ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত, নারীসহ আটক ৭

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / ৬৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে আসামি ধরতে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এসময় কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আহত পুলিশ সদস্যরা জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় নারীসহ ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ নির্যাতনের মামলা হয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে জীবননগর উপজেলার মাধবখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- জীবননগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিন, এএসআই সবুজ হোসেন, কনস্টেবল সোহেল রানা ও আমিরুল ইসলাম। আর আটককৃত আসামিরা হলেন- জীবননগর উপজেলার মাধবখালী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সাগর মিয়া (২৮), একই গ্রামের মৃত হায়দার আলীর ছেলে লিটন হোসেন (৩৮), শাহজাহান খানের স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন (৩৫), আব্দুর রহমানের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৫৫), আবু সিদ্দিকের স্ত্রী নাজমা খাতুন (৫০) ও মেয়ে লুবনা খাতুন (২৩) এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কামারকুন্ডু গ্রামের মণ্টু মিয়ার ছেলে সোহাগ হোসেন (৩২)।

জীবননগর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যমতে জীবননগর থানার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাগর নামের এক যুবককে আটক করা হয়। এসময় সাগর পুলিশের এক সদস্যকে মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় নারীসহ আরও কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে জীবননগর থানার পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চার নারীসহ মোট ৭ জনকে আটক করে।

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুলিশ আসামি আটক করতে গিয়ে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বলেন, ‘আমরা জন খেটে (দিনমজুর) খাই। পুলিশ এসে আমার রান্নাঘর, চুলা ভেঙে দিয়ে গিয়েছে। মারামারি হচ্ছিলো, আমরা দেখতে গিয়েছি, ঠেকাতে গিয়েছি, এটাই আমাদের অপরাধ।’ আরেক নারী বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার ছেলেসহ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পুলিশ এসে আমার ছেলেকে মারধর শুরু করে। আমরা কি অপরাধ করেছি। কী হয়েছে কিছুই তো জানি না।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামির উদ্দিন জানান, ‘সকালে সাগর নামের এক আসামি ধরতে এসে পুলিশের সাথে স্থানীয়দের একটু ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। পুলিশ নারীসহ কয়েকজনকে আটক করেও নিয়ে গিয়েছে। গ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক আছে।’

এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান জানান, একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারের পর বুধবার ভোরে মাধবখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাগর নামের এক আসামিকে আটক করা হয়। এসময় স্থানীয় নারীরা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে করে আমাদের ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪ নারীসহ মোট ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এবং আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ নির্যাতনের মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরে হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত, নারীসহ আটক ৭

আপলোড টাইম : ০৮:২১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে আসামি ধরতে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এসময় কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আহত পুলিশ সদস্যরা জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় নারীসহ ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ নির্যাতনের মামলা হয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে জীবননগর উপজেলার মাধবখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- জীবননগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিন, এএসআই সবুজ হোসেন, কনস্টেবল সোহেল রানা ও আমিরুল ইসলাম। আর আটককৃত আসামিরা হলেন- জীবননগর উপজেলার মাধবখালী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সাগর মিয়া (২৮), একই গ্রামের মৃত হায়দার আলীর ছেলে লিটন হোসেন (৩৮), শাহজাহান খানের স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন (৩৫), আব্দুর রহমানের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৫৫), আবু সিদ্দিকের স্ত্রী নাজমা খাতুন (৫০) ও মেয়ে লুবনা খাতুন (২৩) এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কামারকুন্ডু গ্রামের মণ্টু মিয়ার ছেলে সোহাগ হোসেন (৩২)।

জীবননগর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যমতে জীবননগর থানার মনোহরপুর ইউনিয়নের মাধবখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাগর নামের এক যুবককে আটক করা হয়। এসময় সাগর পুলিশের এক সদস্যকে মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় নারীসহ আরও কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে জীবননগর থানার পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চার নারীসহ মোট ৭ জনকে আটক করে।

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুলিশ আসামি আটক করতে গিয়ে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী বলেন, ‘আমরা জন খেটে (দিনমজুর) খাই। পুলিশ এসে আমার রান্নাঘর, চুলা ভেঙে দিয়ে গিয়েছে। মারামারি হচ্ছিলো, আমরা দেখতে গিয়েছি, ঠেকাতে গিয়েছি, এটাই আমাদের অপরাধ।’ আরেক নারী বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার ছেলেসহ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পুলিশ এসে আমার ছেলেকে মারধর শুরু করে। আমরা কি অপরাধ করেছি। কী হয়েছে কিছুই তো জানি না।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামির উদ্দিন জানান, ‘সকালে সাগর নামের এক আসামি ধরতে এসে পুলিশের সাথে স্থানীয়দের একটু ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। পুলিশ নারীসহ কয়েকজনকে আটক করেও নিয়ে গিয়েছে। গ্রামের বর্তমান পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক আছে।’

এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান জানান, একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারের পর বুধবার ভোরে মাধবখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে সাগর নামের এক আসামিকে আটক করা হয়। এসময় স্থানীয় নারীরা লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে করে আমাদের ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪ নারীসহ মোট ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এবং আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ নির্যাতনের মামলা হয়েছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে।