পূর্ব শত্রুতার জেরে গাংনীর ইউপি সদস্যের ভাইকে কুপিয়ে হত্যা : সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ারসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা : আটক ১
- আপলোড টাইম : ০৬:১২:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭
- / ৪৩৪ বার পড়া হয়েছে
গাংনী অফিস: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামে এনামুল হক (৪২) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার ভোর ৪টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত শনিবার রাতে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তিনি ওই গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে এবং ইউপি সদস্য আজমাইন হোসেন টুটুলের ভাই। তবে, ইউপি সদস্য টুটুল দাবি করেছেন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাবেক ইউপি সদস্য ও উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার ও তার লোকজন এনামুলকে কুপিয়ে আহত করে। সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমানকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে নাহিদ হোসেন নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাংনী নওয়াপাড়া গ্রামে বিয়ের দাওয়াত থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন এনামুল। গ্রামের পার্শ্ববর্তী নবীনপুর ঈদগাহ সংলগ্ন হাজির বাগানের কাছে পৌঁছালে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে কয়েকজন। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এনামুলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসার আগেই তাকে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা এনামুলকে উদ্ধার করে প্রথমে মেহেরপুর জেনারেল হাসপতালে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে মারা যায় এনামুল।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন আগে গ্রামের একজনের জমি-কেনাবেচা নিয়ে উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান ও বর্তমান ইউপি টুটুলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে হামলা পাল্টা হামলায় আহত এবং মামলা করা হয়। পরে উভয়পক্ষ হাজতবাসের পর সম্প্রতি জামিনে বের হয়ে আসে। এরমধ্যে হঠাৎ গত শনিবার রাতে এ হামলার ঘটনা। গতকাল রোববার রাজশাহীতে এনামুলের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এঘটনায় গাংনী থানায় সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমানকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাবেক ইউপি সদস্য অভিযুক্ত আতিয়ার রহমান জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং আমাকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে। যে নিহত হয়েছে সে একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী গরুচুরি, ডাকাতিসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত। তার শত্রুতার শেষ নেই। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে, আমার উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও সে বিএনপির একজন ক্যাডার ছিলো। বিএনপির আমলে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানী করেছে। তার প্রতিশোধ হিসেবেই কেউ তাকে মারতে পারে। তাছাড়া আমার বাড়ি ছাড়া ঘটনাস্থল অনেক দূর। তাই সেখানে গিয়ে একটি ঘটনা ঘটানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, হামলার পরপর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এটনায় জড়িত এজাহারভুক্ত আসামী নাহিদ হোসেনকে রোববার ভোরে আটক করা হয়েছে।