সারাদেশে চালের দাম কমলেও চুয়াডাঙ্গায় বাজারে অস্থিতিশীলতা : সরবরাহ বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের : কয়েক দিনের মধ্যে কমতে পারে চালের দাম
- আপলোড টাইম : ০৫:০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই ২০১৭
- / ৬৩৬ বার পড়া হয়েছে
এস,এম শাফায়েত/আনিছ বিশ্বাস: বিদেশ থেকে চাল আমদানিতে শুল্ক হ্রাসের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রভাব দেশের বিভিন্ন বাজারে পড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর পাইকারি বাজারে মোটা চালের দাম কমেছে কেজি প্রতি ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত। বাজারে বর্তমান শুল্কমূল্যে আমদানি করা চালের সরবরাহ বাড়লে পণ্যটির মূল্য আরো কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এর প্রভাব পড়েনি চুয়াডাঙ্গার বাজার গুলোতে। এখনও আগের মূল্যেই পাইকারী ও খুচরা বিক্রি হচ্ছে।
দেশে চালের চাহিদার অধিকাংশই মেটানো হয় বোরো মৌসুমের ধান থেকে। কিন্তু এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় হাওড়াঞ্চলের ধান। এ সুযোগে ভরা মৌসুমে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি পণ্যটি আমদানিতে আরোপিত শুল্কহার কমিয়ে দেয় সরকার। এর প্রভাবে রাজধানীর বাজারে মোটা চালের দাম কমে। তবে চুয়াডাঙ্গাসহ অধিকাংশ বাজারেই এখনো অস্থিতিশীলতা কাটেনি।
জানা গেছে, বিগত উৎপাদন মৌসুমগুলোয় ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিলেন দেশের কৃষকরা। এ কারণে সম্প্রতি শেষ হওয়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চাল আমদানিতে অগ্রিম আয়করসহ ২৮ শতাংশ হারে শুল্ক ধার্যের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ফলে দেশে চাল আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ বছর আকম্মিক বন্যায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ কয়েকটি জেলায় উৎপাদিত ধান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়, যার প্রভাবে ভরা মৌসুমেই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে চালের বাজার। এ অবস্থায় শুল্কারোপের হার ২৮ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বাজারে নতুন শুল্কমূল্যে আমদানি করা চালের সরবরাহ বাড়লে চালের দাম কেজিতে আরো ৬ টাকা পর্যন্ত কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারের চাউল ব্যবসায়ী আমিন মিয়া বলেন, শোনা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে ৩টাকা কমেছে। তবে আমাদের বাজারে এখনও আগের দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে। কেজি প্রতি বাসমতি- ৫৫, মোটা স্বর্ণা ৩৭, ভারতীয় এলসি ৪২, আটাশ ৪৬-৪৮, মিনিকেট ৫৪ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে নতুন শুল্কের চাল সরবরাহ হলে দাম কমবে।
আড়তদাররা জানান, শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানী হচ্ছে। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলায় তা এখনও শুরু হয়নি। নতুন শুল্কে চাল আমদানী করতে পারলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চালের দাম কমে আসবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চালের দরপতনের সম্ভাবনায় পণ্যটির অতিরিক্ত মজুদ করে রাখা ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে চালের আড়তদারদের পক্ষ থেকে শুল্ক কমানোর দাবি উঠেছিল অনেক আগেই।
নিচের বাজারের পাইকারী চাউল ব্যবসায়ী বকুল মিয়া বলেন, বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ধানের দাম বেশি। এ বছর আবাদ করে কৃষকরা ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পেরেছেন। চালের দাম বাড়লেও মানুষের মধ্যে তেমন হাহাকার নেই। তিনি এও বলেন, চাল আমদানি না হলেও বাজারে কোনো সংকট হবে না। ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সাধারণের মতে বর্তমানে ধানের দাম বাড়ায় অনেক কৃষক বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে সরকারকে জরুরী সরবরাহ বাড়াতে হবে।