলার ইতিহাসে একটি বিপ্লব ঘটিয়েছি। একটি ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসকের হাতে জিম্মি অবস্থায় এ দেশের মানুষ তাদের বাক স্বাধীনতাও পায়নি। তাদের ভোটাধিকারও হরণ করা হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমরা ছাত্র-জনতা সেই স্বৈরাচারের কালো হাত ভেঙে দিয়েছি। আন্দোলনের পর এই প্রথম আমি নিজ জেলায় আসার সুযোগ পেলাম। চুয়াডাঙ্গার সন্তান হিসেবে এই জেলা নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে। আপনারা জানেন বিগত দিনে এই জেলায় দুর্নীতিবাজ এমপি ও রাজনৈতিক নেতারা প্রকৃত কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি। শিক্ষাখাত, ব্রিজ-কালভার্টসহ যেখানে যেখানে উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, সকল ক্ষেত্রেই উন্নয়নের থেকে দুর্নীতি বেশি হয়েছে। আপানারা জানেন, এখন সাধারণ মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত কাউকে চায় না। আমরা চাই, ছাত্র-জনতা মিলে চুয়াডাঙ্গার সকল দুর্নীতি নিরসন করে এই জেলাকে সুন্দররুপে গঠন করতে।’
তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে আমাদের আন্দোলনে গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে হামলা করা হয়েছে। আমার শরীরেও সেই বুলেটের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যখন আমরা নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলন করে দেশকে স্বৈরাচার শাসক মুক্ত করেছি। তখনই অনেকে তার ফায়দা লুটতে চাচ্ছে। আন্দোলন চলাকালে যারা অংশ নেয়নি, তারাই আন্দোলন সফল হওয়ার পর ফায়দা লুটতে নিজেদেরকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করছেন, নিজেদের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করছেন। ঢাকাসহ দেশের সব জেলাতেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গাতে এখন পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক কমিটি হয়নি। যারা আন্দোলনের অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গার পথে নেমেছিলেন, তাদের প্রতি আমার সম্মান। চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটি গঠন হলে আমার ফেসবুকে তা প্রকাশ করব। আমি সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ‘আপনারা সবসময় আমাদের ছাত্র সমাজের পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন, পাশে থাকবেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর পূর্ব মুহূর্তে আমরা বলেছিলাম ৫২-তে ছাত্র সমাজকে আটকিয়ে রাখতে পারেনি, ৬৬-তে ছাত্র সমাজকে আটকিয়ে রাখতে পারেনি, ৬৯-এও ছাত্র সমাজকেও আটকিয়ে রাখতে পারেনি, ৭১-এও পারেনি, ২৪-এও পারবে না।’
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রকাশিত কমিটিতে সমন্বয়ক রয়েছেন ৪৯ জন। আর সহ-সমন্বয়ক রয়েছেন ১০৯ জন। মেহেদী হাসান বাবু খান সমন্বয়ক ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্সিটির ছাত্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১০৯ জন সহ-সমন্বয়কের অন্যতম একজন সহ-সমন্বয়ক। তিনি প্রথম থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বেসরকারি বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে অংশ নিয়েছিলেন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানেও তিনি আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। ঢাকায় তার নেতৃত্ব নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে তার বক্তব্যও সচিত্র উঠে এসছে।