ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০০:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বিদ্যুতের পর এবার বাড়ছে গ্যাসের দাম। যেকোনো মুহূর্তে নতুন এই দামের ঘোষণা দিতে পারে সরকার। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বা বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে কোনো আবেদন বা শুনানি ছাড়াই নির্বাহী আদেশে দাম বৃদ্ধির এ ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। দেশের বিদ্যুৎ উপাদন, শিল্পকারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়তে পারে জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। গ্যাসের দাম বাড়ানো সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পেট্রোবাংলা থেকে ঘুরে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর হয়েছে বলে গেছে। যে কোনো দিন ঘোষণা আসতে পারে বিভিন্ন সূত্রে থেকে নিশ্চিত করেছে। আইএমএফের ঋণ পেতে ভর্তুকি কমানোর চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। তাই বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এরমধ্যেই আইন সংশোধন করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা সরকার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাছ থেকে নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হবে। এখন সরকারের সিদ্ধান্ত পেলেই নতুন দাম ঘোষণা করা হবে। দাম বাড়াতে আমরা প্রস্তুতির কাজ চলছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ব্যবসায়ীরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চান। তারা আন্তর্জাতিক বাজার দরে বিল দিতে আগ্রহে দেখিয়েছে। সরকারের তাদের প্রস্তাবের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে। গ্যাস সরবরাহে শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ২০২৫ সালে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
জানা গেছে, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম হতে পারে ১৪ টাকা। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম পড়ে ৫ টাকা ২ পয়সা। ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি ইউনিটের দাম এখন রয়েছে ১৬ টাকা। এই শ্রেণির গ্রাহকের দাম হতে পারে ২১ টাকা। শিল্পে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহের প্রত্যাশায় উদ্যোক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সরকারের তরফ থেকে এলএনজির আন্তর্জাতিক বাজারদর বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা হচ্ছে না বলে জানানো হয়। তখন ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনে বাড়তি দাম দিয়ে গ্যাস নিতেও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান। সরকারের তরফে এলএনজি আমদানির পর দেশি গ্যাসের সঙ্গে মিশ্রণের পর প্রতি ঘনমিটারের দাম ৩৫ টাকা করে পড়ছে বলে জানানো হয়। এ দাম ব্যবসায়ীরা দিতে পারবেন কি না জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা ২১ টাকা দিতে সম্মত হন বলে বৈঠকসূত্র জানিয়েছে। বিইআরসি গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ৪ জুন গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। তার আগে ২০১৯ সালের জুনে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তখন বিদ্যুতে ৪ টাকা ৪৫ পয়সা, ক্যাপটিভে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা এবং শিল্পে ১০ টাকা ৭০ পয়সা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে সংস্থাটি। এর আগে ২০১৭ সালের ১ মার্চ ও ১ জুন দুই দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে সরকার। ওই বছর ১ মার্চ গ্যাসের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিদ্যুতে ঘনমিটার প্রতি ২ টাকা ৯৯ পয়সা, ক্যাপটিভে ৮ টাকা ৯৮ পয়সা ও শিল্পে ৭ টাকা ২৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সে বছরের ১ জুন আরও এক দফা দাম বাড়ে। তখন ঘনমিটারপ্রতি বিদ্যুতে ৩ টাকা ১৬ পয়সা, ক্যাপটিভে ৯ টাকা ৬২ পয়সা ও শিল্পে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা দাম নির্ধারণ করা হয়। গত২০২২ সালজুড়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হয় দেশবাসীকে। বাসা-বাড়ি থেকে শিল্প-কারখানা সব খাতেই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ঘাটতি মোকাবিলা করতে হয়। আসন্ন গরম ও সেচ মৌসুমেও বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সংকট ভোগাতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। ২০২২ সালে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম এক দফা বাড়ানো হয়। