ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাব ও পুলিশের অভিযান গুলশান হামলার হোতা জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী খতম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৫৫:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৪৪৫ বার পড়া হয়েছে

image_1647_252757সমীকরণ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। অন্য দুজন হলেন ইকবাল ও মানিক। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম (৩০) গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুলিশ দাবি করে আসছে। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল। ২০১৩ সালে কানাডা থেকে আসার পর তামিম বাংলাদেশেই ছিলেন বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছিলেন। তার নির্দেশনায়ই গত ১ জুলাই জঙ্গিরা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি। গুলশান হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকার কল্যাণপুরে একটি আস্তানায় অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন। এরপর শনিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় বড় কবরস্থানের পাশের একটি তিনতলা ভবন ঘিরে অভিযানে নামে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ঢাকা থেকে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল পাইকপাড়ার একটি বাড়ি ঘিরে এই অভিযান শুরু করে। এরপর অভিযানে র‌্যাব ও জেলা পুলিশ সদস্যরাও যোগ দেন। ভোর থেকে ঘিরে রাখার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির পর শব্দ কমে আসে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে থাকা তামিমসহ তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন। খানিক পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামও তিনজনের মধ্যে তামিমের থাকার খবর নিশ্চিত করেন। বাকি দুজন ইকবাল ও মানিক কল্যাণপুরের জাহাজবাড়ির জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাদের বিস্তারিত পরিচয় এখনও জানা যায়নি। সন্ত্রাস দমনে গঠিত ডিএমপির এই শাখার প্রধান মনিরুল বলেন, জেএমবির এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তার দেয়া তথ্যে এই আস্তানার খোঁজ মেলে। এরপর এখানে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টুয়েন্টি সেভেন’ চালানো হয়। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলেছে। তামিমকে গ্রেপ্তার করা গেলে জেএমবির ‘নতুন ধারার’ আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে আশা করেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিমের নাম এসেছিল। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার ওপর ভিত্তি করে তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে। তবে আইএস-সংশ্লিষ্টতার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আইজিপি শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে (গুলশান হামলা) মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। নিও জেএমবির নেতৃত্ব সে দিচ্ছে। এই তামিম চৌধুরীর পর যারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রধান তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি।’ কানাডার পাসপোর্টধারী তামিম ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে গত ২ আগস্ট জানিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল। তামিম সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি। মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য। তামিমের বাবা শফি আহমদ জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সপরিবারে কানাডায় পাড়ি জমান। তামিমের মতোই ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের জন্য। তিনি আরেক জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে পুলিশের দাবি।

৫ জুলাই বাসাটি ভাড়া
নেয় জঙ্গিরা
নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার বাসাটি চলতি বছরের ৫ জুলাই জঙ্গিরা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় গ্রেনেড, অস্ত্র ও গুলি মজুদ করে তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন একথা বলেন।
পুলিশ জানায়, জঙ্গিদের কাছে মোট ছয়টি গ্রেনেড ছিল। এর মধ্যে দুটি গ্রেনেড তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে। দুটি গ্রেনেড পুলিশ নিষ্ক্রিয় করেছে। আর দুটি গ্রেনেড পাশের একটি টিনের চালের ওপর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িটি ঘিরে ফেলে। তামিম চৌধুরীর কাছে গ্রেনেড ছিল। বাকি দুজনের কাছে অস্ত্র ছিল। সেগুলো কল্যাণপুরে জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ও গুলশানে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের মতো। এগুলো সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ পথে আসা অস্ত্রের মতো দেখতে।
অতিরিক্ত উপকমিশনার আরও বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর অভিযান চালানো হবে বলে বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার জন্য আধ ঘণ্টার মতো সময়ও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সুযোগ নেননি। এরপরই পুলিশ অভিযান চালায়।
পাইকপাড়ার বাড়িটি তিনতলা। জঙ্গিরা তিনতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়। এই বাড়ির আশপাশে টিনের কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। বাড়িটির মালিকের নাম নুরুদ্দীন দেওয়ান। মালিকের চাচাতো ভাই সালাউদ্দিন বলেন, তার ভাই জাপানে থাকতেন। দেশে ফিরে এই বাড়িটি করেছেন। তিনতলার ভাড়াটিয়াদের তিনি কাউকে চিনতেন না।

স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ
বাড়ির মালিক আটক
নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় অভিযান চালানো বাড়িটির মালিক নূর উদ্দিন দেওয়ান ও তার স্ত্রী-ছেলেসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার বিকাল পাঁচটার দিকে তাদের একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মালিক নূর উদ্দিন ছাড়াও তার স্ত্রী ও তিন ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাব ও পুলিশের অভিযান গুলশান হামলার হোতা জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরী খতম

