ইপেপার । আজ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ ও শৈলকুপার বিভিন্ন গ্রামে নৌকা-ঈগলের কর্মীরা মুখোমুখি

বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট, আহত ৫০

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৫৮:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

ঝিনাইদহের বিভিন্ন গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপায় শতাধিক বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গে করা হচ্ছে লুটপাট। পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা এই হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত  শৈলকুপা ও ঝিনাইদহে ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে নারী রয়েছে অন্তত ১০ জন।

গতকাল সোমবার সকালে সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও সুরাপাড়া গ্রামে নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসী বলছে, সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল নির্বাচিত হওয়ার পর গ্রামে গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনার জের ধরে সদর উপজেলার ৩টি গ্রামে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সকালে পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনের অনুসারীরা পরাজিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির সমর্থক জেলা যুবলীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল রাজার বাড়িসহ তার অনুসারীদের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও শুরাপাড়া গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। বাঁধা দেওয়ায় তাদের হামলায় নারীসহ আহত হয় অন্তত ১০ জন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া গোয়ালপাড়া বাজারে ঘোড়ামারা গ্রামের মিলনের দোকান ভাঙচুর করা হয়। একই গ্রামের নাছিরকে মারধর করে ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার দোকানও লুট করা হয়েছে। পূর্বনারায়ণপুর গ্রামের আজম মেম্বারের নেতৃত্বে গোয়ালপাড়া বাজারের তরকারি হাটে এই হামলা হয় বলে আহত নাছির অভিযোগ করেন। এদিকে সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকায় শ্রমিক নেতা সাঈদ, তুহিন ও নাজিম মেম্বারসহ ৪-৫ জনকে মারধর করা হয়েছে। আহতরা সবাই নৌকার সমর্থক বলে তারা জানিয়েছেন। শৈলকুপায় নির্বাচনী পরবর্তী  সহিংসতায় আহত হয়েছেন ৩০ জন। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলালের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়।

আহতরা হলেন- শৈলকুপার বারইহুদা গ্রামের আফান, কোটপাড়ার তামিম, বিরামপুরের রাশেদুল ইসলাম, ঝাউদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ, আবাইপুর গ্রামের স্বপন, সারুটিয়া গ্রামের কবির শেখ, কবিরপুরের জয়দেব সাহা, দোহারো গ্রামের স্বপন সাহা ও শিক্ষক পাড়ার বাবুসহ বিভিন্ন গ্রামের ৩০ জন গুরুতর আহন হন।

আহত ব্যক্তিরা জানান,  স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কার পক্ষে ভোট করার কারণে নৌকার সমর্থকরা এই হামলা করে। এ ব্যাপারে শৈলকুপা  থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, নির্বাচনের পরে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। সহিংসতা থামাতে আবাইপুর, বগুড়া, মিনগ্রাম, পাইকপাড়া, শাহাবাড়িয় ও সারুটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এদিকে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, সদরের ৩টি গ্রামে কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাব ও বিজিবি এলাকায় টহল দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ ও শৈলকুপার বিভিন্ন গ্রামে নৌকা-ঈগলের কর্মীরা মুখোমুখি

বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট, আহত ৫০

আপলোড টাইম : ০১:৫৮:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

ঝিনাইদহ অফিস:

ঝিনাইদহের বিভিন্ন গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপায় শতাধিক বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গে করা হচ্ছে লুটপাট। পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা এই হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত  শৈলকুপা ও ঝিনাইদহে ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে নারী রয়েছে অন্তত ১০ জন।

গতকাল সোমবার সকালে সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও সুরাপাড়া গ্রামে নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসী বলছে, সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল নির্বাচিত হওয়ার পর গ্রামে গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনার জের ধরে সদর উপজেলার ৩টি গ্রামে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সকালে পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনের অনুসারীরা পরাজিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির সমর্থক জেলা যুবলীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল রাজার বাড়িসহ তার অনুসারীদের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও শুরাপাড়া গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। বাঁধা দেওয়ায় তাদের হামলায় নারীসহ আহত হয় অন্তত ১০ জন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া গোয়ালপাড়া বাজারে ঘোড়ামারা গ্রামের মিলনের দোকান ভাঙচুর করা হয়। একই গ্রামের নাছিরকে মারধর করে ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার দোকানও লুট করা হয়েছে। পূর্বনারায়ণপুর গ্রামের আজম মেম্বারের নেতৃত্বে গোয়ালপাড়া বাজারের তরকারি হাটে এই হামলা হয় বলে আহত নাছির অভিযোগ করেন। এদিকে সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকায় শ্রমিক নেতা সাঈদ, তুহিন ও নাজিম মেম্বারসহ ৪-৫ জনকে মারধর করা হয়েছে। আহতরা সবাই নৌকার সমর্থক বলে তারা জানিয়েছেন। শৈলকুপায় নির্বাচনী পরবর্তী  সহিংসতায় আহত হয়েছেন ৩০ জন। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলালের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়।

আহতরা হলেন- শৈলকুপার বারইহুদা গ্রামের আফান, কোটপাড়ার তামিম, বিরামপুরের রাশেদুল ইসলাম, ঝাউদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ, আবাইপুর গ্রামের স্বপন, সারুটিয়া গ্রামের কবির শেখ, কবিরপুরের জয়দেব সাহা, দোহারো গ্রামের স্বপন সাহা ও শিক্ষক পাড়ার বাবুসহ বিভিন্ন গ্রামের ৩০ জন গুরুতর আহন হন।

আহত ব্যক্তিরা জানান,  স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কার পক্ষে ভোট করার কারণে নৌকার সমর্থকরা এই হামলা করে। এ ব্যাপারে শৈলকুপা  থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, নির্বাচনের পরে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। সহিংসতা থামাতে আবাইপুর, বগুড়া, মিনগ্রাম, পাইকপাড়া, শাহাবাড়িয় ও সারুটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এদিকে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, সদরের ৩টি গ্রামে কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাব ও বিজিবি এলাকায় টহল দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।