দমুড়হুদা উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষনা করলেও দর্শনায় ভিক্ষুকের মেলা
- আপলোড টাইম : ০৫:৩৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০১৭
- / ৪১৮ বার পড়া হয়েছে
ওয়াসিম রয়েল: “ভিক্ষা বৃত্তিকে না বলুন, ভিক্ষুকের হাত হোক কর্মীর হাত” এই স্লোগানকে সামনে রেখে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিলেও চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনাসহ আশপাশ অঞ্চলে ভিক্ষুকের মেলা দেখা গেছে। অথচ দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলাটি ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। কোথা থেকে আসছে এ সকল ভিক্ষুক? নাকি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাদেরকে ভিক্ষাবৃত্তি তালিকা অনুযায়ী সাহায্য-সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য তারাই কি এ ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে?
আবার এমনো হতে পারে এসকল ভিক্ষুকদের নাম তালিকায় উঠে আসেনি। উপজেলা প্রশাসন একটু সজাগ হলে হয়তো এ সকল ভিক্ষুকদের ধরে আইনের আওতায় এনে ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গড়তে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করবেন বলে সুধীমহল আশা রাখে।
জানা গেছে, সরকার দেশকে মডেল ও মধ্যমায়ের দেশে রুপান্তরিত করার লক্ষে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেই চলেছে এবং ভিক্ষাবৃত্তি ও আত্মকর্মসংস্থান বেচে নেওয়ার জন্য বার বার সকলকে আহবান করছে। কারন একটি দেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌছাতে হলে ঐ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হতে হয়।
কোন ভিক্ষাবৃত্তি নয় ভিক্ষুকের হাত একটি যেকোন কর্মের হাতে পরিনত করতে হবে। এমতাবস্তায় ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গড়তে সরকার ও সরকারের প্রশাসন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যন্ত সকল ভিক্ষুকদের তালিকা করে তাদের কর্মস্থান নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন রকম সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এলাকাসুত্রে জানা যায়, পুরুষ ভিক্ষুকদের আত্মকর্মসংস্থান হিসাবে চা বিক্রিসহ বিভিন্ন আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ঐ কাজের বিভিন্ন উপকরনসহ নগত অর্থ প্রদান করা হয়েছে এবং মহিলা ভিক্ষুকদের জন্য হাঁস, মুরগীসহ ছাগল পর্যন্ত প্রদান করা হয়েছে। যাতে করে তারা ভিক্ষাবৃত্তি না করে ঐ সকল উপকরন দিয়ে নিজেরা জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এসকল আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিলেও দেখা যায় অনেক ভিক্ষুক তাদের ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন দর্শনা পৌরশহরে প্রত্যেক শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর প্রায় মসজিদের সামনেই এসকল ভিক্ষুদের দেখা যায়। আবার ঐতিহ্যবাহী কেরু এন্ড কোম্পনীর জেনারেল অফিসের সামনে বেতন দেওয়ার দিন বেশ কিছু ভিক্ষুকের আগমন ঘটে। এসকল ভিক্ষুকদের মধ্যে রয়েছে দক্ষিন চাঁদপুর গ্রামের রেল কোলনী সংলগ্ন মৃত ফকির মন্ডলের স্ত্রী বানু (৭০), দক্ষিন চাঁদপুর বৌ বাজার মোফাজ্জেলের স্ত্রী লিলি (৬০) সন্তোসপুর বটতলার নুর করিমের স্ত্রী হালিমা খাতুন(৭০) ভাতা পাইনা, আকন্দবাড়িয়া আবাসনের মকছেদ আলীর স্ত্রী ফুলি বেগম(৫০) ভাতা পাইনা, একই পাড়ার সাহাজানের স্ত্রী রমেছা বেগম(৬৫) ভাতা পায়, দর্শনা আজিমপুরের মৃত ইদ্রিস আলির স্ত্রী খাদিজা বেগম(৭০) ভাতা পাইনা, দামুড়হুদা বেগেপাড়া গ্রামের আদম আলীর ছেলে শাহাজান(৫৫) সে প্রতিবন্ধি ভাতা পায় সাত হাজার দুইশত টাকা, হল্ট চাঁদপুরের তেতুলতলা পাড়ার মৃত লোকো মন্ডলের স্ত্রী দোলন নেসা (৬০) হালিমা খাতুন(৪৫) স্বামী পরিত্যাক্তা এ সকল ভিক্ষুকদের মধ্যে অনেকের সাথে কথা বললে বেশ কয়েকজন জানায় তারা সরকারিভাবে কোন প্রকার ভাতা পায়না। আবার কয়েকজন বলে আমরা ভাতা পায় কিন্তু এত অল্প টাকা আমাদের ঔষধ কিনতে ফুরিয়ে যায় খাবো কি। আবার তাদেরকে একথা বললে যে আপনারা ভিক্ষা করছেন যদি পুলিশে দেখে তাহলে আপনাদের ধরে নিয়ে যাবে তখন একজন দুজন করে সকলে পালিয়ে যায়। তাহলে কি ভিক্ষুক মুক্ত খাতায় নামেই দামুড়হুদা উপজেলা ভিক্ষুক মুক্ত থাকবে নাকি এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কোন ভুমিকা রাখবে না এমনই প্রশ্ন-উত্তরে দিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে এলাকার সুধীসমাজ।