চুয়াডাঙ্গায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে উপচে পড়া ভিড়, দাম বেশির অভিযোগ
শুরু হলো আত্মশুদ্ধির মাস, প্রথম তারাবিতে মুসল্লিদের ঢল
- আপলোড টাইম : ১০:২৭:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪
- / ২৮৭ বার পড়া হয়েছে
দেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে। ফলে আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে শুরু হয়েছে রোজা। মুসলিম উম্মাহর কাছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অমিয় বার্তা নিয়ে আসা মাহে রমজানের আনুষ্ঠানিকতা তারাবি নামাজের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে। প্রথম তারাবিকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা কোর্ট জামে মসজিদ, বড় বাজার মসজিদ, জান্নাতুল মাওলা কবরস্থান মসজিদসহ পাড়া-মহল্লার মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। কোনো কোনো মসজিদের আঙিনা ছাড়িয়ে রাস্তায় জায়নামাজ, চাদর ও পাটি বিছিয়ে পাঞ্জাবি-পাজামা পরা মুসল্লিদের তারাবির নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
গতকাল সোমবার বাদ এশা মসজিদে মসজিদে তারাবির নামাজের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে এ আনুষ্ঠানিকতা। সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন মসজিদে তারাবির নামাজ আদায়ে মুসল্লিদের ভিড় বাড়তে থাকে। কোথাও কোথাও দলবেঁধে, কোথাও পরিবারের সদস্যরা একসাথে তারাবিহ নামাজ আদায়ে মসজিদে আসেন। সব মসজিদই অল্প সময়ে পূর্ণ হয়ে যায়। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ ও বাংলাদেশের জন্য দোয়া করেন ইমামরা।
প্রতি বছরের মতো এবারো রমজান মাসে মসজিদে খতমে তারাবি পড়ানোর বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। নির্দেশনা অনুযায়ী, তারাবির নামাজে প্রথম ৬ রমজানে কুরআন শরীফের দেড় পারা এবং পরবর্তী ২১ দিন এক পারা করে পাঠ করতে হবে। সারা দেশের মুসল্লি, ইমাম-খতিব ও মসজিদ কমিটিকে একই পদ্ধতিতে তারাবি নামাজ আদায় করতে আহ্বান জানিয়েছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দ্বীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ।
এদিকে, ঊর্ধ্বমুখী বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি হলেও রমজানের কেনাকাটায় ভিড় ছিল বিভিন্ন কাঁচা বাজার, মুদি ও ফলের দোকানগুলোতে। এছাড়াও টুপি, তসবি ও সুগন্ধি আতর বিক্রি করতেও ভিড় ঠেলতে হয়েছে বিক্রেতাদের। গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজারসহ বিভিন্ন মুদি দোকান ও প্রসাধনীর দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোজার আগের দিন সেহেরি ও ইফতারের জন্য চাহিদা ও সরবরাহ বেড়েছে সব ধরণের খাদ্য পণ্যের। যথেষ্ট সরবরাহ থাকলেও সবকিছুর দাম বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তবে দোকানিরা দাবি করছেন, কোনো কিছুই সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে বিক্রির সুযোগ নেই তাদের। আর কোনো পণ্যের দামই খুব একটা বাড়েনি। এদিকে, মসজিদের সামনে ও বিভিন্ন সড়কের পাশে টুপি, আতর ও তসবিসহ মুসলিমদের ধর্মের আলোকে ও ইবাদতের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরণের ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা বলেছেন, এসকল পণ্যের জন্য তুলনামূলক বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে।
শহরের বড় বাজারের একটি মুদি দোকানে চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করছিলেন জাফর আলী। তিনি বলেন, সবকিছুর দামই বৃদ্ধি পেয়েছে। গত রোজার জন্য যে বাজেট করেছিলেন, এবার তার থেকে বেশি বাজেট করেও সবকিছু পরিমাণ মতো কিনতে পারছেন না। বাজারে বেশ কয়েক পদের মৌসুমি ও আগাম কিছু ফল মিললেও সবকিছুর দাম বেশি। তিনি বলেন, রোজাকে সামনে রেখে বাজারে ফলসহ সবকিছুর সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
আরেক ক্রেতা ইবাদত ইসলাম। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে রমজান এলে বিক্রেতারা পণ্যে ছাড় দেয়। অথচ আমাদের দেশে রমজান এলে সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। কোম্পানির চাকরি করে যে কয় টাকা বেতন পায়, তা দিয়ে সংসার খরচেই শেষ হয়। ইফতারের জন্য কিছু ফল কিনতে এসেছিলাম, কিন্তু মৌসুমী সব ফলের দামই বেশি। অন্য যে কোনো সময়ে একটি তরমুজ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও আজ ১০০ টাকা দাম বলেও তা কিনতে পারিনি।