দর্শনা দোস্ত গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে ১৯টি মামলা : আতঙ্কে কাটছে দিন : যে কোন সময় ঘটতে পারে মৃত্যুর মত ঘটনা
- আপলোড টাইম : ০৪:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭
- / ৬১৯ বার পড়া হয়েছে
দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গা সদরের বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে গত সাড়ে চার বছরে দুটি পরিবারের মধ্যে ১৯টি পক্ষে-বিপক্ষে মামলা হয়েছে। এছাড়া বসতবাড়ী ছেড়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে হান্নানের পরিবার। যে কোন সময় মৃত্যুর মত ঘটনাও ঘটতে পারে বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা। প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের মসজিদপাড়ার মৃত নুরুল হকের ৫টি ছেলে। বড় ছেলে পীর মোহাম্মদ, মেজো আলী আহম্মদ, সেজে হান্নান, নো ভাই মান্নান ও ছোট ভাই বোরহান। তাদের পিতার মৃত্যুর পর পিতার নামের জমি ৫ ভাই সমান ভাবে ভাগ করে নেয়। এছাড়া স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী আনতাশা বিবি স্বামীর জমির অংশের মধ্যে ৬ বিঘা জমি পায়। এই জমির মধ্যে ১৯কাঠা জমি তাদের মা আনতাশা বিবি হান্নানের নামে রেজিষ্টি করে দেয়। বাকি জমি ৪ ভাইয়ের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়। মান্নানের ভিটা জমি না থাকায় গ্রাম্য শালিসে হান্নান ঐ ১৯ কাঠা জমির মধ্যে ৩ কাঠা জমি মান্নানের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়। এমত অবস্থায় হান্নানের নামে তার মায়ের দিয়ে যাওয়া ১৬ কাঠা ও বোনের কাছ থেকে কিনে নেওয়া ৫ কাঠা জমির দখল দেয়না বলে হান্নান অভিযোগ করে। ৫ ভাইয়ের মধ্যে ৪ ভাই একদিকে ও হান্নান একলা এক দিকে হওয়ায় শক্তিতে পেরে দিচ্ছে না এলাকাবাসীর ধারনা। দীর্ঘদিনের এ জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মারামারি, চাদাবাজি, নারী নির্যাতনসহ ৫ ভাইয়ের মধ্যে মোট ১৯ টি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে গ্রাম্য মন্ডল মাতব্বার ৬ থেকে ৭ বার মিমাংশা করে দিলেও কোন লাভ হয়নি। পাশের গ্রাম চাদপুর থেকে কয়েকবার মন্ডলরা যেয়ে মিমাংশায় নিয়ে আসতে পারেনি দুটি পরিবারের। বেশ কিছুদিন আগে হিজলগাড়ীর পুলিশ মিমাংশার জন্য বেশ কয়েকবার ডাকলে হান্নান গেলেও তার অন্য ভাইয়েরা যায়নি। বেগমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গ্রামে শালিস বসিয়ে তার বিচার মানেনি তারা চার ভাই। সর্বশেষ দর্শনা আ. লীগ দলীয় কার্যালয়ে আ: নেতা আলী মুনসুর বাবু মিমাংসার জন্যে ডাক দিলে তারা চার ভাই একের পর এক দিন ঘোরাতে থাকে। এখানোও কোন মিমাংসা হয়নি। একের পর এক মামলার পাল্লা ভারি হতেই চলেছে। মামালার পরপর পুলিশ আসলে দু এক দিন শান্ত থাকলেও পরবর্তীতে আগের মতই মারামারি হানাহানি হতে থাকে বলে এলাকাবাসী জানায়। এমত আবস্থায় হান্নান তার চার ভইয়ের গর্জন দেখে বাড়িতে থাকতে পারছে না দীর্ঘদিন। কখন না কখন তার উপর আক্রমন করে তার ভাইয়েরা এরকম আতঙ্ক বিরাজ করছে তার পরিবারের সদস্যরা। চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতাই ভুগছে হান্নানের পরিবার। এ ধারাবাহিকতাই গত শনিবার সকালে হান্নান তার বাড়ি সংলগ্ন কলা গাছ থেকে দুই কান্দি কলা পেড়ে বিক্রি করার উদ্যেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরপরই তার ঐ চার ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা তার উপর আক্রমন করতে গেলে সাইকেল ও কলার কান্দি ফেলে পাশ্ববর্তী মসজিদের ভিতরে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
এসময় গ্রামের ইউপি সদস্য আবু সালেহ তাকে রক্ষা করে বাড়িতে দিয়ে আসে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আবু সালেহর সাথে কথা বললে তিনি বলেন ওরা আমাদের কথা শোনে না আমাদের বিচারও মানে না। তবে এলাকাবাসী ধারনা করছে প্রশাসন যদি শক্ত ভুমিকা ও মিমাংশা করার পদক্ষেপ গ্রহন করে তাহলে হয়তো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে স্বাভাবিক জীবন-জাপনে ফিরে আসতে পারে তাদের ৫ ভাইয়ের পরিবার।