ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে সিও এনজিওর নির্যাতিত কর্মীদের মানববন্ধন

প্রশাসনিক প্রতিকার না পেলে আত্মহুতির হুমকি

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১০:১৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
  • / ৭৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের সোসিও ইকোনোমিক হেলথ এডুকেশন অর্গানাইজেশন (সিও) এনজিও’র বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন নির্যাতিত কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। অফিসে আটকে নির্যাতন ও মিথ্যা চেকের মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম, খুলনার মাসুদা পারভিন, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার লক্ষ্মীনগর গ্রামের আজিজুল আলম, শৈলকুপার সাবিনা ইয়াসমিন ও গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি শেষে তারা ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদ জানান, তিনি সিও এনজিওতে চাকরি করেছেন সততার সঙ্গে। কোনো আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন না। সিও সংস্থার হিসাব-নিকাশ বা খাতা কলমে তিনি দায়ী নয়। অথচ চাকরি গ্রহণের সময় তাদের কাছে জমা রাখা খোলা চেকে ২৯ লাখ টাকা বসিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। এই মামলা চালাতে গিয়ে তিনি দেওলিয়া। সংসারও ভেঙ্গেছে। মিথ্যা মামলায় একাধিকবার জেল খেটেছেন। তিনি বলেন, প্রশাসনিক প্রতিকার না পেলে আমরা সবাই স্বেচ্ছায় আত্মহুতি কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

শৈলকুপার চণ্ডিপুর গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন জানান, তিনি সিও এনজিওতে ১২ বছর হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করেছেন। তিনি চাকরি ছেড়ে দিলে তার নামেও ১৯ লাখ টাকার চেকের মামলা করেছেন। তিনি বলেন, একই অংকের টাকা আত্মসাতের দায়ে তার স্বামী ফারুক ও সিও এনজিওর আরেক কর্মী তানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সিও এনজিও’র মালিক সামুছলের প্রধান ব্যবসা খোলা চেকের মামলা। তিনি বলেন, তার কাছে জমা রাখা কর্মীদের খোলা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে গত বছর আড়াই’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সিও এনজি’ওর এই রমরমা ব্যবসায় শতশত কর্মী ও ঋণ গ্রহীতা পথে বসেছেন।

খুলনার মাসুদা পারভিন জানান, তিনি চাকরি ছাড়ার পরও তার মূল সার্টিফিকেট সিও অফিস আটকে রেখেছে। আবার খোলা চেকের মামলা দিয়েছে তিনটি। শুধু তিনিই নয়, যশোরের রবিউল, কুষ্টিয়ার শওকত আলী, একই জেলার গৌরাঙ্গ কুমার, কালীগঞ্জের আশিক, পাবনার সুবর্ণা খাতুন, সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম, শৈলকুপার মাহমুদ ও মহেশপুরের রুপা খাতুনসহ সহস্রাধিক ব্যক্তির নামে এই এনজিও মিথ্যা চেকের মামলা করে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে সিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলম জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। আমি কারো কাছ থেকে খোলা চেক গ্রহণ করি না।’ তিনি বলেন, যারা কর্মসূচি পালন করছেন, তারা সবাই অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিষয়টি সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে সিও এনজিওর নির্যাতিত কর্মীদের মানববন্ধন

প্রশাসনিক প্রতিকার না পেলে আত্মহুতির হুমকি

আপলোড টাইম : ১০:১৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪

ঝিনাইদহের সোসিও ইকোনোমিক হেলথ এডুকেশন অর্গানাইজেশন (সিও) এনজিও’র বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন নির্যাতিত কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। অফিসে আটকে নির্যাতন ও মিথ্যা চেকের মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম, খুলনার মাসুদা পারভিন, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার লক্ষ্মীনগর গ্রামের আজিজুল আলম, শৈলকুপার সাবিনা ইয়াসমিন ও গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি শেষে তারা ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

গাইবান্ধার সুই গ্রামের এবিএম মাহবুবুর রশিদ জানান, তিনি সিও এনজিওতে চাকরি করেছেন সততার সঙ্গে। কোনো আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন না। সিও সংস্থার হিসাব-নিকাশ বা খাতা কলমে তিনি দায়ী নয়। অথচ চাকরি গ্রহণের সময় তাদের কাছে জমা রাখা খোলা চেকে ২৯ লাখ টাকা বসিয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। এই মামলা চালাতে গিয়ে তিনি দেওলিয়া। সংসারও ভেঙ্গেছে। মিথ্যা মামলায় একাধিকবার জেল খেটেছেন। তিনি বলেন, প্রশাসনিক প্রতিকার না পেলে আমরা সবাই স্বেচ্ছায় আত্মহুতি কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

শৈলকুপার চণ্ডিপুর গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিন জানান, তিনি সিও এনজিওতে ১২ বছর হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করেছেন। তিনি চাকরি ছেড়ে দিলে তার নামেও ১৯ লাখ টাকার চেকের মামলা করেছেন। তিনি বলেন, একই অংকের টাকা আত্মসাতের দায়ে তার স্বামী ফারুক ও সিও এনজিওর আরেক কর্মী তানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

মেহেরপুরের আমদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সিও এনজিও’র মালিক সামুছলের প্রধান ব্যবসা খোলা চেকের মামলা। তিনি বলেন, তার কাছে জমা রাখা কর্মীদের খোলা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অঙ্ক বসিয়ে গত বছর আড়াই’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সিও এনজি’ওর এই রমরমা ব্যবসায় শতশত কর্মী ও ঋণ গ্রহীতা পথে বসেছেন।

খুলনার মাসুদা পারভিন জানান, তিনি চাকরি ছাড়ার পরও তার মূল সার্টিফিকেট সিও অফিস আটকে রেখেছে। আবার খোলা চেকের মামলা দিয়েছে তিনটি। শুধু তিনিই নয়, যশোরের রবিউল, কুষ্টিয়ার শওকত আলী, একই জেলার গৌরাঙ্গ কুমার, কালীগঞ্জের আশিক, পাবনার সুবর্ণা খাতুন, সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম, শৈলকুপার মাহমুদ ও মহেশপুরের রুপা খাতুনসহ সহস্রাধিক ব্যক্তির নামে এই এনজিও মিথ্যা চেকের মামলা করে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে সিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সামছুল আলম জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। আমি কারো কাছ থেকে খোলা চেক গ্রহণ করি না।’ তিনি বলেন, যারা কর্মসূচি পালন করছেন, তারা সবাই অর্থ আত্মসাৎ মামলার আসামি। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিষয়টি সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হবে।