আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে টানা এক সপ্তাহ ধরে বলাৎকার
অভিযুক্ত শিক্ষককে গণধোলাই, থানায় মামলা
- আপলোড টাইম : ০৮:০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪
- / ২০৬ বার পড়া হয়েছে
আলমডাঙ্গায় মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রকে টানা ৭ দিন বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ জুন পর্যন্ত জেহালা বাজারের আজিলুল উলুম কওমি মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে ঘটনাটি ঘটলেও গতকাল শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারসহ স্থানীয়রা ওই মাদ্রাসা শিক্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুস সালাম (৩২) উপজেলার গাংনী ইউনিয়নের অনুপনগর গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। বলাৎকারের শিকার ছাত্র উপজেলার সনাতনপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র। মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলামের দেওয়া তথ্য মতে, ভুক্তভোগী শিশুটি গত এক বছর ধরে ওই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে এবং আব্দুস সালাম ৭ মাস ধরে শিক্ষকতা করছেন।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রের পিতা বলেন, ছুটি শেষ হলেও ছেলেটি কোনো মতেই মাদ্রাসায় যেতে রাজি হচ্ছিল না। বকাঝকা করলে সে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, তার হুজুর খারাপ কাজ করে এবং কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলবে। এরপর তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে সুপারের সাথে কথা বলেন এবং ঘটনা প্রকাশ পায়।
ভুক্তভোগী শিশু জানায়, প্রথম দিন ঘুমানোর সময় হুজুর তাকে ঘর থেকে বাইরে নিয়ে যায় এবং খারাপ কাজ করে। এরপর প্রতিদিন রাতে একই কাজ করত। ভয়ে কাউকে বলতে পারেনি। সুপারও তাকে এসব কথা কাউকে না বলতে নিষেধ করেন।
শিশুটির স্বজন সাহাবুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার সুপার ঘটনাটি চেপে যেতে বলেন এবং জানালে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেবেন বলে হুমকি দেন। কিন্তু তারা স্থানীয় লোকজন ও পুলিশকে জানান।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলাম প্রথমে কিছু জানেন না বলে দাবি করলেও পরে বলেন, তিনি ঘটনা ঘটার দিনই জেনেছেন কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সুনামের জন্য ঘটনাটি লুকিয়েছেন। মাদ্রাসার সভাপতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি একটি নাম্বার দেন। পরে ওই নাম্বারে কল দিয়ে জানা যায়, সভাপতি হিসেবে তার জামাই মাওলানা আব্দুস সোবাহানের নাম ব্যবহার করছেন মাদ্রাসার সুপার। মাওলানা আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমি মাদ্রাসার সভাপতি নই এবং এই ঘটনার কঠিন শাস্তি চাই।’
স্থানীয় আব্দুল আজিজ ও মাসুম হোসেন নামের দুই ব্যক্তি জানান, সুপার রফিকুল ইসলাম ইচ্ছামতো মাদ্রাসা চালান এবং এর আগেও ওই শিক্ষক আব্দুস সালাম চুয়াডাঙ্গার একটি মাদ্রাসায় একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে জেহালা ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেচুর রহমান শিলন বলেন, ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। এর কঠিন বিচার হওয়া দরকার। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া বলেন, ঘটনাস্থলে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে এবং ওই মাদ্রাসা শিক্ষককে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।