আপলোড টাইম : ০১:৫৫:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৬

image_1647_252757সমীকরণ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। অন্য দুজন হলেন ইকবাল ও মানিক। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম (৩০) গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে পুলিশ দাবি করে আসছে। তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল। ২০১৩ সালে কানাডা থেকে আসার পর তামিম বাংলাদেশেই ছিলেন বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছিলেন। তার নির্দেশনায়ই গত ১ জুলাই জঙ্গিরা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি। গুলশান হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আস্তানার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছিল পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকার কল্যাণপুরে একটি আস্তানায় অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হন। এরপর শনিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় বড় কবরস্থানের পাশের একটি তিনতলা ভবন ঘিরে অভিযানে নামে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ঢাকা থেকে এসে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল পাইকপাড়ার একটি বাড়ি ঘিরে এই অভিযান শুরু করে। এরপর অভিযানে র‌্যাব ও জেলা পুলিশ সদস্যরাও যোগ দেন। ভোর থেকে ঘিরে রাখার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলির পর শব্দ কমে আসে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাড়িতে থাকা তামিমসহ তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন। খানিক পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামও তিনজনের মধ্যে তামিমের থাকার খবর নিশ্চিত করেন। বাকি দুজন ইকবাল ও মানিক কল্যাণপুরের জাহাজবাড়ির জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাদের বিস্তারিত পরিচয় এখনও জানা যায়নি। সন্ত্রাস দমনে গঠিত ডিএমপির এই শাখার প্রধান মনিরুল বলেন, জেএমবির এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর তার দেয়া তথ্যে এই আস্তানার খোঁজ মেলে। এরপর এখানে ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টুয়েন্টি সেভেন’ চালানো হয়। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলেছে। তামিমকে গ্রেপ্তার করা গেলে জেএমবির ‘নতুন ধারার’ আদ্যোপান্ত বেরিয়ে আসবে বলে আশা করেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিমের নাম এসেছিল। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিভিন্ন প্রকাশনার ওপর ভিত্তি করে তাকে সংগঠনটির বাংলাদেশ শাখার সমন্বয়ক বলা হচ্ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে। তবে আইএস-সংশ্লিষ্টতার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আইজিপি শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে (গুলশান হামলা) মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। নিও জেএমবির নেতৃত্ব সে দিচ্ছে। এই তামিম চৌধুরীর পর যারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রধান তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি।’ কানাডার পাসপোর্টধারী তামিম ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে গত ২ আগস্ট জানিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল। তামিম সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি। মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য। তামিমের বাবা শফি আহমদ জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সপরিবারে কানাডায় পাড়ি জমান। তামিমের মতোই ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের জন্য। তিনি আরেক জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে পুলিশের দাবি।

৫ জুলাই বাসাটি ভাড়া
নেয় জঙ্গিরা
নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার বাসাটি চলতি বছরের ৫ জুলাই জঙ্গিরা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় গ্রেনেড, অস্ত্র ও গুলি মজুদ করে তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন একথা বলেন।
পুলিশ জানায়, জঙ্গিদের কাছে মোট ছয়টি গ্রেনেড ছিল। এর মধ্যে দুটি গ্রেনেড তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে। দুটি গ্রেনেড পুলিশ নিষ্ক্রিয় করেছে। আর দুটি গ্রেনেড পাশের একটি টিনের চালের ওপর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িটি ঘিরে ফেলে। তামিম চৌধুরীর কাছে গ্রেনেড ছিল। বাকি দুজনের কাছে অস্ত্র ছিল। সেগুলো কল্যাণপুরে জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ও গুলশানে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের মতো। এগুলো সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ পথে আসা অস্ত্রের মতো দেখতে।
অতিরিক্ত উপকমিশনার আরও বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর অভিযান চালানো হবে বলে বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার জন্য আধ ঘণ্টার মতো সময়ও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সুযোগ নেননি। এরপরই পুলিশ অভিযান চালায়।
পাইকপাড়ার বাড়িটি তিনতলা। জঙ্গিরা তিনতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়। এই বাড়ির আশপাশে টিনের কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। বাড়িটির মালিকের নাম নুরুদ্দীন দেওয়ান। মালিকের চাচাতো ভাই সালাউদ্দিন বলেন, তার ভাই জাপানে থাকতেন। দেশে ফিরে এই বাড়িটি করেছেন। তিনতলার ভাড়াটিয়াদের তিনি কাউকে চিনতেন না।

স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ
বাড়ির মালিক আটক
নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় অভিযান চালানো বাড়িটির মালিক নূর উদ্দিন দেওয়ান ও তার স্ত্রী-ছেলেসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার বিকাল পাঁচটার দিকে তাদের একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মালিক নূর উদ্দিন ছাড়াও তার স্ত্রী ও তিন ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।