ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

যৌতুক শরীয়তের বিরোধী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৩৯:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০১৭
  • / ৪১০ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: একটি ঘৃণিত প্রথার নাম যৌতুক। এটা অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তির নামান্তর। যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় ভেঙে গেছে হাজারো বিয়ে, ঘর-সংসার। শুধু স্বামী নয়, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদ প্রায় সবাই নির্যাতন করে যৌতুকের দাবিতে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এসবের খবর আমরা প্রায় নিত্যদিনই পাচ্ছি। ইসলামী দিকদর্শন ও নীতিমালায় বিয়েতে যৌতুক লেনদেন শরীয়তের ঘোরবিরোধী। কোরান ও হাদিসে বরপণ দেয়ার কোনো অস্তিত্ব নেই। ইসলামী দর্শন মতে, বিয়েতে কোনো পক্ষই আল্লাহ তায়ালা এবং রাসুলে কারিম (সা.) এর দাবিগুলো ব্যতীত অন্য কোনোরূপ দাবি-দাওয়া করতে পারবে না। একজন মুসলমান তার সীমারেখার মধ্যে জীবনধারা পরিচালনা করবে। জোরপূর্বক অন্যায্য দাবি আদায় করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর শাস্তি নির্ধারিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায্যভাবে তা করবে তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করা হবে, এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ’ (সূরা নিসা : ৩০)। ইসলামী বিধান ও সংস্কৃতিতে বরকে উপঢৌকন দেয়ার অনুমোদন নেই। কন্যার জীবনধারা দুটো ভাগে দু’জনের দায়িত্বে অর্পিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত পিতার ওপর মেয়ের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব’ ( সূরা বাকারা : ২৩৩)। আর বিয়ের সময় থেকে আজীবন স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর ওপর। বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেনমোহর তথা উপঢৌকন দেয়ার দায়িত্বও স্বামীর। সবদিক দিয়ে কোনো মেয়েকে পছন্দ করার পর মেয়ের অভিভাবক কেবল যৌতুকের শর্ত পূরণ করতে না পারায় ছেলে ওই মেয়েকে বিবাহ করা থেকে বিরত থাকে অনেক ক্ষেত্রে এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে। এ কারণে অনেক ঘরে অনেক যুবতি মেয়ে পিতার ওপর বোঝা হয়ে আছে, পিতা তাদের বিয়ে দিতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে বরকে যৌতুক না দেয়ার কারণে দাম্পত্য জীবন ও সোনার সংসার বিষাদে পরিণত হয়েছে। দেশে যৌতুকবিরোধী আইন থাকলেও এর যথাযথ প্রয়োগের অভাব রয়েছে। যৌতুকবিরোধী আইনে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ-ের বিধান থাকা সত্ত্বেও তা যৌতুকলোভীদের দমন করতে পারছে না সামাজিক সচেতনতার অভাবে। এই অভিশপ্ত এবং ঘৃণিত ভিক্ষাবৃত্তিকে ঘৃণা করি এবং একটি যৌতুকমুক্ত সমাজ উপহার দিতে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানো জরুরি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

যৌতুক শরীয়তের বিরোধী

আপলোড টাইম : ০৪:৩৯:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ জুলাই ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: একটি ঘৃণিত প্রথার নাম যৌতুক। এটা অনেকটা ভিক্ষাবৃত্তির নামান্তর। যৌতুকের দাবি পূরণ করতে না পারায় ভেঙে গেছে হাজারো বিয়ে, ঘর-সংসার। শুধু স্বামী নয়, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদ প্রায় সবাই নির্যাতন করে যৌতুকের দাবিতে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এসবের খবর আমরা প্রায় নিত্যদিনই পাচ্ছি। ইসলামী দিকদর্শন ও নীতিমালায় বিয়েতে যৌতুক লেনদেন শরীয়তের ঘোরবিরোধী। কোরান ও হাদিসে বরপণ দেয়ার কোনো অস্তিত্ব নেই। ইসলামী দর্শন মতে, বিয়েতে কোনো পক্ষই আল্লাহ তায়ালা এবং রাসুলে কারিম (সা.) এর দাবিগুলো ব্যতীত অন্য কোনোরূপ দাবি-দাওয়া করতে পারবে না। একজন মুসলমান তার সীমারেখার মধ্যে জীবনধারা পরিচালনা করবে। জোরপূর্বক অন্যায্য দাবি আদায় করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর শাস্তি নির্ধারিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায্যভাবে তা করবে তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করা হবে, এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ’ (সূরা নিসা : ৩০)। ইসলামী বিধান ও সংস্কৃতিতে বরকে উপঢৌকন দেয়ার অনুমোদন নেই। কন্যার জীবনধারা দুটো ভাগে দু’জনের দায়িত্বে অর্পিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত পিতার ওপর মেয়ের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব’ ( সূরা বাকারা : ২৩৩)। আর বিয়ের সময় থেকে আজীবন স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর ওপর। বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেনমোহর তথা উপঢৌকন দেয়ার দায়িত্বও স্বামীর। সবদিক দিয়ে কোনো মেয়েকে পছন্দ করার পর মেয়ের অভিভাবক কেবল যৌতুকের শর্ত পূরণ করতে না পারায় ছেলে ওই মেয়েকে বিবাহ করা থেকে বিরত থাকে অনেক ক্ষেত্রে এমন দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে। এ কারণে অনেক ঘরে অনেক যুবতি মেয়ে পিতার ওপর বোঝা হয়ে আছে, পিতা তাদের বিয়ে দিতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে বরকে যৌতুক না দেয়ার কারণে দাম্পত্য জীবন ও সোনার সংসার বিষাদে পরিণত হয়েছে। দেশে যৌতুকবিরোধী আইন থাকলেও এর যথাযথ প্রয়োগের অভাব রয়েছে। যৌতুকবিরোধী আইনে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ-ের বিধান থাকা সত্ত্বেও তা যৌতুকলোভীদের দমন করতে পারছে না সামাজিক সচেতনতার অভাবে। এই অভিশপ্ত এবং ঘৃণিত ভিক্ষাবৃত্তিকে ঘৃণা করি এবং একটি যৌতুকমুক্ত সমাজ উপহার দিতে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানো জরুরি।