ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবন দিয়ে বিপ্লবীরা দেশ মুক্ত করেছেন ; সরকারকে এর স্পিরিট ধারণ করতে হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সফলতা কিভাবে এসেছে তা নিয়ে সমন্বয়করা কথা বলেছেন। প্রাণ উৎসর্গ করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামার পরই খুনি বাহিনীর বিরুদ্ধে সফলতা এসেছে। তারা বুঝতে পেরেছিলেন ব্যর্থ হলে দানবীয় হাসিনা সরকার কোনোভাবে আর তাদের বাঁচতে দেবে না। এর আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পরিণতি তারা জানতেন। ক্ষমতা পোক্ত করতে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমদের পৃথিবী থেকে বিদায় করতে সামান্য দ্বিধা করেনি তারা। খুন গুম ও নিপীড়ন বিরোধীদের নিয়তি হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের সমালোচনাকারী, প্রতিবাদকারীদের সবারই একই পরিণতি হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার স্পিরিট ধারণ করতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে, এটা ক্ষমতার পালাবদলজনিত কোনো সাধারণ সরকার নয়। দলমত নির্বিশেষে যারা ফ্যাসিবাদ নির্মূল চেয়েছে সবাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শর্তহীন সমর্থন করছে। লক্ষণীয়, দেশ শাসনের দাবিদার দলগুলোও তড়িঘড়ি নির্বাচন চাচ্ছে না। তারা জানে, এই বিপ্লবকে নিরাপদ করতে হবে। এখনো এটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। ফ্যাসিবাদের নিয়োগ করা দালালরা এখনো দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি সেক্টরে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা না গেলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা আছে। তাই সবাই এই সরকারকে সময় দিতে চায়। যাতে ভেঙে পড়া রাষ্ট্রযন্ত্র মেরামত করা যায়। ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনের মূল্য বুঝতে হবে সরকারকে। এই সরকারে নিয়োগ পাওয়া সবাই বিজ্ঞ অভিজ্ঞ। তার পরও এমন কিছু ঘটনা ঘটছে যা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে। আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ হচ্ছে, সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিবাদ করছে।
আওয়ামী লীগ পুরনো রাজনৈতিক দল। এর মানে এই নয় যে দলটির গণহারে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার হরণ করার অথবা গুম খুন করে দেশকে গুপ্ত কারাগারে পরিণত করার অধিকার আছে। যে রাজনৈতিক দলই এমন করুক না কেন তাকে অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের প্রতিটি গুম খুন ও গণহত্যার বিচার হতে হবে। এজন্য দায়ী প্রত্যেক ব্যক্তিকে অপরাধের দায় নিতে হবে। এর সাথে দলগতভাবে আওয়ামী লীগ অভিযুক্ত। দলটিকে শাস্তি পেতেই হবে। আহত ছাত্র-জনতা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য অস্ত্র গায়েব, পুলিশের হাজার হাজার সদস্য পলাতক, আওয়ামী লীগ ও তার পেটোয়া বাহিনীর খুনে সদস্যরা আত্মগোপনে, প্রতিবিপ্লবের শঙ্কায় দেশবাসী। বড় ধরনের রক্তপাত বাধিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে হটিয়ে দেয়া গেলে প্রথমে প্রাণ যাবে আন্দোলনকারী হাজার হাজার ছাত্র-জনতার। উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিগত সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রেখেছেন। তাদের জন্য এই সরকারের উপদেষ্টা হওয়া অপ্রত্যাশিত পুরস্কারের মতো। এখন একজন উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে কাছে টানছেন। আহ্বান জানাচ্ছেন দল গোছানোর। এটি আত্মঘাতী কর্ম। ছাত্র-জনতা বিপ্লব করে দেশবাসীকে মুক্তি দিয়েছে জালিম সরকারের হাত থেকে। সরকারের প্রথম কাজ আওয়ামী লীগের যাবতীয় অপরাধের বিচার করা। আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়ার জন্য কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে আনা হয়নি। আশা করব, এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেয়া থেকে উপদেষ্টারা বিরত থাকবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবন দিয়ে বিপ্লবীরা দেশ মুক্ত করেছেন ; সরকারকে এর স্পিরিট ধারণ করতে হবে

