ইপেপার । আজ বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

আকাশপথেও নৈরাজ্য; প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর খাঁড়ার ঘা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  • / ৬৭ বার পড়া হয়েছে

দিন দিন অসনীয় হয়ে উঠেছে বিমান ভাড়া। মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলোর অস্বাভাবিক আচরণের কারণে অনেকে যাত্রার তারিখ পিছিয়েছেন। ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট শেষ হয়ে যাচ্ছে, এমন অবস্থায়ও দেশে আসা প্রবাসীরা পাচ্ছেন না টিকেট নামের সোনার হরিণ। নভেম্বর পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিমানের টিকেটের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এখন তা ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। এমন অবস্থায় প্রবাসী শ্রমিকরা বেকাদায় পড়ছেন। এ সংকট দ্রুত সমাধান হোক। জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে অতিরিক্ত ভাড়ার এই দৌরাত্ম্য শুরু হলেও সব রেকর্ড ভেঙেছে চলতি জানুয়ারিতে। আড়াই মাস আগেও যেখানে সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, মদিনা, আরব আমিরাতের দুবাই, কাতার, ওমান, কুয়েতসহ অন্যান্য রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ছিল সর্বোচ্চ ২৫-৩০ হাজার টাকার মধ্যে, এখন এই জানুয়ারিতে সেই টিকেটের মূল্য তিন-চার গুণ বেড়ে লাখ টাকা পেরিয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে রিয়াদ, জেদ্দা, মাসকাট ও দুবাই রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এখন সেটি ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, ভাড়ায় হস্তক্ষেপ করা বা লাগাম টানার দায়িত্ব সরকারের নয়। এটি এই খাতের ব্যবসায়ীরাই ঠিক করবেন। সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানও জানালেন, তাদের করার কিছুই নেই। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে ভাড়ার বিষয়টি ফয়সালা করা উচিত। ভাড়া বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা দূর করতে কিছু সুপারিশ করেছে আটাব ও বায়রা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের ফিরতি টিকেটের স্বার্থে বিমান, সাউদিয়া ও অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ভাড়া বৃদ্ধি না করে আগের মতো বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়। প্রয়োজনে ভাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতা। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাত। বিভিন্ন দেশে বেকার লাখ লাখ প্রবাসী। অনেকেই চাকরি হারিয়ে দিশাহারা। তার ওপর বিমান ভাড়া বৃদ্ধি যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। বহির্বিশ্বে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কর্মীর রেমিট্যান্সে দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। গরিব অসহায় প্রবাসী কর্মীদের বিমান ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রায় প্রতিদিনই দাম বাড়ছে টিকেটের। সিট নেই, চাহিদা বেশি- এসব অজুহাত দেখিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন অভিবাসী ব্যয় বেড়েছে, তেমনি অস্তিরতা ও নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে দেশের এভিয়েশন খাতে। বিশেষ করে এয়ারলাইন্সগুলো সিন্ডিকেট করে টিকেট ব্লক করে রাখছে। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আকাশপথেও নৈরাজ্য; প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর খাঁড়ার ঘা

আপলোড টাইম : ০৯:৪৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

দিন দিন অসনীয় হয়ে উঠেছে বিমান ভাড়া। মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলোর অস্বাভাবিক আচরণের কারণে অনেকে যাত্রার তারিখ পিছিয়েছেন। ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট শেষ হয়ে যাচ্ছে, এমন অবস্থায়ও দেশে আসা প্রবাসীরা পাচ্ছেন না টিকেট নামের সোনার হরিণ। নভেম্বর পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিমানের টিকেটের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এখন তা ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। এমন অবস্থায় প্রবাসী শ্রমিকরা বেকাদায় পড়ছেন। এ সংকট দ্রুত সমাধান হোক। জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে অতিরিক্ত ভাড়ার এই দৌরাত্ম্য শুরু হলেও সব রেকর্ড ভেঙেছে চলতি জানুয়ারিতে। আড়াই মাস আগেও যেখানে সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, মদিনা, আরব আমিরাতের দুবাই, কাতার, ওমান, কুয়েতসহ অন্যান্য রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ছিল সর্বোচ্চ ২৫-৩০ হাজার টাকার মধ্যে, এখন এই জানুয়ারিতে সেই টিকেটের মূল্য তিন-চার গুণ বেড়ে লাখ টাকা পেরিয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে রিয়াদ, জেদ্দা, মাসকাট ও দুবাই রুটে ইকোনমি ক্লাসের একমুখী ভাড়া ছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এখন সেটি ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, ভাড়ায় হস্তক্ষেপ করা বা লাগাম টানার দায়িত্ব সরকারের নয়। এটি এই খাতের ব্যবসায়ীরাই ঠিক করবেন। সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানও জানালেন, তাদের করার কিছুই নেই। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে ভাড়ার বিষয়টি ফয়সালা করা উচিত। ভাড়া বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা দূর করতে কিছু সুপারিশ করেছে আটাব ও বায়রা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের ফিরতি টিকেটের স্বার্থে বিমান, সাউদিয়া ও অন্যান্য এয়ারলাইন্সের ভাড়া বৃদ্ধি না করে আগের মতো বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়। প্রয়োজনে ভাড়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতা। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাত। বিভিন্ন দেশে বেকার লাখ লাখ প্রবাসী। অনেকেই চাকরি হারিয়ে দিশাহারা। তার ওপর বিমান ভাড়া বৃদ্ধি যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। বহির্বিশ্বে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কর্মীর রেমিট্যান্সে দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। গরিব অসহায় প্রবাসী কর্মীদের বিমান ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রায় প্রতিদিনই দাম বাড়ছে টিকেটের। সিট নেই, চাহিদা বেশি- এসব অজুহাত দেখিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন অভিবাসী ব্যয় বেড়েছে, তেমনি অস্তিরতা ও নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে দেশের এভিয়েশন খাতে। বিশেষ করে এয়ারলাইন্সগুলো সিন্ডিকেট করে টিকেট ব্লক করে রাখছে। তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি।