ইপেপার । আজ রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে মাদকসেবন ও নারী ব্যবসার অভিযোগ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭
  • / ৪১৪৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে মাদকসেবন ও নারী ব্যবসার অভিযোগ!
চিহ্নিত বেশকয়েকটি হোটেলে অবৈধ ব্যবসার ব্যাপক অভিযোগ থাকলেও নেই পুলিশি অভিযান!
বিশেষ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা শহর ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে মাদক ও নারীব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ আবাসিক হোটেলে ভাড়া দেয়া হচ্ছে ঘন্টা চুক্তিতে। ঘন্টা হিসেবে ভাড়া না নিলেও অনেকে হোটেলের ম্যানেজারের মাধ্যমে দিনে বা রাতে দুই/তিন ঘন্টা সময় কাটায়। আবার কোন কোন হোটেল স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় যুবকদের আড্ডা এবং মাদকসেবনের স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ফলে এসব হোটেলে মাদক ব্যবহার ও নারী ব্যবসা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। তবে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মিদের চাপে অনেক সময় রুম দিতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন হোটেল মালিক। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা শহরের চিহ্নিত বেশকয়েকটি আবাসিক হোটেলে মাদক ও নারী ব্যবসার অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও, পুলিশ প্রশাসনের নীরবতায় এসব অনৈতিক ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতনমহল। এছাড়া, চিহ্নিত বিভিন্ন আবাসিক হোটেল মালিকরা পুলিশের কতিপয় সদস্যকে মাসোহারা দিয়ে এসব ব্যবসা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে হোটেল ব্যবসা রয়েছে পুরাতন সোনার বাংলা বোর্ডিং এর হোটেল অবসর, হোটেল অবকাশ, হোটেল প্রিন্স, হোটেল অন্তুরাজ, শয়ন বিলাশ, হোটেল রয়েল ব্লু, হাসুমা কটেজ, হোটেল ভিআইপি, চুয়াডাঙ্গা আবাসিক হোটেল। এর মধ্যে হোটেল ভিআইপি, হাসুমা কটেজ, চুয়াডাঙ্গা আবাসিক হোটেল নতুন হলেও অন্যান্য হোটেলগুলো দীর্ঘদিনের পুরানো। তবে আল মেরাজ হোটেলের পরিবর্তে হোটেল রয়েল ব্লু করা হয়েছে।
এসব হোটেলগুলোর মধ্যে অধিকাংশ হোটেলেই মাদক ও নারী ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ মূলত পুরানো আবাসিক হোটেলগুলোতেই। তবে চুয়াডাঙ্গা শহরে নতুন কয়েকটি বিলাশবহুল হোটেল তৈরি হয়েছে। ওসব হোটেলগুলোতে অবৈধ কাজকর্মের কোন অভিযোগ পাওয়া না গেলেও, সেখানে উচ্চ পর্যায়ের লোকজনের নিয়মিত যাওয়া-আসা আছে বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল মালিক বলেন, অনেক সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মিদের চাপের মুখে পড়ে হোটেলের রুম দিতে হয়। তারা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার কথা বলে রুম নেয়। রুমের মধ্যে কি করে তা আর দেখা সম্ভব হয়না।
চুয়াডাঙ্গা শহরে অবৈধ ব্যবসার চিহ্নিত কয়েকটি আবাসিক হোটেল থাকলেও নেই প্রশাসনের কোন নজরদারি। চুয়াডাঙ্গার আশপাশের জেলাগুলোতে আবাসিক হোটেলে পুলিশি অভিযান চালানো হলেও চুয়াডাঙ্গায় তা ভিন্ন। চুয়াডাঙ্গার বেশকিছু হোটেলে ব্যাপক অভিযোগ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ প্রশাসনের কোন অভিযান বা পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, হোটেল মালিকরাও কোন নিয়ম মানেন না। হোটেলে কতজন বর্ডার উঠলো এ বিষয়ে স্থানীয় থানার ওসিকে জানাতে হবে। কিন্তু হোটেল মালিকরা তা করেন না। তাদেরকেও নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে। তবে আবাসিক হোটেলে তাৎক্ষণিক কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না। আমরা আবাসিক হোটেল মালিকদের ডেকে এ বিষয়ে কথা বলবো। এরপরও সেখানে এ ধরণের অভিযোগ পেলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে মাদকসেবন ও নারী ব্যবসার অভিযোগ!