আপলোড টাইম : ০৯:১৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সফলতা কিভাবে এসেছে তা নিয়ে সমন্বয়করা কথা বলেছেন। প্রাণ উৎসর্গ করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামার পরই খুনি বাহিনীর বিরুদ্ধে সফলতা এসেছে। তারা বুঝতে পেরেছিলেন ব্যর্থ হলে দানবীয় হাসিনা সরকার কোনোভাবে আর তাদের বাঁচতে দেবে না। এর আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পরিণতি তারা জানতেন। ক্ষমতা পোক্ত করতে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমদের পৃথিবী থেকে বিদায় করতে সামান্য দ্বিধা করেনি তারা। খুন গুম ও নিপীড়ন বিরোধীদের নিয়তি হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের সমালোচনাকারী, প্রতিবাদকারীদের সবারই একই পরিণতি হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার স্পিরিট ধারণ করতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে, এটা ক্ষমতার পালাবদলজনিত কোনো সাধারণ সরকার নয়। দলমত নির্বিশেষে যারা ফ্যাসিবাদ নির্মূল চেয়েছে সবাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শর্তহীন সমর্থন করছে। লক্ষণীয়, দেশ শাসনের দাবিদার দলগুলোও তড়িঘড়ি নির্বাচন চাচ্ছে না। তারা জানে, এই বিপ্লবকে নিরাপদ করতে হবে। এখনো এটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। ফ্যাসিবাদের নিয়োগ করা দালালরা এখনো দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি সেক্টরে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা না গেলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা আছে। তাই সবাই এই সরকারকে সময় দিতে চায়। যাতে ভেঙে পড়া রাষ্ট্রযন্ত্র মেরামত করা যায়। ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনের মূল্য বুঝতে হবে সরকারকে। এই সরকারে নিয়োগ পাওয়া সবাই বিজ্ঞ অভিজ্ঞ। তার পরও এমন কিছু ঘটনা ঘটছে যা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে। আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ হচ্ছে, সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিবাদ করছে।
আওয়ামী লীগ পুরনো রাজনৈতিক দল। এর মানে এই নয় যে দলটির গণহারে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার হরণ করার অথবা গুম খুন করে দেশকে গুপ্ত কারাগারে পরিণত করার অধিকার আছে। যে রাজনৈতিক দলই এমন করুক না কেন তাকে অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের প্রতিটি গুম খুন ও গণহত্যার বিচার হতে হবে। এজন্য দায়ী প্রত্যেক ব্যক্তিকে অপরাধের দায় নিতে হবে। এর সাথে দলগতভাবে আওয়ামী লীগ অভিযুক্ত। দলটিকে শাস্তি পেতেই হবে। আহত ছাত্র-জনতা এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। রক্তের দাগ শুকায় নাই। নিরাপত্তা বাহিনীর অসংখ্য অস্ত্র গায়েব, পুলিশের হাজার হাজার সদস্য পলাতক, আওয়ামী লীগ ও তার পেটোয়া বাহিনীর খুনে সদস্যরা আত্মগোপনে, প্রতিবিপ্লবের শঙ্কায় দেশবাসী। বড় ধরনের রক্তপাত বাধিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে হটিয়ে দেয়া গেলে প্রথমে প্রাণ যাবে আন্দোলনকারী হাজার হাজার ছাত্র-জনতার। উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিগত সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রেখেছেন। তাদের জন্য এই সরকারের উপদেষ্টা হওয়া অপ্রত্যাশিত পুরস্কারের মতো। এখন একজন উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে কাছে টানছেন। আহ্বান জানাচ্ছেন দল গোছানোর। এটি আত্মঘাতী কর্ম। ছাত্র-জনতা বিপ্লব করে দেশবাসীকে মুক্তি দিয়েছে জালিম সরকারের হাত থেকে। সরকারের প্রথম কাজ আওয়ামী লীগের যাবতীয় অপরাধের বিচার করা। আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়ার জন্য কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে আনা হয়নি। আশা করব, এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দেয়া থেকে উপদেষ্টারা বিরত থাকবেন।