ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দর্শনার বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নামে আদালতে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪
  • / ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

দর্শনার বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের একজন দাতা সদস্য ও একজন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য দামুড়হুদা সহকারী জজ আদালতে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নামে মামলা ও চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক বরাবর অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। একই সাথে আদালতে আবেদন করা হয়েছে নিয়োগ কার্যক্রমটি স্থগিত করার জন্য। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। তবে একে অপরের কথা না মিললেও বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দাবি, নিয়োগ কার্যক্রম সঠিক নিয়মেই পরিচালিত হচ্ছে।

জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ২৪ মার্চ ও ৪ এপ্রিল নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় একটি স্থানীয় দৈনিকে। তবে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকে বেআইনি, অবৈধ ও যোগসাজস দাবি করেছেন ওই বিদ্যালয়েরই দাতা সদস্য ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বরকত আলী ও নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য রবিউল ইসলাম। তারা বাদী হয়ে দামুড়হুদার সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।

মামলার এজাহার ও জেলা প্রশাসক বরাবর দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী পদ শূন্য ছিল। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী এবং বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তক্কেল আলী অনুগত লোকজনের সহায়তায় নিজেদের পছন্দমত ব্যক্তিকে শূন্য পদে নিয়োগ দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য বরকত আলী ও রবিউল ইসলামকে কিছুই জানাননি। নোটিশ না দিয়ে তাদের অজ্ঞাতে ১৭ মার্চ তারিখে পরিচালনা পরিষদের সভা দেখিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অভিযোগ ও মামলায় আরও বলা হয়েছে, লাভবান হওয়ার কু-মতলবে তাদের পছন্দমত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য আগামী ৭ জুন শনিবার নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

দামুড়হুদা বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তক্কেল আলী বলেন, ‘তাদেরকে সব কিছু বলা হয়েছে। তারা নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। আমার জানামতে, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আর পছন্দমত কোনো ব্যক্তিও নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক পদে কেউ আসতে চাচ্ছেন না। একজনকে বলা হয়েছিল, তিনিও ভালো স্কুলে আছেন। ছেড়ে আসতে চাচ্ছেন না। তাই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। সহকারী প্রধান শিক্ষকে ৮ জন ও নৈশপ্রহরী পদে ৩ জন আবেদন করেছেন।’

বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। নিয়োগে ডিসির প্রতিনিধি আসবে, নিজের ইচ্ছামতো কি প্রার্থী দিতে পারে। নিয়োগ সঠিক নিয়মে হচ্ছে।’ তিনি পরিচালনা পরিষদের দুইজন সদস্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওনারা মিটিংয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সই-স্বাক্ষর করেননি। একটা কাজে কারো পছন্দ নাও হতে। যারা স্বাক্ষর করেননি, তাদেরকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে।’

বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বরকত আলী বলেন, ‘আমি এই স্কুলের দাতা সদস্য। এই স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। আমাকে ও বিদ্যালয়ের একজন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যকে কিছু না জানিয়ে তারা নিয়োগ দিচ্ছে। এর আগেও তিনটি নিয়োগে তারা অনিয়ম করেছে। এই নিয়োগেও তারা অর্থবাণিজ্য ও পছন্দমত প্রার্থী দিতে চায়। আমরা আদালতে একটি মামলা করেছি। জেলা প্রশাসক বরাবরেও অভিযোগ দিয়েছি। এছাড়া আমরা বিজ্ঞ আদালতে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছি। বৃহস্পতিবার আদালত শুনানির তারিখ দিয়েছেন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

দর্শনার বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নামে আদালতে মামলা

আপলোড টাইম : ০৭:৫৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

দর্শনার বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের একজন দাতা সদস্য ও একজন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য দামুড়হুদা সহকারী জজ আদালতে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নামে মামলা ও চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক বরাবর অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। একই সাথে আদালতে আবেদন করা হয়েছে নিয়োগ কার্যক্রমটি স্থগিত করার জন্য। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। তবে একে অপরের কথা না মিললেও বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দাবি, নিয়োগ কার্যক্রম সঠিক নিয়মেই পরিচালিত হচ্ছে।

জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ২৪ মার্চ ও ৪ এপ্রিল নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় একটি স্থানীয় দৈনিকে। তবে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশকে বেআইনি, অবৈধ ও যোগসাজস দাবি করেছেন ওই বিদ্যালয়েরই দাতা সদস্য ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বরকত আলী ও নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য রবিউল ইসলাম। তারা বাদী হয়ে দামুড়হুদার সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।

মামলার এজাহার ও জেলা প্রশাসক বরাবর দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশপ্রহরী পদ শূন্য ছিল। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী এবং বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তক্কেল আলী অনুগত লোকজনের সহায়তায় নিজেদের পছন্দমত ব্যক্তিকে শূন্য পদে নিয়োগ দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালনা কমিটির দুই সদস্য বরকত আলী ও রবিউল ইসলামকে কিছুই জানাননি। নোটিশ না দিয়ে তাদের অজ্ঞাতে ১৭ মার্চ তারিখে পরিচালনা পরিষদের সভা দেখিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অভিযোগ ও মামলায় আরও বলা হয়েছে, লাভবান হওয়ার কু-মতলবে তাদের পছন্দমত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য আগামী ৭ জুন শনিবার নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য করা হয়েছে।

দামুড়হুদা বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তক্কেল আলী বলেন, ‘তাদেরকে সব কিছু বলা হয়েছে। তারা নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। আমার জানামতে, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আর পছন্দমত কোনো ব্যক্তিও নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক পদে কেউ আসতে চাচ্ছেন না। একজনকে বলা হয়েছিল, তিনিও ভালো স্কুলে আছেন। ছেড়ে আসতে চাচ্ছেন না। তাই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। সহকারী প্রধান শিক্ষকে ৮ জন ও নৈশপ্রহরী পদে ৩ জন আবেদন করেছেন।’

বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। নিয়োগে ডিসির প্রতিনিধি আসবে, নিজের ইচ্ছামতো কি প্রার্থী দিতে পারে। নিয়োগ সঠিক নিয়মে হচ্ছে।’ তিনি পরিচালনা পরিষদের দুইজন সদস্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওনারা মিটিংয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সই-স্বাক্ষর করেননি। একটা কাজে কারো পছন্দ নাও হতে। যারা স্বাক্ষর করেননি, তাদেরকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে।’

বড় বলদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বরকত আলী বলেন, ‘আমি এই স্কুলের দাতা সদস্য। এই স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। আমাকে ও বিদ্যালয়ের একজন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যকে কিছু না জানিয়ে তারা নিয়োগ দিচ্ছে। এর আগেও তিনটি নিয়োগে তারা অনিয়ম করেছে। এই নিয়োগেও তারা অর্থবাণিজ্য ও পছন্দমত প্রার্থী দিতে চায়। আমরা আদালতে একটি মামলা করেছি। জেলা প্রশাসক বরাবরেও অভিযোগ দিয়েছি। এছাড়া আমরা বিজ্ঞ আদালতে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছি। বৃহস্পতিবার আদালত শুনানির তারিখ দিয়েছেন।’