ইপেপার । আজ রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার গোপালপুর গ্রামের রুবেল হত্যাকান্ডের ৬ বছর পুলিশের কাছে পলাতক, অথচ প্রকাশ্যে ঘুরছে আসামী লিটন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:১৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৫২০ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার গোপালপুর গ্রামের রুবেল হত্যাকান্ডের ৬ বছর
পুলিশের কাছে পলাতক, অথচ প্রকাশ্যে ঘুরছে আসামী লিটন
Chuadanga Murderer Mizanur Rahman Liton 07.08.2017বিশেষ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে একটি হত্যাকান্ডের ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই মামলার আসামী জুড়ানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও লক্ষীপুর গ্রামের সালাউদ্দিন মজনুর ছেলে মিজানুর রহমান লিটন (৩৫) এখনও আদালতে যায়নি, জামিনও নেইনি। সে প্রকাশ্যে ৬ বছর ধরে শহরের প্রদীপন বিদ্যাপিঠের কাছে বাড়ি নিয়ে থাকলেও পুলিশ বলছে পলাতক। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে সে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২০১১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাতে ভাত খেতে যাওয়ার আগে কলাবাড়ি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে রুবেল (১৮) কে ‘কথা’ আছে বলে কয়েক জন তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর দিন অর্থাৎ ১১ সেপ্টেম্বর ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের তারেক চৌকিদারের ছেলে মিনারুল ইসলাম (২৭), ইয়াকুব আলীর ছেলে সুলতান (২০) ও জামালের ছেলে হাসু ( ২৩) নিহত রুবেলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার বাবা মা’র উদ্দেশ্যে বলে ‘তোমাদের ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে’। তারপর গোপালপুর গ্রামের মাঠপাড়ায় ঝন্টু ফকিরের বাড়ির ২০০ গজ দুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা রুবেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।     এরপর নিহত রুবেলের বাবা দামুড়হুদা গ্রামের মরহুম ভাদু শেখের ছেলে আব্দুল খালেক বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় ১৫ জনকে আসামীর বিরুদ্ধে ৩০২ ও ৩৪ ধারায় মামলা করে। মামলাটি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রোকনুজ্জামানের দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।  নম্বর সেশন-২৫৬/২০১৬। মামলার দিন ধার্য রয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর’২০১৭। আদালত সূত্রে আরো জানা যায়, হত্যা মামলার আসামী মিজানুর রহমান লিটনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য গত ২০১৫ সালে ১১ আগষ্ট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও সে হাজির হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মিজানুর রহমান লিটন তেমন লেখাপড়া না জানলেও দামুড়হুদা উপজেলার লক্ষীপুর উম্বাত বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত। সে ২৭৫ একর দলকা লক্ষীপুর গ্রামের বিলের দায়িত্বে ছিলো। মৎস্যজীবী না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ায় মিজানুর রহমান লিটন সেখান থেকে সরে এসে তার অনুগত কয়েক জনকে ‘ভাই ভাই মৎস্যজীবী সমিতি’ তে ঢুকিয়ে দিয়ে নেপথ্যে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখারও অভিযোগ রয়েছে। হত্যা মামলার আসামী মিজানুর রহমান লিটন আদালতে গেলো না, জামিনও নিলোনা, তার বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারী পরওয়ানা থাকলেও সে প্রকাশ্যে চুয়াডাঙ্গা শহরে বাড়ি ভাড়া করে রয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে সে পলাতক; এ প্রসঙ্গ এএসপি (সার্কেল) কলিমউল্লাহ বলেন, মামলার আদেশ দেখে বিষয়টির ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আসামী প্রকাশ্যে থাকলেও কি কারনে তাকে প্রেপ্তার করা হলো না তা খতিয়ে দেখা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার গোপালপুর গ্রামের রুবেল হত্যাকান্ডের ৬ বছর পুলিশের কাছে পলাতক, অথচ প্রকাশ্যে ঘুরছে আসামী লিটন

আপলোড টাইম : ০৫:১৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অগাস্ট ২০১৭

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার গোপালপুর গ্রামের রুবেল হত্যাকান্ডের ৬ বছর
পুলিশের কাছে পলাতক, অথচ প্রকাশ্যে ঘুরছে আসামী লিটন
Chuadanga Murderer Mizanur Rahman Liton 07.08.2017বিশেষ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে একটি হত্যাকান্ডের ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই মামলার আসামী জুড়ানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও লক্ষীপুর গ্রামের সালাউদ্দিন মজনুর ছেলে মিজানুর রহমান লিটন (৩৫) এখনও আদালতে যায়নি, জামিনও নেইনি। সে প্রকাশ্যে ৬ বছর ধরে শহরের প্রদীপন বিদ্যাপিঠের কাছে বাড়ি নিয়ে থাকলেও পুলিশ বলছে পলাতক। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে সে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২০১১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাতে ভাত খেতে যাওয়ার আগে কলাবাড়ি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে রুবেল (১৮) কে ‘কথা’ আছে বলে কয়েক জন তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর দিন অর্থাৎ ১১ সেপ্টেম্বর ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের তারেক চৌকিদারের ছেলে মিনারুল ইসলাম (২৭), ইয়াকুব আলীর ছেলে সুলতান (২০) ও জামালের ছেলে হাসু ( ২৩) নিহত রুবেলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার বাবা মা’র উদ্দেশ্যে বলে ‘তোমাদের ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে’। তারপর গোপালপুর গ্রামের মাঠপাড়ায় ঝন্টু ফকিরের বাড়ির ২০০ গজ দুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা রুবেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।     এরপর নিহত রুবেলের বাবা দামুড়হুদা গ্রামের মরহুম ভাদু শেখের ছেলে আব্দুল খালেক বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় ১৫ জনকে আসামীর বিরুদ্ধে ৩০২ ও ৩৪ ধারায় মামলা করে। মামলাটি বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রোকনুজ্জামানের দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।  নম্বর সেশন-২৫৬/২০১৬। মামলার দিন ধার্য রয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর’২০১৭। আদালত সূত্রে আরো জানা যায়, হত্যা মামলার আসামী মিজানুর রহমান লিটনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য গত ২০১৫ সালে ১১ আগষ্ট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও সে হাজির হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মিজানুর রহমান লিটন তেমন লেখাপড়া না জানলেও দামুড়হুদা উপজেলার লক্ষীপুর উম্বাত বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত। সে ২৭৫ একর দলকা লক্ষীপুর গ্রামের বিলের দায়িত্বে ছিলো। মৎস্যজীবী না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ায় মিজানুর রহমান লিটন সেখান থেকে সরে এসে তার অনুগত কয়েক জনকে ‘ভাই ভাই মৎস্যজীবী সমিতি’ তে ঢুকিয়ে দিয়ে নেপথ্যে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখারও অভিযোগ রয়েছে। হত্যা মামলার আসামী মিজানুর রহমান লিটন আদালতে গেলো না, জামিনও নিলোনা, তার বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারী পরওয়ানা থাকলেও সে প্রকাশ্যে চুয়াডাঙ্গা শহরে বাড়ি ভাড়া করে রয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে সে পলাতক; এ প্রসঙ্গ এএসপি (সার্কেল) কলিমউল্লাহ বলেন, মামলার আদেশ দেখে বিষয়টির ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আসামী প্রকাশ্যে থাকলেও কি কারনে তাকে প্রেপ্তার করা হলো না তা খতিয়ে দেখা হবে।