সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সাথে চিটাগাং চেম্বারের মতবিনিময় সভায় : আজ সাহিদুজ্জামান টরিকসহ ঢাকা ছাড়বেন ব্যবসায়ীরা
- আপলোড টাইম : ০৩:৪৮:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০১৭
- / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
হুসাইন মালিক: সিঙ্গাপুর বিজনেস ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের নেতৃত্বে সিঙ্গাপুরের ১৫-২০ সদস্যবিশিষ্ট বাণিজ্য প্রতিনিধিদল গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি বোর্ড অব ডাইরেক্টর্স, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও স্টকহোল্ডারদের সাথে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে এ সময় সিঙ্গাপুরের কনসাল উইলিয়াম ছিক (গৎ. ডরষষরধস ঈযরশ), বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর’র সভাপতি মির্জা গোলাম সবুর, চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন নেওয়াজ সেলিম, প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্যবৃন্দ, চেম্বার পরিচালকদ্বয় মো. জাহেদুল হক ও ওমর হাজ্জাজ এবং সদ্য বিদায়ী পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম, বেপজা’র জিএম খোরশেদ আলম, ওওসিএল’র জিএম ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, এস. আলম’র ইডি সুব্রত কুমার ভৌমিক, বিএসআরএম’র নুরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
সভায় চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালক এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, কামাল মোস্তফা চৌধুরী, মোহাম্মদ হাবিবুল হক, এমএ মোতালেব, মো. জহুরুল আলম, সরওয়ার হাসান জামিল, মো. রকিবুর রহমান (টুটুল), অঞ্জন শেখর দাশ ও মো. আবদুল মান্নান সোহেল, উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা, শিপিং, সিএন্ডএফ, এমএলও, বাফা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, স্টীল, পাওয়ারসহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
মতবিনিময় শেষে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে চিটাগাং চেম্বার ও বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর’র মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন সিঙ্গাপুর বিজনেস ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদুজ্জামান টরিক, এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, চিটাগং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ও মির্জা গোলাম সবুর।
এ সময় চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে মিরসরাই ও আনোয়ারায় বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল ও বৃহত্তর চট্টগ্রামে সম্ভাবনাময় খাত যথাঃ শিপবিল্ডিং, শিপরিসাইক্লিং, আরএমজি, পাট ও পাটজাত পণ্য, সিরামিক্স, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পর্যটন, অবকাঠামো উন্নয়ন, সামুদ্রিক অর্থনীতি ইত্যাদিতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ উন্নত বিশ্ব কর্তৃক বাংলাদেশকে প্রদত্ত বাজার সুবিধার সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে এদেশে যৌথ ও একক বিনিয়োগের মাধ্যমে উভয় দেশ লাভবান হতে পারে বলে মনে করেন। চট্টগ্রামে ভিসা প্রাপ্তির সুবিধার্থে কনসাল অফিস স্থাপনের জন্য ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিনামূল্যে স্পেস দেয়ার ঘোষণা দেন চেম্বার সভাপতি।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন নেওয়াজ সেলিম বলেন, সিঙ্গাপুর গার্ডেন সিটি হিসেবে বিখ্যাত। তিনি চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন এবং দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীতে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের প্রতি আহ্বান জানান।
কনসাল উইলিয়াম ছিক বলেন, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। বিশেষ করে চট্টগ্রামে সিঙ্গাপুর বিনিয়োগে আগ্রহী। সিঙ্গাপুর চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেক্টরে এক সাথে কাজ করতে পারে। তিনি ভিসা ইস্যুকারী অফিস স্থাপনে চেম্বারের প্রস্তাব তাঁর দেশের সরকারের নিকট উত্থাপন করবেন বলে জানান।
সিঙ্গাপুর বিজনেস ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদুজ্জামান টরিক বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাতে বিনিয়োগ করবে এ ব্যাপারে আমরা আলোচনা করবো। বাংলাদেশ সরকার এখন বিদ্যুৎ-সহ অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করছে। সিঙ্গাপুরে অনেক টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ রয়েছে যা এ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে শেয়ার করা যেতে পারে। বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর এক সাথে কাজ করলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র উন্নত হবে।
বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর’র সভাপতি মির্জা গোলাম সবুর বলেন, সিঙ্গাপুর, চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামেও বিনিয়োগে আগ্রহী। গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরীতে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করতে চায়। সিঙ্গাপুরের দক্ষ বিশেষজ্ঞ দল প্রয়োজনে বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলোতে সহায়তা প্রদান করবে। সিঙ্গাপুর প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তন্মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে তাদের আগ্রহ রয়েছে।
এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়াল বলেন, সিঙ্গাপুর উন্নত রাষ্ট্র। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। অধিক জনসংখ্যার ঘনত্ব সত্ত্বেও তারা সহজে নিয়ন্ত্রণ করছে। অবকাঠামোর দিক দিয়ে বাংলাদেশ দুর্বল। এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর এগিয়ে রয়েছে। সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নে কাজে লাগানো যেতে পারে।
বন্দরের সদস্য জাফর আলম বলেন, বে-টার্মিনালে ও মহেশখালিতে সিঙ্গাপুর চাইলে বিনিয়োগ করতে পারে। এলএনজি টার্মিনাল, লালদিয়া টার্মিনালের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুর চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও কাজ করতে পারে।
বেপজা’র জিএম খোরশেদ আলম চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় নতুন শিল্প স্থাপনের জায়গা না থাকায় মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলের পাশে নির্মাণাধীন প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। আজ সাহিদুজ্জামান টরিকসহ শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধিদলটি সিঙ্গাপুরের উদ্যোশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।