ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অস্থির পেঁয়াজের বাজার; কার্যকর উদ্যোগ নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৪:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৯৬ বার পড়া হয়েছে

আবার অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। সপ্তাহজুড়ে বাজারে নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা থাকলেও গত রোববার থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
কিছুদিন আগে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে অস্থির হয়েছিল পেঁয়াজের বাজার। একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল কেজিতে ৯০ টাকা। তখন ৯০ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৮০ টাকা কেজি দরে। বাজারে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমে। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। এ অবস্থায় ক্রেতাদের দাবি- যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি সাধারণ ক্রেতাদের।
মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভারত যে প্রথম নিয়েছে তা নয়। এর আগেও ভারত একাধিকবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছিল। তখন এ দেশের বাজার সিন্ডিকেট একই কাজ করেছিল। মূলত তাদের কাজ হচ্ছে জনগণের পকেট কাটা। বর্তমান সরকার অবশ্য রমজান শুরুর আগেই পেঁয়াজ রপ্তানির ব্যাপারে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছে।
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। বিপাকে পড়তে হবে না ক্রেতাদের। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। অন্যদিকে, প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়।
এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, ভারতে বছরে দুইবার পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। একবার শীতকালে আর একবার গ্রীষ্মকালে। বাংলাদেশে শীতকালেই অধিকাংশ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে তেমন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় না বললেই চলে। যদিও গ্রীষ্মকালে চাষ করার মতো উন্নতজাতের বারি পেঁয়াজ-২ ও বারি পেঁয়াজ-৫ নামের দুটি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে মসলা গবেষণা কেন্দ্র। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি।
আমরা মনে করি, পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকেই বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক ঘটনা। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

অস্থির পেঁয়াজের বাজার; কার্যকর উদ্যোগ নিন

আপলোড টাইম : ০৯:১৪:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪

আবার অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। সপ্তাহজুড়ে বাজারে নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা থাকলেও গত রোববার থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
কিছুদিন আগে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে অস্থির হয়েছিল পেঁয়াজের বাজার। একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল কেজিতে ৯০ টাকা। তখন ৯০ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৮০ টাকা কেজি দরে। বাজারে নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমে। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। এ অবস্থায় ক্রেতাদের দাবি- যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি সাধারণ ক্রেতাদের।
মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভারত যে প্রথম নিয়েছে তা নয়। এর আগেও ভারত একাধিকবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছিল। তখন এ দেশের বাজার সিন্ডিকেট একই কাজ করেছিল। মূলত তাদের কাজ হচ্ছে জনগণের পকেট কাটা। বর্তমান সরকার অবশ্য রমজান শুরুর আগেই পেঁয়াজ রপ্তানির ব্যাপারে ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছে।
মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। বিপাকে পড়তে হবে না ক্রেতাদের। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। অন্যদিকে, প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়।
এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, ভারতে বছরে দুইবার পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। একবার শীতকালে আর একবার গ্রীষ্মকালে। বাংলাদেশে শীতকালেই অধিকাংশ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে তেমন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় না বললেই চলে। যদিও গ্রীষ্মকালে চাষ করার মতো উন্নতজাতের বারি পেঁয়াজ-২ ও বারি পেঁয়াজ-৫ নামের দুটি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে মসলা গবেষণা কেন্দ্র। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি।
আমরা মনে করি, পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকেই বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক ঘটনা। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে।