ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়াতে পরীক্ষামূলকভাবে হচ্ছে কফি চাষ, ধরছে ফুল ও ফল

বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়, চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বেকার যুবকরা

সেলিম রেজা, হাটবোয়ালিয়া:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
  • / ৭৯ বার পড়া হয়েছে


সমতল ভূমিতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রদর্শনী কফি ও চা চাষ প্রকল্পের কাজ শুরু করে সাফল্যের পথে হাঁটছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা নূরুল হুদা ডিউক। আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে তিন বছর পূর্বে তিনি শুরু করেন এ প্রদর্শনী প্রকল্পের কাজ। গ্রামের ৩৩ শতাংশ জমিতে রোপণ করা ৩২০টি অ্যারাবিকা ও লোগোস্কো জাতের কফি গাছগুলোর প্রতিটি শাখায় এখন ফুল ও ফলে ধরতে শুরু করেছে।

জানা গেছে, নিজ গ্রামে নতুন কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে কফি চাষে আগ্রহী হন নূরুল হুদা ডিউক। তিন বছর পূর্বে খাগড়াছড়ি থেকে অ্যারাবিকা ও লোগোস্কো জাতের কফির চারা সংগ্রহ করেন তিনি। রোপণ করেন নিজ গ্রামের ৩৩ শতাংশ জমিতে। প্রথম দুই বছর পরিচর্যা ও অক্লান্ত পরিশ্রম করেও কোনো ফলন পাননি এই কৃষি উদ্যোক্তা। তবে এ বছর প্রথম তার বাগান থেকে ৫ কেজি কফি বীজ সংগ্রহ করেছেন তিনি। নূরুল হুদার বাগানে চা পাতার চাষও করেছেন, তবে চা পাতা সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়নি এখনো। এদিকে, বিভিন্ন সময় গ্রামের লোকজন ভিড় করেন নুরুল হুদার কফি বাগানে। অনেক বেকার যুবক এ কফি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
নূরুল হুদা ডিউক জানান, চারা সংগ্রহ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে তাঁর। যা এখন অবধি চলমান রয়েছে। দুই বছরেও কোনো ফলন না পেলেও আশাহত হননি তিনি। টাকার পাশাপাশি ব্যয় করেছেন নিজের শ্রম। এবছর বেশকিছু গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করলে তিনি আরও আশাবাদী হন।
নুরুল হাদা বলেন, ‘আলমডাঙ্গা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে কফি ও চা চাষ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কফি চাষ হলেও আমাদের দেশে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমিও আগ্রহী হয়ে এক সময় কফি চাষের সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমার বাগানের বেশকিছু গাছে কফি বীজ ধরতে শুরু করেছে, বেশিরভাগ গাছেই ফুল রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কফির গাছ ও কফি দেখতে কেমন তা অনেকের কাছেই অজানা। তাই কফির চাষ হয়েছে, এমন খবরে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন কফি বাগান পরিদর্শনে। আশানুরূপ ফলন এবং সহযোগিতা পেলে এলাকার বেকার যুবকরাও কফি চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবে বলে আমি মনে করি।’
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি অনেক উর্বর। আলমডাঙ্গা উপজেলাতে বিভিন্ন বিদেশী ফলের চাষ করে অনেকেই সফল হয়েছেন। হাটবোয়ালিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে নূরুল হুদা ডিউক কফির বাগান করেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে বেশকিছু গাছে ফল ধরলেও তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি সফল হলে পরবর্তীতে অন্য চাষিদেরকেও কফি চাষে উৎসাহ ও পরামর্শ দেয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়াতে পরীক্ষামূলকভাবে হচ্ছে কফি চাষ, ধরছে ফুল ও ফল

বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়, চাষে আগ্রহী হচ্ছেন বেকার যুবকরা

আপলোড টাইম : ০৯:৪৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪


সমতল ভূমিতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রদর্শনী কফি ও চা চাষ প্রকল্পের কাজ শুরু করে সাফল্যের পথে হাঁটছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা নূরুল হুদা ডিউক। আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে তিন বছর পূর্বে তিনি শুরু করেন এ প্রদর্শনী প্রকল্পের কাজ। গ্রামের ৩৩ শতাংশ জমিতে রোপণ করা ৩২০টি অ্যারাবিকা ও লোগোস্কো জাতের কফি গাছগুলোর প্রতিটি শাখায় এখন ফুল ও ফলে ধরতে শুরু করেছে।

জানা গেছে, নিজ গ্রামে নতুন কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে কফি চাষে আগ্রহী হন নূরুল হুদা ডিউক। তিন বছর পূর্বে খাগড়াছড়ি থেকে অ্যারাবিকা ও লোগোস্কো জাতের কফির চারা সংগ্রহ করেন তিনি। রোপণ করেন নিজ গ্রামের ৩৩ শতাংশ জমিতে। প্রথম দুই বছর পরিচর্যা ও অক্লান্ত পরিশ্রম করেও কোনো ফলন পাননি এই কৃষি উদ্যোক্তা। তবে এ বছর প্রথম তার বাগান থেকে ৫ কেজি কফি বীজ সংগ্রহ করেছেন তিনি। নূরুল হুদার বাগানে চা পাতার চাষও করেছেন, তবে চা পাতা সংগ্রহ করার উপযুক্ত হয়নি এখনো। এদিকে, বিভিন্ন সময় গ্রামের লোকজন ভিড় করেন নুরুল হুদার কফি বাগানে। অনেক বেকার যুবক এ কফি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
নূরুল হুদা ডিউক জানান, চারা সংগ্রহ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে তাঁর। যা এখন অবধি চলমান রয়েছে। দুই বছরেও কোনো ফলন না পেলেও আশাহত হননি তিনি। টাকার পাশাপাশি ব্যয় করেছেন নিজের শ্রম। এবছর বেশকিছু গাছে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করলে তিনি আরও আশাবাদী হন।
নুরুল হাদা বলেন, ‘আলমডাঙ্গা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে কফি ও চা চাষ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কফি চাষ হলেও আমাদের দেশে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমিও আগ্রহী হয়ে এক সময় কফি চাষের সিদ্ধান্ত নিই। এখন আমার বাগানের বেশকিছু গাছে কফি বীজ ধরতে শুরু করেছে, বেশিরভাগ গাছেই ফুল রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কফির গাছ ও কফি দেখতে কেমন তা অনেকের কাছেই অজানা। তাই কফির চাষ হয়েছে, এমন খবরে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন কফি বাগান পরিদর্শনে। আশানুরূপ ফলন এবং সহযোগিতা পেলে এলাকার বেকার যুবকরাও কফি চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবে বলে আমি মনে করি।’
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি অনেক উর্বর। আলমডাঙ্গা উপজেলাতে বিভিন্ন বিদেশী ফলের চাষ করে অনেকেই সফল হয়েছেন। হাটবোয়ালিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে নূরুল হুদা ডিউক কফির বাগান করেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে বেশকিছু গাছে ফল ধরলেও তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি সফল হলে পরবর্তীতে অন্য চাষিদেরকেও কফি চাষে উৎসাহ ও পরামর্শ দেয়া হবে।