গায়েবানা জানাজা প্রসঙ্গে
- আপলোড টাইম : ১০:৩৫:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
- / ৪১২ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: মানুষ মারা গেলে তার রূহের মাগফিরাতের জন্য যে বিশেষ পদ্ধতিতে নামাজ পড়া হয় তার নাম জানাজার নামাজ। অত্যন্ত ভাবগম্ভীর ও অনাড়ম্বর পরিবেশে এ নামাজ আদায় করা হয়। মৃতের রুহের মাগফিরাত কামনায় জানাজা আদায় করা জীবিতদের জন্য শরীয় দায়িত্ব। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেন, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘একজন মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের পাঁচটি হক রয়েছে। সালামের উত্তর দেয়া, অসুস্থের খোঁজ খবর নেয়া, জানাজায় অংশগ্রহণ করা, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচির জবাব দেয়া।’ Ñসহিহ বুখারি। শরীয়তের দৃষ্টিতে জানাজার নামাজ আদায় করা ফরজে কেফায়া। কোনো এলাকায় যদি কাউকে জানাজার নামাজ ছাড়া দাফন করা হয় তাহলে ওই এলাকার সবাই গুনাহগার হবে। জানাজার নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এর অন্যতম শর্ত হলো, মৃতের লাশ অবশ্যই জানাজা স্থলে উপস্থিত থাকা। সম্প্রতি সমাজে গায়েবানা জানাজা আদায়ের প্রবণতা বাড়ছে। যেহেতু এক জায়গায় একত্রিত হয়ে সবাই মিলে তার জানাজার নামাজ পড়া সম্ভব নয় সে কারণে মৃত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার গায়েবানা জানাজা পড়া হয়ে থাকে। তাছাড়া অনেক সময় দেখা যায় বড় কোনো নেতা, আলেম বা পীর-মাশায়েখ মারা গেলে তার প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সম্মান থাকার কারণে তার জানাজার নামাজ পড়তে আগ্রহবোধ করেন অনেকেই। কিন্তু গায়েবানা জানাজা জায়েজ কিনা বিষয়টিকে কেউ ক্ষতিয়ে দেখার চেষ্টা করেন না। যেহেতু জানাজার নামাজ একটি ইবাদত ও ধর্মীয় বিষয় তাই ধর্মীয় শর্তাবলি ও বিধি-বিধান মেনেই তা পালন করা উচিত। এর অন্যথা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ধর্মে নতুন কোনো বিষয় সংযোজন ভয়াবহ পাপের কাজ। সব মাজহাবের স্কলারদের সিদ্ধান্ত হলো, লাশ অনুপস্থিত রেখে গায়েবানা জানাজা জায়েজ নয়। গায়েবানা জানাজা পড়া হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত পরিপন্থি কাজ। কেননা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় দূর-দূরান্তে বহু সাহাবা ইন্তেকাল করেছেন; কিন্তু তিনি তাদের গায়েবানা জানাজা পড়েননি। বিষয়পি শরীয়ত অনুমোদন করলে রাসূল অবশ্যই আদায় করতেন। মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে হলে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করতে হলে শরীয়ত অনুমোদিত পন্থায় যাবতীয় শর্ত-শরায়েত মেনেই জানাজা পড়তে হবে। অন্য কোনোভাবে নয়। এ বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানের সতর্কতা জরুরি।