ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৭ ডিগ্রিতে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, সীমাহীন দুর্ভোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা যেন কমছেই না। জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। প্রতিদিনই ওঠানামা করছে তাপমাত্রার পারদ। গতকাল রোববার সকাল নয়টায় এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যা নামলেই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। হাড় কাপানো শীত ও হালকা কুয়াশার সাথে হিমশীতল বাতাসে মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। টানা শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মে ঘটছে ছন্দপতন।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। কৃষিজমিতে কাজ করা শ্রমিকরা এবং যানবাহন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। কনকনে ঠাণ্ডায় বন্ধ রয়েছে জেলার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর থেকে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। কমতে থাকে তাপমাত্রা। এরপর ২৩ জানুয়ারি তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত বুধবার বিকেলে জেলার বিভিন্ন স্থানে আবারও ছিটেফোঁটা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিন বিরতি দিয়ে শুক্রবার আবারও শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন শনিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে মানুষ সাধারণ কাজকর্ম করতে পারছে না। রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু পরপর হোটেল কিংবা চায়ের দোকানে চুলার কাছে গিয়ে হাত গরম করে নিচ্ছেন। অনেকেই আবার খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশা চালক আলী হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের পরিবহন করে কিছু আয়-রোজগার হয়। কিন্তু শীতের কারণে মানুষ খুব একটা বাইরে বের না হওয়ায় আয়-রোজগার নেই বললেই চলে।’
দামুড়হুদার একটি ইটভাটায় জামাল উদ্দিন নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের ওতো শীত নেই। পেট ভাত জুটাতে হলো কাজ করতে হবে। তাই ভোর চারটায় এসেছি ইটভাটায়।’
আদি বাগাট নামের একটি হোটেলের মালিক নিরঞ্জন শিকদার বলেন, অন্যান্য সময় সকালে তাঁর দোকানে সকালে নাশতা খাওয়ার জন্য রীতিমতো ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু এই শীতে তার হোটেলে মানুষজন খুব-একটা আসছেন না। ফলে নাশতা বিক্রি কমেছে তাঁর।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রোববার সকাল ছয়টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। আর সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

৭ ডিগ্রিতে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, সীমাহীন দুর্ভোগ

আপলোড টাইম : ১০:৩২:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা যেন কমছেই না। জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। প্রতিদিনই ওঠানামা করছে তাপমাত্রার পারদ। গতকাল রোববার সকাল নয়টায় এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যা নামলেই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। হাড় কাপানো শীত ও হালকা কুয়াশার সাথে হিমশীতল বাতাসে মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। টানা শীতের কারণে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মে ঘটছে ছন্দপতন।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। কৃষিজমিতে কাজ করা শ্রমিকরা এবং যানবাহন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। কনকনে ঠাণ্ডায় বন্ধ রয়েছে জেলার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর থেকে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। কমতে থাকে তাপমাত্রা। এরপর ২৩ জানুয়ারি তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত বুধবার বিকেলে জেলার বিভিন্ন স্থানে আবারও ছিটেফোঁটা বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিন বিরতি দিয়ে শুক্রবার আবারও শুরু হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন শনিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে মানুষ সাধারণ কাজকর্ম করতে পারছে না। রিকশা-ভ্যান চালকরা একটু পরপর হোটেল কিংবা চায়ের দোকানে চুলার কাছে গিয়ে হাত গরম করে নিচ্ছেন। অনেকেই আবার খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশা চালক আলী হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের পরিবহন করে কিছু আয়-রোজগার হয়। কিন্তু শীতের কারণে মানুষ খুব একটা বাইরে বের না হওয়ায় আয়-রোজগার নেই বললেই চলে।’
দামুড়হুদার একটি ইটভাটায় জামাল উদ্দিন নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের ওতো শীত নেই। পেট ভাত জুটাতে হলো কাজ করতে হবে। তাই ভোর চারটায় এসেছি ইটভাটায়।’
আদি বাগাট নামের একটি হোটেলের মালিক নিরঞ্জন শিকদার বলেন, অন্যান্য সময় সকালে তাঁর দোকানে সকালে নাশতা খাওয়ার জন্য রীতিমতো ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু এই শীতে তার হোটেলে মানুষজন খুব-একটা আসছেন না। ফলে নাশতা বিক্রি কমেছে তাঁর।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রোববার সকাল ছয়টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। আর সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।