ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ছাত্র জনতার ওপর ইউপি চেয়ারম্যানের গুলি, হতাহত ২৫

আ.লীগ নেতার লাশ ঝুলিয়ে রাখলো বিক্ষুদ্ধ জনতা

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৫:৪৮:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় পোড়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণ (৭৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঝিনাইদহ শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে ঘরের মধ্যে দগ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। বিক্ষুদ্ধ জনতা তার বাড়িতে প্রবেশ করে লাশ নিয়ে যায় পায়রা চত্বরে। সেখানে তার পোড়া ও উলঙ্গ লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এর আগে হিরণের বাড়িতে জনতা ঘেরাও করলে শহিদুল ইসলাম হিরণ তার লাইসেন্স করা বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে গুলি চালায়। এতে প্রায় ২৫ জন আহত হন। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় জনতার গণপিটুনিতে হিরণের গাড়িচালক আক্তার হোসেন বিকেলে নিহত হন।
এদিকে বহু আলোচিত-সমালোচিত শহিদুল ইসলাম হিরণ নিহত হওয়ার খবরে হাজার হাজার জনতা তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়রা চত্বরে এসে জমা হয়। শহিদুল ইসলাম হিরণ জাসদ গণবাহিনী দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এরপর সর্বহারা, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও সর্বশেষ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় বহু হত্যা, নির্যাতন ও অপকর্মের অভিযোগ ছিল। একসময় তাকে বাংলাদেশের মিডিয়া ‘ঝিনাইদহের এরশাদ শিকদার’ উপাধি দেয়।
জানা গেছে, শহিদুল ইসলাম হিরণ তার রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলে যোগ দেন। এক সময় তিনি জাতীয় পার্টি করতেন। এরপর তিনি ১৯৯১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। তারপর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তার ভয়ে এলাকার কেউ টু শব্দ করার সাহস পায়নি। যে কারণে শহিদুল ইসলাম হিরণ ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৯ নম্বর পোড়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, গতকাল সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতসহ সাধারণ মানুষ রাস্তায় অবস্থান গ্রহণ করে। দুপুরের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ। তারা ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। জনতা শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে সেখানে স্বাধীনতা চত্বর লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। তবে গত শুক্রবার দুপুরে থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে বাইরে দেখা যায়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে ছাত্র জনতার ওপর ইউপি চেয়ারম্যানের গুলি, হতাহত ২৫

আ.লীগ নেতার লাশ ঝুলিয়ে রাখলো বিক্ষুদ্ধ জনতা

আপলোড টাইম : ০৫:৪৮:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অগাস্ট ২০২৪

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় পোড়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণ (৭৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঝিনাইদহ শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে ঘরের মধ্যে দগ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। বিক্ষুদ্ধ জনতা তার বাড়িতে প্রবেশ করে লাশ নিয়ে যায় পায়রা চত্বরে। সেখানে তার পোড়া ও উলঙ্গ লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। এর আগে হিরণের বাড়িতে জনতা ঘেরাও করলে শহিদুল ইসলাম হিরণ তার লাইসেন্স করা বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে গুলি চালায়। এতে প্রায় ২৫ জন আহত হন। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় জনতার গণপিটুনিতে হিরণের গাড়িচালক আক্তার হোসেন বিকেলে নিহত হন।
এদিকে বহু আলোচিত-সমালোচিত শহিদুল ইসলাম হিরণ নিহত হওয়ার খবরে হাজার হাজার জনতা তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়রা চত্বরে এসে জমা হয়। শহিদুল ইসলাম হিরণ জাসদ গণবাহিনী দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এরপর সর্বহারা, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও সর্বশেষ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় বহু হত্যা, নির্যাতন ও অপকর্মের অভিযোগ ছিল। একসময় তাকে বাংলাদেশের মিডিয়া ‘ঝিনাইদহের এরশাদ শিকদার’ উপাধি দেয়।
জানা গেছে, শহিদুল ইসলাম হিরণ তার রাজত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলে যোগ দেন। এক সময় তিনি জাতীয় পার্টি করতেন। এরপর তিনি ১৯৯১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। তারপর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তার ভয়ে এলাকার কেউ টু শব্দ করার সাহস পায়নি। যে কারণে শহিদুল ইসলাম হিরণ ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৯ নম্বর পোড়াহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, গতকাল সকাল থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতসহ সাধারণ মানুষ রাস্তায় অবস্থান গ্রহণ করে। দুপুরের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষ। তারা ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। জনতা শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙ্গে সেখানে স্বাধীনতা চত্বর লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। তবে গত শুক্রবার দুপুরে থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে বাইরে দেখা যায়নি।