ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের পক্ষে সোচ্চার চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সদস্যরা তরুণ ৯ সাংবাদিককে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান

তরুণ ৯ সাংবাদিককে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে সোচ্চার হলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যরা। জরুরি তলবি সভায় আংশিক দাবি মেনে নিয়ে মন বোঝানো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সদস্য পদ দেয়া হয়েছে ৯ জন তরুণ গণমাধ্যমকর্মীকে। তবে তিন দফা দাবি মানেননি সাংবাদিক নেতারা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, নিরপেক্ষ গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসা, উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে তলবি সভা ডাকা এবং সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতি তাদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা বাড়িয়েছে। সেই সাথে এখনো দম্ভ করে বাড়িতে থাকা সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে পলাতক থাকা সদস্য, সাধারণ সভা ও তলবি সভায় অনুপস্থিত সদস্য ও কমিটির পদলোভীদের প্রতি জানানো হয়েছে তীব্র নিন্দা। দ্রুতই আংশিক নয়, সকল দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

জানা যায়, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের আন্দোলন দিন দিন তীব্র হলেও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটি কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমতাবস্থায় সংকটাপণ্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের ১৫ ‘ক’ ধারা অনুযায়ী তলবি সভা ডাকেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিক এম এ মামুন। যথারীতি গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নির্ধারিত সময়ে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে লক্ষ্য করা যায় হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন বাদে সকল সদস্য উপস্থিত হয়েছেন। তলবি সভার বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও ওই সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক পশ্চিমাঞ্চল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আজাদ মালিতা, অন্যতম জৈষ্ঠ্য সদস্য দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, এবং তলবি সভা আহ্বানকারী সিনিয়র সাংবাদিক এম এ মামুন সকল যোগ্য ও কর্মঠ সাংবাদিকদের সমদৃষ্টিতে বিবেচনা করার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে সাধারণ সদস্যরা ৯ জন তরুণ ও যোগ্য সাংবাদিককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।

চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের তলবি সভা শেষ হওয়ার পর সভা আহ্বানকারী সিনিয়র সাংবাদিক এম এ মামুন বলেন, ‘আপনাদের দাবির প্রেক্ষিতে ৯ জন তরুণ সাংবাদিককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা দ্রুতই প্রেসক্লাবের চিঠি পাবেন।’ তবে অন্য দাবিগুলো নিয়ে তিনিও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে, আন্দোলনরত গণমাধ্যমকর্মীরা পূর্ণাঙ্গ দাবি পূরণ করতে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কেও সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন।

মূলত, গত রোববার চুয়াডাঙ্গা শহরের কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে দুই দফা দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন। প্রথমত যোগ্যদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত, দ্বিতীয়ত বর্তমান চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার দাবিতে ওই মানববন্ধনের পরই জেলার বৈষম্যের শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান। এরপর গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থীরা সোমবার সকাল ১০টায় অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয়। ওই অবস্থান কর্মসূচিতে জেলার সকল উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা একাত্মতা প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করেন। সংবাদকর্মীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে দুই দফা থেকে তিন দফায় গিয়ে আন্দোলনকারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিপীড়নে মদদ দেয়ায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দুইজন সদস্য কামরুজ্জামান চাঁদ ও সোহেল সজিবকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ বাতিলসহ সকল প্রকার পদ বাতিলের দাবি তোলেন। ওই দিন দুপুরেই প্রেসক্লাবে সাধারণ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ অধিকার না থাকায় আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাবে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনে দেয়া নির্দেশনায় প্রেসক্লাবের তালা খুলে দেয়া হয়।

প্রেসক্লাবে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে গণমাধ্যমকর্মীরা খানিকটা উল্লাস করে আবার ক্লাব মিলনায়তনেই আন্দোলন শুরু করেন। দুপুরের পর কিছুটা বিরতি দিয়ে বিকেল ৬টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব চত্বরে আবারও অবস্থান নেয় গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বানে দলে দলে এই আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখা যায়। স্লোগানে মুখরিত হয় প্রেসক্লাব চত্বর। জরুরি সভায় অংশগ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, সহসভাপতি রফিক রহমান, নির্বাহী সদস্য জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক আজাদ মালিতা উপস্থিত হয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও কমিটির অন্য পদধারীরা সেখানে আসেন না। সময় গড়াই, আন্দোলনকারীদের ধৈর্য্যও উত্তেজনার পর্যায়ে এগোয়। রাত ১০টার পরও যখন প্রেসক্লাবের নামধারী পদধারীরা উপস্থিত না হয়, তখন আন্দোলনরত গণমাধ্যমকর্মীরা বর্তমান কমিটিতে নিলর্জ্জ আখ্যা দিয়ে পাঁচজন সদস্যকে বয়কটের আহ্বান জানান। এর আগে বিকেলেই বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সংস্কার চেয়ে পত্র দেন।

