ঝিনাইদহ অফিস:

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে বৃহত্তর যশোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে এবং ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৪০ সালের ২৬ মে ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। সত্তরের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছয় দফা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন যশোর-২ (বর্তমানে ঝিনাইদহ-২) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় হেলিকপ্টারে তাঁর মরদেহ ঝিনাইদহে এনে রাখা হয় সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। তাঁকে শেষবার একনজর দেখার জন্য রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সহকর্মী, সহপাঠীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করে। মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ঝিনাইদহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এর আগে তাঁর রাজনৈতিক জীবনী নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান, পিপি অ্যাড. ইসমাইল হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এম এ মজিদ প্রমুখ। পরে হেলিকপ্টারে তাঁর মরদেহ ঢাকার গুলশানের আজাদ মসজিদে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা শেষে সাভারে নিজের করা মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নূরে আলম সিদ্দিকীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নূরে আলম সিদ্দিকী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ছয়-দফা আন্দোলন এবং ৭০-এর নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জাতির এই সাহসী সন্তানের অবদান পরবর্তী প্রজন্ম চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তোপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।