ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির আড়ালে সুদের কারবার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩
  • / ৯০ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সুদের অত্যাচারে দিশেহারা ঋণ গ্রহীতারা ফুসে উঠেছেন। উচ্চ সুদের নিচে চাপা পাড়া শতশত নারী-পুরুষ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। এ ঘটনায় জেলা সমবায় অফিস থেকে তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের কেসমত আলী বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল ইসলাম রফি এই রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালনা করেন। ভুক্তভোগী অনেক নারী-পুরুষ অভিযোগ করেন, এই সমবায় সমিতির আড়ালে রফিকুল ইসলাম রফি রমরমা সুদের কারবার করে আসছেন। তার রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার পরিবর্তে নিঃস্ব হচ্ছে।

মহারাজপুর ইউনিয়নের কেশবপুর, কয়ারগাছি, রামপেড়ে, খুনকারপাড়া ও গড়িয়ালা গ্রামের ১২ জন নারী-পুরুষ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, সুদখোর রফি ‘রান সমবায় সমিতির’ মাধ্যমে চড়া সুদ আদায় করে আসেছে। মানুষ বুঝে এই সুদের হার ১৫ থেকে ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে নিচ্ছে। কয়ারগাছি গ্রামের কেয়া মহিলা সমিতির হালিমা তার কাছ থেকে দুই বছর মেয়াদে ৪২ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু এখনো খাতায় বাকি রয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এই ঋণ প্রদানের সময় হালিমা খাতুনের কাছ থেকে ব্লাঙ্ক চেক ও তিনশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প গ্রহণ করেন রফি। টাকা না দিলে ফাঁকা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে আদালতে মামলা করে ঋণ গ্রহীতাদের ভিটেছাড়া করা হয়। অনেকে রফির এমন মিথ্যা মামলায় ঝুলছেন।

বিষয়খালী গ্রামের শামীম হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে রফির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হলেও রফি ঋণ গ্রহীতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন এবং মামলা মিটিয়ে সুদের টাকা মওকুফ করার প্রলোভন দেখাচ্ছেন। রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, উচ্চহারে সুদ গ্রহণের কথা সমবায় সমিতির ম্যানুয়ালে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ব্লাঙ্ক চেক ও তিনশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ঋণ গ্রহীতাদের সম্মতিতে গ্রহণ করা হয়।’
ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসার জাফর ইকবাল জানান, রফির উচ্চহারে সুদ গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করতে একজন পরিদর্শক পাঠানো হচ্ছে। রোববার দুই পক্ষের শুনানি গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, রফি যে চিহ্নিত সুদখোর, তা এলাকার মানুষ তাকে জানিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে ছাড়া দেওয়া হবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির আড়ালে সুদের কারবার

আপলোড টাইম : ০৩:০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ মে ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সুদের অত্যাচারে দিশেহারা ঋণ গ্রহীতারা ফুসে উঠেছেন। উচ্চ সুদের নিচে চাপা পাড়া শতশত নারী-পুরুষ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। এ ঘটনায় জেলা সমবায় অফিস থেকে তদন্তের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের কেসমত আলী বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল ইসলাম রফি এই রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালনা করেন। ভুক্তভোগী অনেক নারী-পুরুষ অভিযোগ করেন, এই সমবায় সমিতির আড়ালে রফিকুল ইসলাম রফি রমরমা সুদের কারবার করে আসছেন। তার রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির থেকে ঋণ নিয়ে মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার পরিবর্তে নিঃস্ব হচ্ছে।

মহারাজপুর ইউনিয়নের কেশবপুর, কয়ারগাছি, রামপেড়ে, খুনকারপাড়া ও গড়িয়ালা গ্রামের ১২ জন নারী-পুরুষ ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, সুদখোর রফি ‘রান সমবায় সমিতির’ মাধ্যমে চড়া সুদ আদায় করে আসেছে। মানুষ বুঝে এই সুদের হার ১৫ থেকে ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে নিচ্ছে। কয়ারগাছি গ্রামের কেয়া মহিলা সমিতির হালিমা তার কাছ থেকে দুই বছর মেয়াদে ৪২ হাজার টাকার ঋণ নিয়ে ১১ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু এখনো খাতায় বাকি রয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এই ঋণ প্রদানের সময় হালিমা খাতুনের কাছ থেকে ব্লাঙ্ক চেক ও তিনশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প গ্রহণ করেন রফি। টাকা না দিলে ফাঁকা চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে আদালতে মামলা করে ঋণ গ্রহীতাদের ভিটেছাড়া করা হয়। অনেকে রফির এমন মিথ্যা মামলায় ঝুলছেন।

বিষয়খালী গ্রামের শামীম হোসেন অভিযোগ করেন, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে রফির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হলেও রফি ঋণ গ্রহীতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন এবং মামলা মিটিয়ে সুদের টাকা মওকুফ করার প্রলোভন দেখাচ্ছেন। রান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, উচ্চহারে সুদ গ্রহণের কথা সমবায় সমিতির ম্যানুয়ালে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ব্লাঙ্ক চেক ও তিনশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ঋণ গ্রহীতাদের সম্মতিতে গ্রহণ করা হয়।’
ঝিনাইদহ জেলা সমবায় অফিসার জাফর ইকবাল জানান, রফির উচ্চহারে সুদ গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত করতে একজন পরিদর্শক পাঠানো হচ্ছে। রোববার দুই পক্ষের শুনানি গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, রফি যে চিহ্নিত সুদখোর, তা এলাকার মানুষ তাকে জানিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে ছাড়া দেওয়া হবে না।