চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত দু’টি ওয়ার্ডের নির্বাচন ২০ আগস্ট
- আপলোড টাইম : ০৫:০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭
- / ৫৯০ বার পড়া হয়েছে
সাধারণ সদস্য পদে ৩ নং ওয়ার্ডে ৭ : ১৫ নং ওয়ার্ডে ২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল
চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত দু’টি ওয়ার্ডের নির্বাচন ২০ আগস্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক: সংশোধিত প্রজ্ঞাপন করে মনোনয়নপত্র দাখিলের ২০দিন সময় বাড়ানোর পর গতকাল সোমবার ছিল দাখিলের শেষদিন। এদিনের মধ্যে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১টি সাধারণ সদস্য পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ৭ জন এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১টি সাধারণ সদস্য পদের বিপরীতে ২ জন। বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন ১০ জন প্রার্থী। দাখিল করেছেন ৯ জন প্রার্থী। এরা হলেন- ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদপ্রার্থী মো. আকলাকুর রহমান, মো. আব্বাস আলী, মো. জহুরুল ইসলাম, মো. নুরুল আমিন, মো. মহাবুল হোসেন, মো. মানিক উজ্জামান ও মো. শফিউদ্দীন এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সেলিম রেজা ও মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তবে অজ্ঞাত কারণে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য পদপ্রার্থী আসাদুর রহমান মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি।
জেলা নির্বাচন অফিসার মো.আনিছুর রহমান জানান, অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধিরাই ভোটার হওয়ায় এ দু’টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২৬জন। এদের মধ্যে ৩নং ওয়ার্ডে ১০জন পুরুষ ভোটার ও ৩জন নারী ভোটার এবং ১৫ নং ওয়ার্ডেও ১০জন পুরুষ ও ৩জন নারী ভোটার তাদের নিজ নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত করবেন।
স্থগিত দু’টি আসনের নির্বাচন নিয়ে ১৫ নং ওয়ার্ডে খুব বেশি প্রতিযোগিতা না থাকলেও ৩ নং ওয়ার্ডে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে ১পদের প্রার্থী হয়েছেন ৭ জন। ইতিমধ্যে ২টি ওয়ার্ডে ২জন প্রার্থী নির্বাচনের বিপরীতে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ৯ জন প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, ৩নং ওয়ার্ড সদস্য পদে মনোনয়ন উত্তোলন করেছেন জেলা সদরের শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ডিঙ্গেদহ শ্রীকোল গ্রামের মো. বজলুর রহমানের পুত্র মো. আকলাকুর রহমান, একই গ্রামের মো. কালাম হোসেনের পুত্র মো. জহুরুল ইসলাম, গাড়াবাড়িয়া-দীননাথপুর গ্রামের মো. সরিয়ত উল্লাহ’র পুত্র মো. মানিক উজ্জামান, বেগমপুর ইউনিয়নের মো. আবু বক্করের পুত্র মো. আব্বাস আলী, একই গ্রামের মো. মইনুদ্দীন আহমেদের পুত্র মো. শফিউদ্দীন, নেহালপুর গ্রামের মৃত খোয়াজ আলীর পুত্র মো. নুরুল আমিন, জেলা সদরের জাফরপুরের মো. আলী মল্লিকের পুত্র মো. মহাবুল হোসেন। অন্যদিকে ১৫ নং ওয়ার্ড সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জীবননগর উপজেলাধীন উথলী ইউপির সাবেক সদস্য মো. সেলিম রেজা। তিনি সন্তোষপুর গ্রামের মৃত শামসুদ্দীন বিশ্বাসের পুত্র এবং খয়েরহুদা গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের পুত্র মোহাম্মাদ মাহাবুবুর রহমান।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলাধীন মাখালডাঙ্গা, নেহালপুর ও বেগমপুর ইউনিয়ন নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড গঠিত এবং জীবননগর উপজেলার বৃহত্তর উথলী ইউনিয়ন ভেঙ্গে উথলী, মনোহরপুর ও কেডিকে ইউনিয়ন গঠন করা হলে এ ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে ১৫নং ওয়ার্ড গঠন করা হয়। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অনীহা ও জটিলতা থাকায় আটকে ছিল এ দু’টি ওয়ার্ডের নির্বাচন। সে সময় বলা হয় যে সমস্ত জনপ্রতিনিধিরা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েও ক্ষমতায় আছে তাঁরা ভোটার হিসেবে গণ্য হবে না। এদিকে ভোটার যাচাই বাছাই’র একটি নির্দিষ্ট সময় পর তাদেরকে ভোটার হিসেবে অনুমোদন করা হয়। সবকিছু ঠিকটাক থাকলে আগামী ২০ আগস্ট সাধারণ সদস্য পদে স্থগিত ৩ ও ১৫নং ওয়ার্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে সাবেক শংকরচন্দ্র বর্তমান মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের শ্রীকোল গ্রামের প্রার্থীদের নিয়ে অন্যান্য প্রার্থী ও এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এনিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনা ও অভিযোগ করা হচ্ছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন ভেঙ্গে মাখালডাঙ্গা ও শংকরচন্দ্র দু’টি ইউনিয়ন গঠন করা হলে এ ওয়ার্ডের মনোনয়ন দাখিলকারী সদস্য পদপ্রার্থী শ্রীকোল গ্রামের আকলাকুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন হাইকোর্টে রিট করে। তাদের দাবি ইউনিয়ন ভাঙলেও শ্রীকোল গ্রামটি মাখালডাঙ্গা নয়, শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের মধ্যেই রাখতে হবে। এ নিয়ে জটিলতার সমাধান না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে এ দু’টি ইউপি নির্বাচন। আবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সেই মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের হয়েই তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ নির্বাচনে অংশ নিতে আকলাকুর রহমানের বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে অন্যান্য প্রার্থী ও ভোটাররা হতবাক। তাদের দাবি শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন থেকে শ্রীকোল গ্রাম আলাদা করার বিরুদ্ধে রিট করে আবার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন মেনে নিয়েই তিনি নির্বাচন করছেন। এখন মহামান্য হাইকোর্ট শ্রীকোল গ্রামটি শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের মধ্যে রেখে রায় দিলে জেলা পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক প্রার্থী হয়ে যাবে। ফলে ৩ নম্বর ওয়ার্ডবাসী জেলা পরিষদের সুবিধা বঞ্চিত হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে আকলাকুর রহমান বলেন, সে সময় শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের মধ্যে শ্রীকোল গ্রাম নিয়ে থাকতে রিট করেছিলাম। এখন মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্যেই শ্রীকোল গ্রামটি রেখে বাংলাদেশ গেজেট নাম প্রকাশ করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আমাদের রিটের পক্ষে রায় দেওয়ার সুযোগ না থাকায় আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার জিয়াউদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ১০ অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের ০৩ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদের নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ২১ জুন জারীকৃত সময়সূচী সংশোধন করে নতুন সময়সূচী ধার্য করা হয়েছে। সংশোধিত সময়সূচী অনুযায়ী আগামী ০৪ জুলাই’র পরিবর্তে ২৪ জুলাই সকাল ৯টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসার/সহকারী রির্টার্নিং অফিসারের নিকট/অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ০৬ জুলাই’র পরিবর্তে ২৬ জুলাই বর্ধিত করা হয়েছে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৩ জুলাই’র পরিবর্তে আগামী ০২ আগস্ট পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ ও নির্বাচন আগামী ৩০ জুলাই’র পরিবর্তে ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।