আপলোড টাইম : ০৫:৩৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০১৭

চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে মাদকসেবন ও নারী ব্যবসার অভিযোগ!
চিহ্নিত বেশকয়েকটি হোটেলে অবৈধ ব্যবসার ব্যাপক অভিযোগ থাকলেও নেই পুলিশি অভিযান!
বিশেষ প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা শহর ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে মাদক ও নারীব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগ আবাসিক হোটেলে ভাড়া দেয়া হচ্ছে ঘন্টা চুক্তিতে। ঘন্টা হিসেবে ভাড়া না নিলেও অনেকে হোটেলের ম্যানেজারের মাধ্যমে দিনে বা রাতে দুই/তিন ঘন্টা সময় কাটায়। আবার কোন কোন হোটেল স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় যুবকদের আড্ডা এবং মাদকসেবনের স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ফলে এসব হোটেলে মাদক ব্যবহার ও নারী ব্যবসা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। তবে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মিদের চাপে অনেক সময় রুম দিতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন হোটেল মালিক। এদিকে, চুয়াডাঙ্গা শহরের চিহ্নিত বেশকয়েকটি আবাসিক হোটেলে মাদক ও নারী ব্যবসার অভিযোগ দীর্ঘদিনের হলেও, পুলিশ প্রশাসনের নীরবতায় এসব অনৈতিক ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতনমহল। এছাড়া, চিহ্নিত বিভিন্ন আবাসিক হোটেল মালিকরা পুলিশের কতিপয় সদস্যকে মাসোহারা দিয়ে এসব ব্যবসা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে হোটেল ব্যবসা রয়েছে পুরাতন সোনার বাংলা বোর্ডিং এর হোটেল অবসর, হোটেল অবকাশ, হোটেল প্রিন্স, হোটেল অন্তুরাজ, শয়ন বিলাশ, হোটেল রয়েল ব্লু, হাসুমা কটেজ, হোটেল ভিআইপি, চুয়াডাঙ্গা আবাসিক হোটেল। এর মধ্যে হোটেল ভিআইপি, হাসুমা কটেজ, চুয়াডাঙ্গা আবাসিক হোটেল নতুন হলেও অন্যান্য হোটেলগুলো দীর্ঘদিনের পুরানো। তবে আল মেরাজ হোটেলের পরিবর্তে হোটেল রয়েল ব্লু করা হয়েছে।
এসব হোটেলগুলোর মধ্যে অধিকাংশ হোটেলেই মাদক ও নারী ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ মূলত পুরানো আবাসিক হোটেলগুলোতেই। তবে চুয়াডাঙ্গা শহরে নতুন কয়েকটি বিলাশবহুল হোটেল তৈরি হয়েছে। ওসব হোটেলগুলোতে অবৈধ কাজকর্মের কোন অভিযোগ পাওয়া না গেলেও, সেখানে উচ্চ পর্যায়ের লোকজনের নিয়মিত যাওয়া-আসা আছে বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হোটেল মালিক বলেন, অনেক সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মিদের চাপের মুখে পড়ে হোটেলের রুম দিতে হয়। তারা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার কথা বলে রুম নেয়। রুমের মধ্যে কি করে তা আর দেখা সম্ভব হয়না।
চুয়াডাঙ্গা শহরে অবৈধ ব্যবসার চিহ্নিত কয়েকটি আবাসিক হোটেল থাকলেও নেই প্রশাসনের কোন নজরদারি। চুয়াডাঙ্গার আশপাশের জেলাগুলোতে আবাসিক হোটেলে পুলিশি অভিযান চালানো হলেও চুয়াডাঙ্গায় তা ভিন্ন। চুয়াডাঙ্গার বেশকিছু হোটেলে ব্যাপক অভিযোগ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ প্রশাসনের কোন অভিযান বা পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান, হোটেল মালিকরাও কোন নিয়ম মানেন না। হোটেলে কতজন বর্ডার উঠলো এ বিষয়ে স্থানীয় থানার ওসিকে জানাতে হবে। কিন্তু হোটেল মালিকরা তা করেন না। তাদেরকেও নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে। তবে আবাসিক হোটেলে তাৎক্ষণিক কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না। আমরা আবাসিক হোটেল মালিকদের ডেকে এ বিষয়ে কথা বলবো। এরপরও সেখানে এ ধরণের অভিযোগ পেলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।