জীবননগরের চরমপন্থি দলের বিভাগীয় নেতা পরিচয়ে : ব্যবসায়ীর নিকট কোটি টাকা চাঁদা দাবী
- আপলোড টাইম : ০৩:৫৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০১৭
- / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে
নিজস্বা প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার দেহাটি পিয়াস গ্রুপ অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে কোটি টাকা চাঁদা দাবী করা হয়েছে। গত সোমবার ও মঙ্গলবার দু’দফায় নিজেকে চরমপন্থি দলের বিভাগীয় নেতা পরিচয়ে মোবাইল ফোনে এই চাঁদা দাবী করা হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পিয়াস গ্রুপের পরিবার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগামী তিন দিনের মধ্যে দাবীকৃত চাঁদার টাকা দেয়া না হলে পার্টির গেরিলারা সদস্যদের দিয়ে বোমা হামলা চালিয়ে মাথার খুঁলি উড়িয়ে দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে জানা যায়। আতঙ্কিত পরিবার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান।
এদিকে মোবাইলের সিম অনুসন্ধানে ঘটনার সন্দেহের তীর স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতার ছেলে দিকে উঠছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই ওই নেতা ছেলেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন মহলে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
জীবননগর উপজেলার নবগঠিত কেডিকে ইউনিয়নের দেহাটি পিয়াস ব্রিকস অ্যান্ড পিয়াস ফিলিং ষ্টেশনের মালিক আসাদুজ্জামান আকুল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত পিয়াস গ্রুপ অ্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন আকুলের ছেলে এসএম হাফিজ আল আসাদ।
আকুল মিয়া বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে গত সোমবার ও মঙ্গলবার নিজের নাম ঠিকানা গোপন রেখে চরমপন্থি দলের বিভাগীয় নেতা পরিচয় দিয়ে ০১৯৯৬-৫৬৭৫০৬ সিম নম্বর দিয়ে আমার ছেলে এস এম হাফিজ আল আসাদের মোবাইলে কল করে নিকট এক কোটি টাকা চাঁদা দাবী করে। আগামী তিন দিনের মধ্যে দাবীকৃত চাঁদার টাকা নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য বলেছে। আর যদি চাঁদার টাকা না পৌছে দিই তাহলে পার্টির গেরিলা সদস্যরা যে কোন সময় বোমা হামলা চালিয়ে সব খতম করে দেবে বলে হুমকিও দিয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে দফায় দফায় অজ্ঞাত চাঁদাবাজ কর্তৃক হুমকি ধামকীতে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রতিষ্ঠানটির মালিক আকুল মিয়া আরো বলেন, যে সিম নাম্বার দিয়ে আমাদের মোবাইল ফোনে কল করে হুমকি দেয়া হচ্ছে, সেই সিমটির ব্যাপারে যাচাই বাছাই করে যে নাম ঠিকানা পাওয়া গেছে, তা এলাকার একজন সরল-সোজা এবং মানসিক প্রতিবন্ধ¦ী প্রকৃতির ব্যক্তির। তবে সিমটি ব্যবহার করছে কাশিপুর গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা কুদ্দুস মেম্বারের ছেলে শাওন। ইতোপুর্বে কাশিপুর গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে আজাদের নিকট পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করার অভিযোগ আছে শাওনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে আজাদের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ১০ জুলাই বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ০১৯৯৬-৫৬৭৫০৬ নাম্বার থেকে আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। ওই সময় ভয়ে আমার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রাখি। চাঁদা দাবীর ব্যাপারটি আমরা অনুসন্ধান কালে জানতে পারি আমাদের গ্রামের কুদ্দুস মেম্বারের ছেলে শাওন ঘটনার সাথে জড়িত। তাদের সাথে আগে থেকেই আমাদের বিরোধ রয়েছে।
ঘটনার একপর্যায়ে কাশিপুর গ্রামের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব শুকুর সরকারের নিকট শাওন স্বীকার করে সিম তার তবে কিছু আগে হারিয়ে যায়। তার কথাই যদি সত্য হয় তাহলে আকুল মিয়ার ছেলের নিকট একই সিমের মোবাইল ফোনে এক কোটি টাকার চাঁদা দাবী করল কে?
জানা গেছে, কাশিপুর গ্রামের মানসিক প্রতিবন্দ্বী ইসরাফিল নামের যুবকের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে শাওন সিম উত্তোলন করে ওই সিমটি এভাবে ব্যবহার করে আসছে। এ ঘটনায় জীবননগর থানায় একটি জিডি করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও কাশিপুর গ্রামের শুকুর সরকার বলেন, শাওন জানায় সিমটি সে গ্রামের ইসরাফিলকে দিয়ে উঠিয়েছে। সেই থেকে শাওন সিমটি ব্যবহার করে আসছে। সে আরো জানায় সিমটি তার নিকট থেকে হারিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক বলেন, ঘটনার ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ঘটনার ব্যাপারে জিডি করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।