ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের নির্যাতনে গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৩৪ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:
জীবননগর পৌর এলাকার পুরাতন লক্ষীপুরে শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হয়ে রহিমা খাতুনকে (২৫) নামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার বিকেলে গৃহবধূ রহিমা খাতুন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

দুই সন্তানের জননী রহিমা খাতুন জীবননগর পৌর শহরের পুরাতন লক্ষীপুর এলাকার প্রবাসী জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ও উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুনপাড়ার কৃষক দলুর উদ্দিনের মেয়ে। এদিকে, ঘটনাটি লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্র জানা গেছে, ১০ বছর পূর্বে পারবারিকভাবে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে রহিমা খাতুনের বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের আজমাইন (৭) নামের একটি ছেলে ও জান্নাতুল (৩) নামের একটি মেয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সময় ননদ, শ্বশুর, শাশুড়ীর নির্যাতনের শিকার হতে হয় রহিমাকে। এ ঘটনায় রহিমার পরিবারের পক্ষ থেকে জীবননগর থানায় একটি অভিযোগও করা হয়েছে।

রাহিমা খাতুনের পিতা দলুর উদ্দিন বলেন, ‘রাহিমা আমার মেয়েদের মধ্যে সবার ছোট। তার সুখের জন্য যৌতুক বাবদ দফায় দফায় নগদ টাকা ও আসবাবপত্র এবং স্বর্ণালঙ্কার দিয়েছি। এরপরেও মেয়েক সুখী হতে দেখলাম না। মেয়ের শাশুড়ী ফাতেমা ও ননদ নার্গিস দজ্জাল প্রকৃতির। তাদের অত্যাচারে আমার মেয়েটা বিয়ের পর সুখ পেল না। সর্বশেষ জামাই জাহাঙ্গীরকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য আমি ও আমার অন্য মেয়ে-জামাইরা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ধার দিয়ে সহযোগিতা করি। সেই টাকা চাওয়া নিয়ে জামাই জাহাঙ্গীর আমার মেয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিদেশ থেকে তার বাবা, মা ও বোন এবং বোনের মেয়েদের দিয়ে আমার মেয়েকে অত্যাচার করে চলেছে। যার কারণে আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এখন হাসপতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ রহিমা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার শাশুড়ী ও ননদ নার্গিসের নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছি। আমার বাবা-মা তাদেরকে যৌতুক বাবদ বারবার মোটা অঙ্কের টাকা, আসবাবপত্র দিলেও আমি তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাইনি। আমি চার মাস ধরে দু’সন্তানসহ আমার বাবা-মায়ের বাড়িতে থাকার পর শ্বশুর বাড়িতে গেলে শাশুড়ী, ননদ নার্গিস ও ননদের দুই মেয়ে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালমন্দ করতে শুরু করে। প্রবাসী স্বামী জাহাঙ্গীরের মদদেই এসময় তারা আমাকে মারপিট করে। তাদের নির্যাতনের কারণেই আমি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।’

জীবননগর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল হোসেন খোকন বলেন, ‘ঘটনার ব্যাপারটি আমি লোকমুখে শুনেছি। তবে কী কারণে এবং কারা মারপিট করেছে, তা কেউ বলেনি।’ জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবিদ হাসান বলেন, ‘এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের নির্যাতনে গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা

আপলোড টাইম : ১০:০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

জীবননগর অফিস:
জীবননগর পৌর এলাকার পুরাতন লক্ষীপুরে শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হয়ে রহিমা খাতুনকে (২৫) নামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার বিকেলে গৃহবধূ রহিমা খাতুন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

দুই সন্তানের জননী রহিমা খাতুন জীবননগর পৌর শহরের পুরাতন লক্ষীপুর এলাকার প্রবাসী জাহাঙ্গীরের স্ত্রী ও উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুনপাড়ার কৃষক দলুর উদ্দিনের মেয়ে। এদিকে, ঘটনাটি লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্র জানা গেছে, ১০ বছর পূর্বে পারবারিকভাবে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে রহিমা খাতুনের বিবাহ হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের আজমাইন (৭) নামের একটি ছেলে ও জান্নাতুল (৩) নামের একটি মেয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সময় ননদ, শ্বশুর, শাশুড়ীর নির্যাতনের শিকার হতে হয় রহিমাকে। এ ঘটনায় রহিমার পরিবারের পক্ষ থেকে জীবননগর থানায় একটি অভিযোগও করা হয়েছে।

রাহিমা খাতুনের পিতা দলুর উদ্দিন বলেন, ‘রাহিমা আমার মেয়েদের মধ্যে সবার ছোট। তার সুখের জন্য যৌতুক বাবদ দফায় দফায় নগদ টাকা ও আসবাবপত্র এবং স্বর্ণালঙ্কার দিয়েছি। এরপরেও মেয়েক সুখী হতে দেখলাম না। মেয়ের শাশুড়ী ফাতেমা ও ননদ নার্গিস দজ্জাল প্রকৃতির। তাদের অত্যাচারে আমার মেয়েটা বিয়ের পর সুখ পেল না। সর্বশেষ জামাই জাহাঙ্গীরকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য আমি ও আমার অন্য মেয়ে-জামাইরা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ধার দিয়ে সহযোগিতা করি। সেই টাকা চাওয়া নিয়ে জামাই জাহাঙ্গীর আমার মেয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিদেশ থেকে তার বাবা, মা ও বোন এবং বোনের মেয়েদের দিয়ে আমার মেয়েকে অত্যাচার করে চলেছে। যার কারণে আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এখন হাসপতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ রহিমা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার শাশুড়ী ও ননদ নার্গিসের নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছি। আমার বাবা-মা তাদেরকে যৌতুক বাবদ বারবার মোটা অঙ্কের টাকা, আসবাবপত্র দিলেও আমি তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাইনি। আমি চার মাস ধরে দু’সন্তানসহ আমার বাবা-মায়ের বাড়িতে থাকার পর শ্বশুর বাড়িতে গেলে শাশুড়ী, ননদ নার্গিস ও ননদের দুই মেয়ে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালমন্দ করতে শুরু করে। প্রবাসী স্বামী জাহাঙ্গীরের মদদেই এসময় তারা আমাকে মারপিট করে। তাদের নির্যাতনের কারণেই আমি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি।’

জীবননগর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল হোসেন খোকন বলেন, ‘ঘটনার ব্যাপারটি আমি লোকমুখে শুনেছি। তবে কী কারণে এবং কারা মারপিট করেছে, তা কেউ বলেনি।’ জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাবিদ হাসান বলেন, ‘এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’