চুয়াডাঙ্গার তালতলায় ছাত্রীদের সাথে শিক্ষকের অশ্লীল আচরণের অভিযোগ
অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে দেয়া হয় ফেল করিয়ে
- আপলোড টাইম : ০৯:২০:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪
- / ১২১ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তার আলীর (৪৮) বিরুদ্ধে অশ্লীল আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তিনি শ্রেণিকক্ষেই ছাত্রীদের গায়ে হাত দিতেন। এছাড়া একাকী পেলে ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা। গত রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির একাধিক ছাত্রীর অভিভাবক এমন অভিযোগ করেন।
অভিভাবকেরা অভিযোগে তুলে বলেন, স্কুল চলাকালীন সময় শ্রেণিকক্ষের ভেতরে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের সাথে এসব অশ্লীল আচরণ করেন তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তার আলী। বেশকিছু দিন ধরে ছাত্রীরা এমন লালসার শিকার হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিভাবকরা বলেন, ‘শিক্ষক মুক্তারের ফাঁদে পড়ে অনেক ছাত্রীই তার সাথে ঘনিষ্ঠ হতে বাধ্য হয়। যারা তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়, তাদের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের উত্তর দিয়ে পাশ করিয়ে দেয় এই শিক্ষক মুক্তার আলী। আর তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলে, সে সব ছাত্রীদের ফেল করিয়ে দেয়। এবং কারণে-অকারণে মারধর করে ক্লাস থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনায় অনেক শিক্ষার্থী বিষয়টি তার পরিবারে জানালে, অভিভাবকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানায়, ‘মুক্তার স্যার আমাদের সাথে অনেক খারাপ আচরণ করে। তিনি ক্লাসের মধ্যেই বিভিন্নভাবে গায়ে হাত দিতেন। ভাবতাম এটা তেমন কিছু না, কারণ শিক্ষক তো বাবার মতো। কিন্তু তিনি প্রতিদিনই আমাদের গায়ে, গালে, বুকে, পেটে হাত দিতেন। বলতেন আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে তোমার ভালো হবে, ভালো রেজাল্ট করতে পারবে। ভয়ে মুখ খুলতাম না। তবে আর এই অপকর্ম সহ্য করতে না পেরে, আমি আমার পরিবারকে জানায়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক বাবা-মা এবং সন্তানের সম্পর্কের মতো। যে শিক্ষক এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাকে আসলে শিক্ষক হিসেবে আমরা বলতেও লজ্জা পাই। একজন শিক্ষকের এমন আচরণ হওয়াটা একদমই আশা করা যায় না। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।’
অভিযোগের বিষয়ে তালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুক্তার আলীর বক্তব্য নিতে তার অফিসে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করতেও পারেননি তিনি। তবে এ বিষয় নিয়ে তিনি প্রধান শিক্ষককে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে জরুরিভাবে যোগাযোগ করার জন্য বলেছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল কুমার শর্মা বলেন, ‘আমি স্কুলে আসার পরে জানতে পারলাম যে মুক্তার আলী নামের আমার স্কুলের সহকারী শিক্ষক প্রতিনিয়ত নাকি পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নিতে গিয়ে শ্রেণিকক্ষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল আচরণ করেন। এ বিষয়ে আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবো। তিনি যদি অপরাধী হয়ে থাকেন, তাহলে সঠিক তদন্তের ভিত্তিকে তাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগের জন্য ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।