ওই পত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়, প্রত্যাক্ষভাবে আন্দোলনকারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিপিড়নে মদদ দেয়ায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দুইজন সদস্য কামরুজ্জামান চাঁদ ও সোহেল সজিবকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ বাতিলসহ সকল প্রকার পদ বাতিল করতে হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা একটি নিরপেক্ষ প্রেসক্লাব করতে অতি দ্রুতই চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের কমিটি বৃহৎরুপে সংস্করণ করার দাবি জানান। এতোকিছুর পর প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যরা জাগ্রত হন। কমিটির পদক্ষেপ না নেয়াকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সদস্য ও ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক এম এ মামুন এক তলবি সভার আহ্বান জানান। সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই সভাতেই ৯ জন তরুণ গণমাধ্যমকর্মীকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে জানা যায়।

তলবি সভায় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, সহসভাপতি রফিক রহমান, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক আজাদ মালিতা, নাজমুল হক স্বপন, শেখ সেলিম, এমএ মামুন, রিফাত রহমান, এমএম আলাউদ্দীন, কামাল উদ্দিন জোয়ার্দ্দার, হুসাইন মালিক, শাহ আলম সনি, সরদার আলামিন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুল হক মিজান, রানা কাদির, ইসলাম রকিব, আতিয়ার রহমান, আলমগীর কবির শিপলু, খাইরুজ্জামান সেতু, শামিম রেজা, রেজাউল করিম লিটন, আবুল হাসেম, মাহফুজ মামুন, রুহুল আমিন রতন, সনজিত কর্মকার, মফিজুর রহমান জোয়াদ্দার, জহির রায়হান সোহাগ, পলাশ উদ্দীন, খাইরুল ইসলাম, জামান আক্তার, মশিউর রহমান প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের পক্ষে সোচ্চার চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সদস্যরা তরুণ ৯ সাংবাদিককে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান

তরুণ ৯ সাংবাদিককে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান

আপলোড টাইম : ০৯:২৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে সোচ্চার হলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যরা। জরুরি তলবি সভায় আংশিক দাবি মেনে নিয়ে মন বোঝানো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সদস্য পদ দেয়া হয়েছে ৯ জন তরুণ গণমাধ্যমকর্মীকে। তবে তিন দফা দাবি মানেননি সাংবাদিক নেতারা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, নিরপেক্ষ গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসা, উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে তলবি সভা ডাকা এবং সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতি তাদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা বাড়িয়েছে। সেই সাথে এখনো দম্ভ করে বাড়িতে থাকা সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে পলাতক থাকা সদস্য, সাধারণ সভা ও তলবি সভায় অনুপস্থিত সদস্য ও কমিটির পদলোভীদের প্রতি জানানো হয়েছে তীব্র নিন্দা। দ্রুতই আংশিক নয়, সকল দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

জানা যায়, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের আন্দোলন দিন দিন তীব্র হলেও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের বর্তমান কমিটি কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমতাবস্থায় সংকটাপণ্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের ১৫ ‘ক’ ধারা অনুযায়ী তলবি সভা ডাকেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিক এম এ মামুন। যথারীতি গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নির্ধারিত সময়ে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে লক্ষ্য করা যায় হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন বাদে সকল সদস্য উপস্থিত হয়েছেন। তলবি সভার বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও ওই সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক পশ্চিমাঞ্চল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আজাদ মালিতা, অন্যতম জৈষ্ঠ্য সদস্য দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, এবং তলবি সভা আহ্বানকারী সিনিয়র সাংবাদিক এম এ মামুন সকল যোগ্য ও কর্মঠ সাংবাদিকদের সমদৃষ্টিতে বিবেচনা করার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে সাধারণ সদস্যরা ৯ জন তরুণ ও যোগ্য সাংবাদিককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।

চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের তলবি সভা শেষ হওয়ার পর সভা আহ্বানকারী সিনিয়র সাংবাদিক এম এ মামুন বলেন, ‘আপনাদের দাবির প্রেক্ষিতে ৯ জন তরুণ সাংবাদিককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা দ্রুতই প্রেসক্লাবের চিঠি পাবেন।’ তবে অন্য দাবিগুলো নিয়ে তিনিও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে, আন্দোলনরত গণমাধ্যমকর্মীরা পূর্ণাঙ্গ দাবি পূরণ করতে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কেও সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন।

মূলত, গত রোববার চুয়াডাঙ্গা শহরের কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে দুই দফা দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন। প্রথমত যোগ্যদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত, দ্বিতীয়ত বর্তমান চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার দাবিতে ওই মানববন্ধনের পরই জেলার বৈষম্যের শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান। এরপর গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থীরা সোমবার সকাল ১০টায় অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেয়। ওই অবস্থান কর্মসূচিতে জেলার সকল উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা একাত্মতা প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করেন। সংবাদকর্মীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে দুই দফা থেকে তিন দফায় গিয়ে আন্দোলনকারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিপীড়নে মদদ দেয়ায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দুইজন সদস্য কামরুজ্জামান চাঁদ ও সোহেল সজিবকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ বাতিলসহ সকল প্রকার পদ বাতিলের দাবি তোলেন। ওই দিন দুপুরেই প্রেসক্লাবে সাধারণ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ অধিকার না থাকায় আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাবে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনে দেয়া নির্দেশনায় প্রেসক্লাবের তালা খুলে দেয়া হয়।

প্রেসক্লাবে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে গণমাধ্যমকর্মীরা খানিকটা উল্লাস করে আবার ক্লাব মিলনায়তনেই আন্দোলন শুরু করেন। দুপুরের পর কিছুটা বিরতি দিয়ে বিকেল ৬টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব চত্বরে আবারও অবস্থান নেয় গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বানে দলে দলে এই আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখা যায়। স্লোগানে মুখরিত হয় প্রেসক্লাব চত্বর। জরুরি সভায় অংশগ্রহণের জন্য চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, সহসভাপতি রফিক রহমান, নির্বাহী সদস্য জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক আজাদ মালিতা উপস্থিত হয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও কমিটির অন্য পদধারীরা সেখানে আসেন না। সময় গড়াই, আন্দোলনকারীদের ধৈর্য্যও উত্তেজনার পর্যায়ে এগোয়। রাত ১০টার পরও যখন প্রেসক্লাবের নামধারী পদধারীরা উপস্থিত না হয়, তখন আন্দোলনরত গণমাধ্যমকর্মীরা বর্তমান কমিটিতে নিলর্জ্জ আখ্যা দিয়ে পাঁচজন সদস্যকে বয়কটের আহ্বান জানান। এর আগে বিকেলেই বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সংস্কার চেয়ে পত্র দেন।

ওই পত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়, প্রত্যাক্ষভাবে আন্দোলনকারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিপিড়নে মদদ দেয়ায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের দুইজন সদস্য কামরুজ্জামান চাঁদ ও সোহেল সজিবকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্য পদ বাতিলসহ সকল প্রকার পদ বাতিল করতে হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা একটি নিরপেক্ষ প্রেসক্লাব করতে অতি দ্রুতই চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের কমিটি বৃহৎরুপে সংস্করণ করার দাবি জানান। এতোকিছুর পর প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যরা জাগ্রত হন। কমিটির পদক্ষেপ না নেয়াকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সদস্য ও ৭১ টিভির জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক এম এ মামুন এক তলবি সভার আহ্বান জানান। সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতিতে ওই সভাতেই ৯ জন তরুণ গণমাধ্যমকর্মীকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে জানা যায়।

তলবি সভায় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি, সহসভাপতি রফিক রহমান, সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, সাংবাদিক আজাদ মালিতা, নাজমুল হক স্বপন, শেখ সেলিম, এমএ মামুন, রিফাত রহমান, এমএম আলাউদ্দীন, কামাল উদ্দিন জোয়ার্দ্দার, হুসাইন মালিক, শাহ আলম সনি, সরদার আলামিন, রফিকুল ইসলাম, মিজানুল হক মিজান, রানা কাদির, ইসলাম রকিব, আতিয়ার রহমান, আলমগীর কবির শিপলু, খাইরুজ্জামান সেতু, শামিম রেজা, রেজাউল করিম লিটন, আবুল হাসেম, মাহফুজ মামুন, রুহুল আমিন রতন, সনজিত কর্মকার, মফিজুর রহমান জোয়াদ্দার, জহির রায়হান সোহাগ, পলাশ উদ্দীন, খাইরুল ইসলাম, জামান আক্তার, মশিউর রহমান প্রমুখ।