ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মায় বাড়ছে পানি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৫৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৬
  • / ১০০৪ বার পড়া হয়েছে

29181_b1সমীকরণ ডেস্ক: ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ার পর পদ্মার পানি বাড়ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে হুমকির মুখে পড়ছে বিভিন্ন শহররক্ষা বাঁধ। অপরদিকে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ার পর থেকেই প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলেছে পদ্মা নদীর পানি। হুমকির মুখে পড়েছে ভেড়ামারা শহর রক্ষা বাঁধ। রায়টা বাঁধ এবং মসলেমপুর বাঁধে পানি উপচে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে শহরের দিকে পানি চলে আসার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। ফলে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। এদিকে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সকালের দিকে তা স্থিতাবস্থায় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৫ মিটার। ৩ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ সেন্ট্রিমিটার। যা বিপদসীমার মাত্র ১০ সেন্ট্রিমিটার নিচে। সকালে লালন শাহ্ ব্রিজে পানি মাপার স্কেলটি দেখা গেছে ডুবুডুবু অবস্থায়। ভেড়ামারার রায়টা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মা নদী ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। চারদিকে এখন পানি আর পানি। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে রায়টা বাঁধ এখন হুমকির মুখে। কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে। বাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে অপ্রতুল ব্যবস্থা ছিল তাও এখন পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মার পানি এখন মেইন সড়ক ছুঁই ছুঁই করছে। আর একটু পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়তে পারে শহরে। এদিকে পদ্মা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে শহর রক্ষা মসলেমপুর বাঁধও হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধের উপর পানি এখন উপচে পড়ার সম্ভাবনা। মসলেমপুর এলাকার প্রভাষক নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মসলেমপুর বাঁধ এখন হুমকির মুখে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়তে পারে ১২ মাইল এলাকায়। প্লাবিত হতে পারে ১২ মাইল এলাকার শত শত বসতবাড়ি। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তি মণি চাকমা জানিয়েছেন, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়া এবং উজানে এখনও বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে পদ্মায় আশংকাজনক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশ্রায়ণ প্রকল্প থেকে মানুষকে নিরাপদে অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এবং পরিস্থিতির অবনতি হলে সলেমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরিয়ে নেয়া হতে পারে। তিনি জানান, আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। পদ্মা নদীতে হঠাৎ পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়া এবং ৩ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুমের প্রধান সম্বন্বয়কারী কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়ামুল হক জানিয়েছেন, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল ৬ টায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ১৪ দশমিক ১২ মিটার। পানি বৃদ্ধির এ ধারা সকালের দিকেও ছিল স্থিতিতাবস্থায়। সকাল ৯টায়ও দেখা গেছে ১৪ দশমিক ১২ মিটার। যা বিপদ সীমার নিচে ছিল ১৩ সেন্ট্রিমিটার। কিন্তু দুপুর ১২টায় পানি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ১৪ দশমিক ১৫ মিটার। সর্বশেষ ৩ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্ট্রিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। পানি বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে খুব দ্রুতই ভেড়ামারা শহর রক্ষা বাঁধ ও রায়টা এবং মসলেমপুর বাঁধ ভেঙে শহরে পানি প্রবেশ করতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মায় বাড়ছে পানি

আপলোড টাইম : ০১:৫৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৬

29181_b1সমীকরণ ডেস্ক: ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ার পর পদ্মার পানি বাড়ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে হুমকির মুখে পড়ছে বিভিন্ন শহররক্ষা বাঁধ। অপরদিকে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ার পর থেকেই প্রতি মুহূর্তে বেড়েই চলেছে পদ্মা নদীর পানি। হুমকির মুখে পড়েছে ভেড়ামারা শহর রক্ষা বাঁধ। রায়টা বাঁধ এবং মসলেমপুর বাঁধে পানি উপচে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে শহরের দিকে পানি চলে আসার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। ফলে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। এদিকে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সকালের দিকে তা স্থিতাবস্থায় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৫ মিটার। ৩ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ সেন্ট্রিমিটার। যা বিপদসীমার মাত্র ১০ সেন্ট্রিমিটার নিচে। সকালে লালন শাহ্ ব্রিজে পানি মাপার স্কেলটি দেখা গেছে ডুবুডুবু অবস্থায়। ভেড়ামারার রায়টা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মা নদী ভয়াল রূপ ধারণ করেছে। চারদিকে এখন পানি আর পানি। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে রায়টা বাঁধ এখন হুমকির মুখে। কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে। বাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের যে অপ্রতুল ব্যবস্থা ছিল তাও এখন পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মার পানি এখন মেইন সড়ক ছুঁই ছুঁই করছে। আর একটু পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়তে পারে শহরে। এদিকে পদ্মা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে শহর রক্ষা মসলেমপুর বাঁধও হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধের উপর পানি এখন উপচে পড়ার সম্ভাবনা। মসলেমপুর এলাকার প্রভাষক নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মসলেমপুর বাঁধ এখন হুমকির মুখে। যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়তে পারে ১২ মাইল এলাকায়। প্লাবিত হতে পারে ১২ মাইল এলাকার শত শত বসতবাড়ি। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তি মণি চাকমা জানিয়েছেন, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়া এবং উজানে এখনও বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে পদ্মায় আশংকাজনক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশ্রায়ণ প্রকল্প থেকে মানুষকে নিরাপদে অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এবং পরিস্থিতির অবনতি হলে সলেমানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরিয়ে নেয়া হতে পারে। তিনি জানান, আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। পদ্মা নদীতে হঠাৎ পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়া এবং ৩ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুমের প্রধান সম্বন্বয়কারী কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়ামুল হক জানিয়েছেন, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল ৬ টায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ১৪ দশমিক ১২ মিটার। পানি বৃদ্ধির এ ধারা সকালের দিকেও ছিল স্থিতিতাবস্থায়। সকাল ৯টায়ও দেখা গেছে ১৪ দশমিক ১২ মিটার। যা বিপদ সীমার নিচে ছিল ১৩ সেন্ট্রিমিটার। কিন্তু দুপুর ১২টায় পানি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ১৪ দশমিক ১৫ মিটার। সর্বশেষ ৩ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্ট্রিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। পানি বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে খুব দ্রুতই ভেড়ামারা শহর রক্ষা বাঁধ ও রায়টা এবং মসলেমপুর বাঁধ ভেঙে শহরে পানি প্রবেশ করতে পারে।