ইপেপার । আজ বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন; মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৯:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৮১ বার পড়া হয়েছে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বকে কতটা বিপর্যস্ত করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে ভীতিপ্রদ পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছিল। এর প্রভাবে প্রায় প্রত্যেকটি খাতে নেতিবাচক পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে, মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও বিঘ্নিত হয়েছে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সাম্প্রতিক সময়ে নতুন আতঙ্ক ওমিক্রনের নাম আলোচনায় এসেছে। হঠাৎই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দেখা দিয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেছেন, করোনা সংক্রমণ কমায় আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বাংলাদেশের দরজায় কড়া নাড়ছে। মূলত রোববার দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে তিনি এই সতর্কতার কথা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সংক্রমণের হার বাংলাদেশে এখনো দুই শতাংশের নিচে, এতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই; কারণ ঘরের দরজাতেই ওমিক্রন কড়া নাড়ছে- এমন বিষয় যখন আলোচনায় আসছে, তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না। ফলে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করা, পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সঠিক উপায়ে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা, একই সঙ্গে টিকা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে সহায়তা করাসহ যে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে, তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং জনসচেতনতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে, সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি- এমন বিষয় যখন সামনে আসছে, তখন প্রচার-প্রচারণাসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমও অব্যাহত রাখতে হবে।
অনেক দেশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু দেশ থেকে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করেছে। কোনো কোনো দেশে সেখান থেকে আসা নাগরিকদের ১০ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়া কয়েকটি দেশে নতুন করে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিমান ও স্থল বন্দরসহ দেশের সব এন্ট্রি পয়েন্টে আরটিপিসিআর টেস্ট ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন জোরদার করেছে বলেও জানা গিয়েছিল। আর এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটুকু সেই সেই প্রশ্নও এসেছে। এটা আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগাম সতর্কতার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রস্তুতিতে ধীরগতির কথা জানিয়েছেন। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা অস্বীকার করেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। ওমিক্রনকে মোকাবিলা করতে সামগ্রিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, ইউরোপে যেহেতু এই ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে পড়েছে, এমনকি জানা যাচ্ছে- ভারতেও পাওয়া গেছে ওমিক্রনের নমুনা- তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতা অপরিহার্য। সাধারণত টিকা নেওয়া ব্যক্তিরা একবারের বেশি আক্রান্ত হয় না; কিন্তু এই ভ্যারিয়েন্টটি বারবার আক্রান্ত করতে সক্ষম বলেও জানা গেছে। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয় আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এয়ারপোর্ট, সীমান্তসহ প্রয়োজনীয় সতর্কতা জোরদার করতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিগত সময়ের মতো এবার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে বিলম্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়েও ভয়াবহ রূপ নেবে। যা সামাল দেওয়া দেশের নাজুক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা। ফলে সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়গুলোকে এড়ানোর সুযোগ নেই।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নতুন ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া মনে রাখতে হবে দেশে করোনার সংক্রমণে মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ফলে নতুন আতঙ্ক ওমিক্রনের বিষয়টি সামনে রেখে বিমানবন্দর, সীমান্তসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সতর্কতা জারি করতে হবে। পাশাপাশি- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করা, মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতাও জরুরি। করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কা বিবেচনায় নিয়ে করোনা মোকাবিলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন; মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিন

আপলোড টাইম : ১০:০৯:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বকে কতটা বিপর্যস্ত করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে ভীতিপ্রদ পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছিল। এর প্রভাবে প্রায় প্রত্যেকটি খাতে নেতিবাচক পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে, মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতাও বিঘ্নিত হয়েছে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, সাম্প্রতিক সময়ে নতুন আতঙ্ক ওমিক্রনের নাম আলোচনায় এসেছে। হঠাৎই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দেখা দিয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেছেন, করোনা সংক্রমণ কমায় আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বাংলাদেশের দরজায় কড়া নাড়ছে। মূলত রোববার দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে তিনি এই সতর্কতার কথা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সংক্রমণের হার বাংলাদেশে এখনো দুই শতাংশের নিচে, এতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই; কারণ ঘরের দরজাতেই ওমিক্রন কড়া নাড়ছে- এমন বিষয় যখন আলোচনায় আসছে, তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না। ফলে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করা, পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সঠিক উপায়ে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা, একই সঙ্গে টিকা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে সহায়তা করাসহ যে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে, তা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং জনসচেতনতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে, সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি- এমন বিষয় যখন সামনে আসছে, তখন প্রচার-প্রচারণাসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমও অব্যাহত রাখতে হবে।
অনেক দেশ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু দেশ থেকে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করেছে। কোনো কোনো দেশে সেখান থেকে আসা নাগরিকদের ১০ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়া কয়েকটি দেশে নতুন করে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিমান ও স্থল বন্দরসহ দেশের সব এন্ট্রি পয়েন্টে আরটিপিসিআর টেস্ট ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন জোরদার করেছে বলেও জানা গিয়েছিল। আর এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটুকু সেই সেই প্রশ্নও এসেছে। এটা আমলে নেওয়া দরকার, এর আগে, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগাম সতর্কতার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রস্তুতিতে ধীরগতির কথা জানিয়েছেন। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা অস্বীকার করেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। ওমিক্রনকে মোকাবিলা করতে সামগ্রিক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। কেননা, ইউরোপে যেহেতু এই ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে পড়েছে, এমনকি জানা যাচ্ছে- ভারতেও পাওয়া গেছে ওমিক্রনের নমুনা- তখন সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতা অপরিহার্য। সাধারণত টিকা নেওয়া ব্যক্তিরা একবারের বেশি আক্রান্ত হয় না; কিন্তু এই ভ্যারিয়েন্টটি বারবার আক্রান্ত করতে সক্ষম বলেও জানা গেছে। সঙ্গত কারণেই আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিষয় আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এয়ারপোর্ট, সীমান্তসহ প্রয়োজনীয় সতর্কতা জোরদার করতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিগত সময়ের মতো এবার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে বিলম্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়েও ভয়াবহ রূপ নেবে। যা সামাল দেওয়া দেশের নাজুক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তারা। ফলে সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়গুলোকে এড়ানোর সুযোগ নেই।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নতুন ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া মনে রাখতে হবে দেশে করোনার সংক্রমণে মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ফলে নতুন আতঙ্ক ওমিক্রনের বিষয়টি সামনে রেখে বিমানবন্দর, সীমান্তসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সতর্কতা জারি করতে হবে। পাশাপাশি- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অকারণে ঘোরাফেরা না করা, মাস্ক পরাসহ প্রয়োজনীয় সচেতনতাও জরুরি। করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কা বিবেচনায় নিয়ে করোনা মোকাবিলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।