চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনে আকস্মিক দাঁড়িয়ে গেলো মৈত্রী এক্সপ্রেস : অল্পের জন্য শত শত প্রাণ রক্ষা
- আপলোড টাইম : ০৫:২৬:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০১৭
- / ৭১১ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনে আকস্মিক দাঁড়িয়ে গেলো মৈত্রী এক্সপ্রেস : অল্পের জন্য শত শত প্রাণ রক্ষা
দায়িত্ব অবহেলা : স্টেশন মাস্টার-কেবিন মাস্টার-গেটম্যান একে অপরকে দুষছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সময় দুপুর ১টা। রহনপুর হতে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ১৬নং মহানন্দা ডাউন ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনে ঢুকবে কেবিন মাস্টারকে এমন সংকেত দেন স্টেশন মাস্টার। সুইচ কেবিন থেকে গেটম্যানকে জানানো হলে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। মহানন্দা প্লাটফর্মে থামলে খুলে দেওয়া হয় গেট। ততক্ষণে কোলকাতা হতে ছেড়ে আসা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ৩১০৮ নং উর্দ্ধগামী ট্রেনটি ৩১২জন যাত্রী নিয়ে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন হয়ে চুয়াডাঙ্গার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাৎক্ষণিক আবারো বন্ধ করে দেওয়া হয় গেটটি। এদিকে স্টেশন মাস্টারের হাতে লাল পতাকা আর গেটম্যানের তালবাহানা দেখে দূরদর্শিতার সাথে ঘন্টায় ৮০/৯০ কি.মি. গতিবেগে ছুটে আসা ট্রেনটির গতি কমিয়ে থামিয়ে ফেলেন চালক রবিউল ইসলাম। নিশ্চিত দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষ পায় গেটে পারাপার রত বাস-ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, অটো, মোটরসাইকেল, ভ্যান-রিক্সা, সিএনজির চালকসহ শত শত সাধারণ মানুষ। আকস্মিক দাঁড়িয়ে পড়ায় ট্রেনের যাত্রীরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ সময় ট্রেনটির পরিচালক এম. এ জলিল ট্রেন থেকে নেমে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। ২ মিনিট পর আবারো ট্রেনটি যাত্রা শুরু করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আব্দুল খালেক এ প্রতিবেদককে বলেন, ১৬ডাউন মহানন্দা মুন্সিগঞ্জ স্টেশন ছেড়ে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ঢুকছে আর মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি দর্শনা জংশন ছেড়ে আসছে চুয়াডাঙ্গা অতিক্রম করবে। এ ব্যাপারে আমি কেবিনকে জানালে কেবিন গেটম্যানকে জানায়। গেটম্যান গেট বন্ধ করে ওকে সংকেত দিলে আমি নিশ্চিত হই গেট বন্ধ আছে। দুপুর ১টার দিকে মহানন্দা ডাউন ট্রেনটি প্লাটফর্মে এসে পৌছুলে আর মৈত্রী ট্রেনটি অতিক্রম করা সময়ে গেটম্যান পারাপারকারী, যানজট বা যে কারো চাপে পড়ে গেটটি খুলে দেয়। দু’একটি গাড়ি চলাচল করলেও আবারো গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমি লাল পতাকা দিয়ে সংকেত দিলে ট্রেনটি দাড়িয়ে যায়। ২ মিনিট পর আবারো যাত্র করে ঢাকার উদ্দেশ্যে। তবে এতে কারো কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি আরো বলেন, চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের সিগন্যাল গুলো কম্পিউটারাইজড করার কারণে নন ইন্টারলক রয়েছে। ইন্টারলক চালু থাকলে অপ্রত্যাশিত এ ঘটনার সম্মুখিন হতে হত না।
সুইচ কেবিনের দায়িত্বে থাকা মো. আইনুদ্দিন মোল্লা বলেন, ১৬ ডাউন মহানন্দা দুপুর ১টায় চুয়াডাঙ্গায় ঢুকছে এ ব্যাপারে স্টেশন মাস্টার আমাকে জানালে আমি গেটম্যানকে গেট বন্ধ করতে বলি। মহানন্দা ট্রেন স্টেশনে ঢুকলে যথারিতি গেটম্যান গেট খুলে দেয়। মৈত্রী ট্রেনের ব্যাপারে স্টেশন মাস্টার আমাকে কিছু জানাননি। ওই সময় মৈত্রী ট্রেন ঢুকছে দেখতে পেয়ে আবারো সে গেট বন্ধ করে দেয়।
গেটম্যান মো. সাইদুল হক জানায়, মুন্সিগঞ্জ থেকে ১৬ ডাউন মহানন্দা ট্রেনটি ছেড়ে এসেছে কেবিন থেকে এমন সংকেত পেয়ে আমি গেট বন্ধ করি। ট্রেন স্টেশনে ঢুকলে আমি গেট খুলে দিই। মৈত্রী ট্রেন চুয়াডাঙ্গা অতিক্রম করবে এমন কোন খবর আমাকে জানানো হয়নি। আমি নিজেই ট্রেনটি দেখতে পেয়ে পূনরায় গেট বন্ধ করে দিই।
চুয়াডাঙ্গা জিআরপি ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসআই আব্দুল বাতেন বলেন, ঘটনার সময় আমি আমার সহকর্মীদের নিয়ে প্লাটফর্মে দায়িত্ব পালন করছিলাম। মহানন্দা ট্রেন প্লাটফর্মে থামলে দেখতে পায় গেটম্যান গেট খুলে দিয়েছে। কিছুক্ষণ পর আকস্মিক দ্রুতগতির মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চুয়াডাঙ্গা স্টেশন অতিক্রম না করে দাড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করি এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করি। তবে ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পায়নি।