মৃত সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ, সিআইডির তদন্ত দল দেখে
ফের দৌঁড়ে পালালেন মাদ্রাসার সুপারসহ ৮ শিক্ষক!
- আপলোড টাইম : ১১:৩৮:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
- / ৮৩ বার পড়া হয়েছে
আবারো দৌঁড়ে পালালেন সুপারসহ ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুু উপজেলার পারফলসি মাদ্রাসার ৮ শিক্ষক। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়ে দুর্নীতির অনুসন্ধানে যান ঝিনাইদহ সিআইডির একটি তদন্ত দল। সিআইডির তদন্ত দল দেখামাত্রই মাদ্রাসা সুপার ইয়ারুল হক দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যান। এরপর পরই একে একে পালান আরও ৭ শিক্ষক। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঝিনাইদহ সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান এ খবর নিশ্চিত করে জানান, মৃত সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ওই মাদ্রাসায় ১২ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হলে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নামে সিআইডি। একাধিকবার ওই মাদ্রাসায় গিয়েও সুপার ইয়ারুল হকের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়। তবে তিনি সহযোগিতা করেননি। তিনি শিক্ষক নিয়োগের কাগজপত্র দেননি। বরং যতবার সিআইডির তদন্ত দল মাদ্রাসায় গিয়েছে, ততবারই সুপারসহ শিক্ষকরা পালিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কনক মন্ডল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির তদন্ত দল মাদ্রাসায় আসলে ৩-৪ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত দল আসার খবর পেয়ে সুপার ইয়ারুল হক আগেই পালিয়ে যান। এরপর একে একে শিক্ষক বাবু হোসেন, রুহুল আমনি, মঞ্জুরা খাতুন, মসলেম উদ্দীন, সাইফুর রহমান, খায়রুল ইসলাম ও আবু সালেহ পালিয়ে যান।
সিআইডি কর্মকর্তা আরও জানান, বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিতে এনে নতুন করে আদেশ চাওয়া হবে। এছাড়া সুপারসহ শিক্ষকদের চিঠি দিয়ে নিয়োগের কাগজপত্র হাজির করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারীকে বলা হয়েছে। মাদ্রাসার সভাপতি হরিণাকুণ্ডুু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার হোসেন ও হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি জিয়াউর রহমানকে অবহিত করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে হরিণাকুণ্ডুু উপজেলার পারফলসি গ্রামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০২২ সালের ৬ জুলাই মাদ্রাসাটি রাতারাতি এমপিওভুক্ত হলে বর্তমান ইয়ারুল হক হঠাৎ আবির্ভূত হন সুপার হিসেবে। এরপর দাবি করে বসেন প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খলিলুর রহমান তাদের নিয়োগ দিয়ে গেছেন। এ নিয়ে এলাকায় শোরগোল শুরু হলে মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে কনক মন্ডল মামলা করে বসেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি এখন সিআইডি তদন্ত করছে।
মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দপ্তরি হিসেবে দায়িত্ব পালনরত মনজের আলী জানান, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল এই ১০ বছর পর্যন্ত বর্তমান সুপার ইয়ারুল হক ছিলেন না। এমপিওভুক্ত হওয়ার পর তিনি রাতারাতি উড়ে এসে জুড়ে বসেন। এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার সুপার ইয়ারুল হক দৌঁড় দিয়ে পালানোর বিষয়টি এড়িয়ে যান। ভুয়া নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, কোথায় কবে নিয়োগ বোর্ড বসেছিল, তা তার এখন মনে নেই। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী জানান, সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবারের ঘটনাটি তাকে অবহিত করেছেন। সিআইডির চিঠি পেলে সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।