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর হয়েছে। ভর্তুকি কমাতে গ্যাস দাম বাড়ানো হতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আপলোড টাইম : ১২:০০:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বিদ্যুতের পর এবার বাড়ছে গ্যাসের দাম। যেকোনো মুহূর্তে নতুন এই দামের ঘোষণা দিতে পারে সরকার। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বা বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে কোনো আবেদন বা শুনানি ছাড়াই নির্বাহী আদেশে দাম বৃদ্ধির এ ঘোষণা আসতে যাচ্ছে। দেশের বিদ্যুৎ উপাদন, শিল্পকারখানার নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শিল্পের গ্যাসের দাম বাড়তে পারে জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। গ্যাসের দাম বাড়ানো সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পেট্রোবাংলা থেকে ঘুরে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর হয়েছে বলে গেছে। যে কোনো দিন ঘোষণা আসতে পারে বিভিন্ন সূত্রে থেকে নিশ্চিত করেছে। আইএমএফের ঋণ পেতে ভর্তুকি কমানোর চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। তাই বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এরমধ্যেই আইন সংশোধন করে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা সরকার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাছ থেকে নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হবে। এখন সরকারের সিদ্ধান্ত পেলেই নতুন দাম ঘোষণা করা হবে। দাম বাড়াতে আমরা প্রস্তুতির কাজ চলছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ব্যবসায়ীরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চান। তারা আন্তর্জাতিক বাজার দরে বিল দিতে আগ্রহে দেখিয়েছে। সরকারের তাদের প্রস্তাবের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে। গ্যাস সরবরাহে শিল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ২০২৫ সালে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
জানা গেছে, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম হতে পারে ১৪ টাকা। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম পড়ে ৫ টাকা ২ পয়সা। ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি ইউনিটের দাম এখন রয়েছে ১৬ টাকা। এই শ্রেণির গ্রাহকের দাম হতে পারে ২১ টাকা। শিল্পে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহের প্রত্যাশায় উদ্যোক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সরকারের তরফ থেকে এলএনজির আন্তর্জাতিক বাজারদর বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা হচ্ছে না বলে জানানো হয়। তখন ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনে বাড়তি দাম দিয়ে গ্যাস নিতেও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান। সরকারের তরফে এলএনজি আমদানির পর দেশি গ্যাসের সঙ্গে মিশ্রণের পর প্রতি ঘনমিটারের দাম ৩৫ টাকা করে পড়ছে বলে জানানো হয়। এ দাম ব্যবসায়ীরা দিতে পারবেন কি না জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা ২১ টাকা দিতে সম্মত হন বলে বৈঠকসূত্র জানিয়েছে। বিইআরসি গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ৪ জুন গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। তার আগে ২০১৯ সালের জুনে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তখন বিদ্যুতে ৪ টাকা ৪৫ পয়সা, ক্যাপটিভে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা এবং শিল্পে ১০ টাকা ৭০ পয়সা প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে সংস্থাটি। এর আগে ২০১৭ সালের ১ মার্চ ও ১ জুন দুই দফায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে সরকার। ওই বছর ১ মার্চ গ্যাসের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিদ্যুতে ঘনমিটার প্রতি ২ টাকা ৯৯ পয়সা, ক্যাপটিভে ৮ টাকা ৯৮ পয়সা ও শিল্পে ৭ টাকা ২৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সে বছরের ১ জুন আরও এক দফা দাম বাড়ে। তখন ঘনমিটারপ্রতি বিদ্যুতে ৩ টাকা ১৬ পয়সা, ক্যাপটিভে ৯ টাকা ৬২ পয়সা ও শিল্পে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা দাম নির্ধারণ করা হয়। গত২০২২ সালজুড়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে অসহনীয় ভোগান্তি পোহাতে হয় দেশবাসীকে। বাসা-বাড়ি থেকে শিল্প-কারখানা সব খাতেই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ঘাটতি মোকাবিলা করতে হয়। আসন্ন গরম ও সেচ মৌসুমেও বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সংকট ভোগাতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। ২০২২ সালে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম এক দফা বাড়ানো হয়। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর হয়েছে। ভর্তুকি কমাতে গ্যাস দাম বাড়ানো হতে পারে।