ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিয়ার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:১১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে

image_1646_252535সমীকরণ ডেস্ক: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার ও পদকটি জাতীয় জাদুঘর থেকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গোটা জাতি উদ্বিগ্ন ও বিস্মিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রিসভা কমিটির এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী ও দুর্ভাগ্যজনক। এর মধ্যদিয়ে তারা জাতিকে বিভক্ত করতে চায়। এটা যে কতটা নোংরা সিদ্ধান্ত সেটা যখন সরকার বুঝবে তখন আর শোধরানোর সময় থাকবে না। শুক্রবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, যিনি পদক প্রবর্তন করলেন তিনি বাদ। কিন্তু পদক থাকবে, তার কীর্তিও থাকবে। এটা যে কত বড় সংকীর্ণতা, আত্মঘাতী ও নোংরা কাজ; তা আওয়ামী লীগ যেদিন বুঝবে সেদিন আর শোধরানোর সময় থাকবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দলীয় মূল্যায়ন আমরা সবাই জানি। কিন্তু দলীয় মূল্যায়নে রাষ্ট্র চলে না, রাষ্ট্র সবার। এই রাষ্ট্রকে যদি দলীয় বানাতে চান তখন রাষ্ট্র থাকবে দলই থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু ইতিহাসে নয়, বহু মানুষের হৃদয়ে আছেন পরম শ্রদ্ধায়। কাজেই তিনি স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবেনই। যারা গায়ের জোরে নোংরাভাবে তাকে মুছতে চাইছেন, তাতে তিনি ফিরলে হয়তো একইভাবে তারাও মুছে যেতে পারেন।’ বিএনপি সরকার ২০০৩ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে একইসঙ্গে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দিয়েছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরম ঔদার্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই সম্মাননা বিতর্কিত এবং অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার কমিটিতে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বর্তমান আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করছে, তা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। হতাশা এবং দুর্ভাগ্যের সঙ্গে লক্ষ করছি, এই সরকার ঐক্যের রাজনীতিকে বিসর্জন দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে গোটা জাতিকে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে বিভক্ত করে ফেলছেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামরিক ক্ষেত্রে শৌর্যবীর্য ছাড়া আর কোনো ক্ষেত্রে মেধা, কৃতিত্ব যোগ্যতা ও নেতৃত্বের স্বীকৃত হিসেবে দেশি-বিদেশি কাউকেই কোনো রাষ্ট্রীয় খেতাব, পদক ও ভূষণে বিভূষিত করাকে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। একাডেমিক অনার ছাড়া বিদেশ থেকে কোনো সম্মাননা অর্জনকেও রাষ্ট্রপতি প্রাক অনুমোদন গ্রহণ করার শর্ত যুক্ত করেছিল। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় সম্মাননার ওপর আরোপিত সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ১৯৭৭ সালে দেশে প্রথম স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক প্রবর্তন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের পদক প্রদান করা হয়েছে।’ বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশকে চরম সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একদিকে গণতন্ত্র ও অন্যদিকে জঙ্গিবাদের সংকট। এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি মাত্র পথ হচ্ছে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসা। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ পথ থেকে সরে এসে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। অন্যথায় কোনোদিনই জাতি আপনাদের ক্ষমা করবেন না এবং ভবিষ্যতে এর জবাব দিতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জিয়ার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া

আপলোড টাইম : ০১:১১:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৬

image_1646_252535সমীকরণ ডেস্ক: প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার ও পদকটি জাতীয় জাদুঘর থেকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে বিএনপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গোটা জাতি উদ্বিগ্ন ও বিস্মিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রিসভা কমিটির এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী ও দুর্ভাগ্যজনক। এর মধ্যদিয়ে তারা জাতিকে বিভক্ত করতে চায়। এটা যে কতটা নোংরা সিদ্ধান্ত সেটা যখন সরকার বুঝবে তখন আর শোধরানোর সময় থাকবে না। শুক্রবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, যিনি পদক প্রবর্তন করলেন তিনি বাদ। কিন্তু পদক থাকবে, তার কীর্তিও থাকবে। এটা যে কত বড় সংকীর্ণতা, আত্মঘাতী ও নোংরা কাজ; তা আওয়ামী লীগ যেদিন বুঝবে সেদিন আর শোধরানোর সময় থাকবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দলীয় মূল্যায়ন আমরা সবাই জানি। কিন্তু দলীয় মূল্যায়নে রাষ্ট্র চলে না, রাষ্ট্র সবার। এই রাষ্ট্রকে যদি দলীয় বানাতে চান তখন রাষ্ট্র থাকবে দলই থাকবে না।’ তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু ইতিহাসে নয়, বহু মানুষের হৃদয়ে আছেন পরম শ্রদ্ধায়। কাজেই তিনি স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবেনই। যারা গায়ের জোরে নোংরাভাবে তাকে মুছতে চাইছেন, তাতে তিনি ফিরলে হয়তো একইভাবে তারাও মুছে যেতে পারেন।’ বিএনপি সরকার ২০০৩ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে একইসঙ্গে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক দিয়েছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরম ঔদার্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই সম্মাননা বিতর্কিত এবং অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভার কমিটিতে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বর্তমান আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করছে, তা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। হতাশা এবং দুর্ভাগ্যের সঙ্গে লক্ষ করছি, এই সরকার ঐক্যের রাজনীতিকে বিসর্জন দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে গোটা জাতিকে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে বিভক্ত করে ফেলছেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামরিক ক্ষেত্রে শৌর্যবীর্য ছাড়া আর কোনো ক্ষেত্রে মেধা, কৃতিত্ব যোগ্যতা ও নেতৃত্বের স্বীকৃত হিসেবে দেশি-বিদেশি কাউকেই কোনো রাষ্ট্রীয় খেতাব, পদক ও ভূষণে বিভূষিত করাকে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। একাডেমিক অনার ছাড়া বিদেশ থেকে কোনো সম্মাননা অর্জনকেও রাষ্ট্রপতি প্রাক অনুমোদন গ্রহণ করার শর্ত যুক্ত করেছিল। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় সম্মাননার ওপর আরোপিত সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ১৯৭৭ সালে দেশে প্রথম স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক প্রবর্তন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের পদক প্রদান করা হয়েছে।’ বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশকে চরম সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একদিকে গণতন্ত্র ও অন্যদিকে জঙ্গিবাদের সংকট। এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি মাত্র পথ হচ্ছে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসা। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ পথ থেকে সরে এসে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। অন্যথায় কোনোদিনই জাতি আপনাদের ক্ষমা করবেন না এবং ভবিষ্যতে এর জবাব দিতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আযম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।