ভোটের মাঠে জনসংযোগে ব্যস্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরা
তফসিল ঘোষণা : দামুড়হুদা-জীবননগরসহ ১৫২টি উপজেলায় ভোট ৮ মে
বেড়েছে জামানতের পরিমাণ, প্রার্থীরা ছাপাতে পারবেন রঙিন পোস্টার-ব্যানার
- আপলোড টাইম : ১০:০৬:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
- / ১৩১ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা, জীবননগরসহ দেশের ১৫২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ১৫ এপ্রিল এবং ভোটগ্রহণ আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অশোক কুমার দেবনাথ জানান, আগামী ৮, ২৩, ২৯ মে ও ৫ জুন চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। জামানতের টাকা বাড়িয়ে ও স্বতন্ত্রদের প্রার্থিতা সহজের পর এ নির্বাচন হচ্ছে। এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের এ সাধারণ নির্বাচন হবে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ভোট হবে ৮ মে। তিনি বলেন, ইভিএমে ভোট হবে ২২টি উপজেলায় এবং বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে নির্বাচন হবে। দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদের এ নির্বাচন হবে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থিতাও রয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার আগে থেকেই দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার ভোটের মাঠে জনসংযোগ ও সভা-সমাবেশ অব্যহত রেখেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। জীবননগর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মাঠে রয়েছেন জীবননগর উপজেলা পরিষদের বর্তমানে চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান ও বিশিষ্ট সাংবাদিক এস কে লিটন। এছাড়া গুঞ্জন রয়েছে বিএনপি নেতা ময়েন উদ্দিন ময়েন ও জীবননগর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাজেদুর রহমান প্রার্থী হতে পারেন।
সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, সাংবাদিক কাজী শামসুর রহমান চঞ্চল, আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান মাস্টার ও জীবননগর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে রয়েছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেতা রেনুকা আক্তার।
এদের মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় বেশ আগে থেকেই জনসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন মাইটিভির সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার এস কে লিটন। দিনরাত এক করে ভোটের মাঠে বেশ ভালো অবস্থান তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমানও পিছিয়ে নেই। তিনিও নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। পুনরায় চেয়ার দখল রাখতে তিনি সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর বিএনপি ও জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাঝেও উপজেলা বিএনপি নেতা ময়েন উদ্দিন ময়েন ও উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা সাজেদুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে।
অপর দিকে, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান পদে লড়তে মাঠে রয়েছেন দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলী মুনসুর বাবু। এছাড়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি শহিদুল ইসলাম এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুর রহমান প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী এবং দামুড়হুদা উপজেলা জামায়াতের আমির মো. নায়েব আলী। তবে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এখনো কারো নাম শোনা যায়নি। এর বাইরেও অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে সংশোধিত নির্বাচন পরিচালনা বিধি ও আচরণ বিধি অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনো সমর্থন সূচক তালিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, রঙিন পোস্টার ছাপাতে পারবেন প্রার্থীরা। প্রচারণার সময়ও পাচ্ছে বেশি; তবে জামানতের পরিমাণ বেড়েছে এবার। এর আগে, ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন ছয়টি ধাপে ও ২০১৯ সালে পাঁচ ধাপে পঞ্চম উপজেলা পরিষদের ভোট হয়। আগের চারটি উপজেলা নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হলেও আইন সংশোধন হওয়ায় ২০১৭ সালের মার্চে মেয়াদোত্তীর্ণ তিনটি উপজেলায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়েছিল। পরে ২০১৯ সালে দলীয় প্রতীকে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন হয়।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি পরে নির্দলীয় উপজেলা ভোটে অংশ নিয়েছিল। গেল ১০ বছর ধরে উপজেলা ভোটে দলীয় প্রার্থী দেয়নি দলটি। দলীয় প্রতীকে ভোট হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না। আর বিএনপি অংশ নিচ্ছে না এ নির্বাচনে।