ইপেপার । আজ বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

রমজানে আরও বাড়ার শঙ্কা; ভোজ্যতেলের দাম হ্রাসে পদক্ষেপ নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৪৫:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২
  • / ১৪৮ বার পড়া হয়েছে

ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিতিশীলতা এখনো কাটেনি। শীতের ভরা মৌসুমেও সবজির দাম চড়া। তবে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে ভোজ্যতেল। কোনো কারণ ছাড়াই দেশের খোলাবাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত ২ জানুয়ারি তেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতির পক্ষ থেকে সয়াবিনের দাম লিটারে অন্তত আট টাকা এবং পাম তেল লিটারে ১১ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্মতি না দিলেও বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ঠিকই বেড়ে গেছে। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি দাম রাখছেন। জানা যায়, বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেল নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫ থেকে ১৪ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দাম বাড়ার হলে বাড়বে, কমার হলে কমবে। তবে বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান দামই থাকবে। সবকিছু বিবেচনা করে এরপর যেটা সুবিধাজনক হয়, সেটাই করা হবে।’ কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রীর কথার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না ভোগ্যপণ্যের বাজারে। বাজারে ভোক্তাকে বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছে। তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা মন্ত্রণালয়কে জানানোর প্রয়োজনই বোধ করেননি।

গত ১৭ অক্টোবর ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হয় লিটারপ্রতি সাত টাকা পর্যন্ত। সর্বশেষ নির্ধারিত দাম অনুসারে খোলা সয়াবিন খুচরায় প্রতি লিটার সর্বোচ্চ ১৩৬ টাকা, এক লিটার বোতলজাত সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা, পাঁচ লিটার ৭৬০ টাকা, খোলা পাম ১১৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। এখন খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৫৮ টাকা লিটার। সে হিসেবে প্রতি লিটারের দাম হয় ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এক লিটার বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো থাকার পরও ভোজ্যতেলের বাজারে কেন এই অস্থিরতা— তা যেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ও ওয়াকিবহাল নয়! এটা ঠিক যে, দেশের ভোজ্যতেলের বাজার সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর। চলতি মাসের শুরুতে তেলের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দেয়া হয়, তার কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে তার প্রভাব দেশের বাজারে পড়বে— এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দেশের বাজারেও দাম কমে— এমন কোনো উদাহরণ বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। সামনে রমজান আসছে। রোজার সময় ভোজ্যতেলের চাহিদা বাড়ে। তখন তেলের দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে— সেটাও এখন থেকে ভাবতে হবে। সরকার ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

রমজানে আরও বাড়ার শঙ্কা; ভোজ্যতেলের দাম হ্রাসে পদক্ষেপ নিন

আপলোড টাইম : ০৭:৪৫:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২

ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিতিশীলতা এখনো কাটেনি। শীতের ভরা মৌসুমেও সবজির দাম চড়া। তবে ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে ভোজ্যতেল। কোনো কারণ ছাড়াই দেশের খোলাবাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত ২ জানুয়ারি তেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতির পক্ষ থেকে সয়াবিনের দাম লিটারে অন্তত আট টাকা এবং পাম তেল লিটারে ১১ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্মতি না দিলেও বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ঠিকই বেড়ে গেছে। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি দাম রাখছেন। জানা যায়, বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেল নির্ধারিত দামের চেয়ে ৫ থেকে ১৪ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দাম বাড়ার হলে বাড়বে, কমার হলে কমবে। তবে বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান দামই থাকবে। সবকিছু বিবেচনা করে এরপর যেটা সুবিধাজনক হয়, সেটাই করা হবে।’ কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রীর কথার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না ভোগ্যপণ্যের বাজারে। বাজারে ভোক্তাকে বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছে। তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা মন্ত্রণালয়কে জানানোর প্রয়োজনই বোধ করেননি।

গত ১৭ অক্টোবর ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হয় লিটারপ্রতি সাত টাকা পর্যন্ত। সর্বশেষ নির্ধারিত দাম অনুসারে খোলা সয়াবিন খুচরায় প্রতি লিটার সর্বোচ্চ ১৩৬ টাকা, এক লিটার বোতলজাত সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা, পাঁচ লিটার ৭৬০ টাকা, খোলা পাম ১১৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। এখন খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৫৮ টাকা লিটার। সে হিসেবে প্রতি লিটারের দাম হয় ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এক লিটার বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো থাকার পরও ভোজ্যতেলের বাজারে কেন এই অস্থিরতা— তা যেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ও ওয়াকিবহাল নয়! এটা ঠিক যে, দেশের ভোজ্যতেলের বাজার সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর। চলতি মাসের শুরুতে তেলের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দেয়া হয়, তার কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে তার প্রভাব দেশের বাজারে পড়বে— এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দেশের বাজারেও দাম কমে— এমন কোনো উদাহরণ বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। সামনে রমজান আসছে। রোজার সময় ভোজ্যতেলের চাহিদা বাড়ে। তখন তেলের দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে— সেটাও এখন থেকে ভাবতে হবে। সরকার ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।